টঙ্গী বাজারে নিয়ম বহির্ভূতভাবে খাস আদায়ের অভিযোগ

প্রকাশ | ০৯ মে ২০২১, ২১:১০

ইফতেখার রায়হান, গাজীপুর

গাজীপুরের টঙ্গী বাজারে নিয়ম বহির্ভূতভাবে খাস আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সরকারি এই খাস আদায়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিকে অবগত না করে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের প্রভাবশালী দুই নেতাকে খাস আদায় কাজে সম্পৃক্ত করার অভিযোগ উঠেছে সিটি করপোরেশনে টঙ্গী জোনের আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম সোহরাব হোসেনের বিরুদ্ধে। ফলে সরকারি খাস (টোল) আদায়ে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির আশ্রয়ের মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা তসরুফ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান স্থানীয়রা।

জানা যায়, সিটি করপোরেশনের আওতাভুক্ত দুইশত বছরের ঐতিহ্যবাহী টঙ্গী বাজারে এ বছর করোনার প্রাদুর্ভাবের কারণে ইজারা বন্দোবস্ত হয়নি। ফলে সরকারিভাবে খাস আদায়ের সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু বৈশাখের প্রথম দিন থেকেই খাস আদায়ে একের পর এক অনিয়মের অভিযোগ উঠে। ফলে কয়েক দিন খাস আদায় বন্ধ রাখে সিটি করপোরেশন। এমন পরিস্থিতিতে গত ১ মে টঙ্গী বাজারের খাস কালেকশনের সহযোগিতা প্রদানের জন্য স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের দুই নেতাকে চিঠি দেয় সিটি করপোরেশন। এরা হলেন, গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা কাজী মোহাম্মদ সেলিম ও মহানগর যুবলীগের আহবায়ক সদস্য আমান উদ্দিন সরকার। ওই চিঠিতে প্রভাবশালী এই দুই নেতাকে টঙ্গী বাজার ইজারা না হওয়া পর্যন্ত সিটি করপোরেশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা/কর্মচারী কর্তৃক খাস কালেকশনের সহযোগিতা করার জন্য অনুরোধ করা হয়। সিটি করপোরেশনের আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা (জোন-১ টঙ্গী) এসএম সোহরাব হোসেন স্বাক্ষরিত ওই চিঠির অনুলিপি সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরে দেওয়া হলেও স্থানীয় কাউন্সিলরকে অনুলিপি কিংবা অবগত করা হয়নি।

এ ব্যাপারে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা কাজী মোহাম্মদ সেলিম বলেন, সিটি করপোরেশনের খাস আদায়ের জন্য আমার সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। খাস আদায়ে কোন সমস্যা তৈরি হলে সেটির সমাধান এবং লোকবল সংকটে লোকজন দিয়ে সহযোগিতার জন্য বলা হয়। বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত।

অন্যদিকে মহানগর যুবলীগের আহবায়ক সদস্য আমান উদ্দিন সরকার বলেন, এমন কোন চিঠি আমি পাইনি। সিটি করপোরেশন কোন কর্মকর্তা আমার সঙ্গে আলোচনাও করেনি। নিয়ম অনুযায়ী সরকারি খাস আদায়ের সহযোগিতা করবে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও বাজার কমিটি। এক্ষেত্রে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের সম্পৃক্ততার কোন সুযোগ নেই।

এদিকে স্থানীয় ৫৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর গিয়াস উদ্দিন সরকার জানান, খাস আদায়ে সহযোহিতার একটা চিঠি সম্পর্কে জেনেছি। তবে আমাকে ওই চিঠির কোন অনুলিপি দেওয়া হয়নি। আলাদা কোন চিঠি দিয়ে অবগতও করা হয়নি। চিঠিতে আমার ছোট ভাইয়ের নাম উল্লেখ আছে, কিন্তু সেও এ বিষয়ে কিছুই জানে না। আমাকে বিতর্কিত করার জন্য এই কাজটা করা হয়েছে।

এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা (জোন-১ টঙ্গী) এসএম সোহরাব হোসেনের মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, খাস আদায় করবে সিটি করপোরেশনের লোকজন। চিঠিতে উল্লিখিত দুজন সিটি করপোরেশনের লোকজনকে সহযোগিতা করবে।

সরকারি খাস আদায়ে স্থানীয় কাউন্সিলর ও বাজার কমিটিকে অবগত না করে দুজন রাজনৈতিক নেতার সহযোগিতা চাওয়ায় আইনের কোন ব্যত্যয় ঘটেছে কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এ ক্ষেত্রে আইনের কোন বাধা নেই। আমরা যে কারও কাছে সহযোগিতা চাইতে পারি।

(ঢাকাটাইমস/৯মে/এলএ)