কেমন আছেন ব্যারিস্টার রফিক, বিএনপির রাজনীতিতে কতটা সক্রিয় তিনি?

প্রকাশ | ১১ মে ২০২১, ১১:১৪ | আপডেট: ১১ মে ২০২১, ২১:০৬

বোরহান উদ্দিন, ঢাকাটাইমস

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া। নানা রোগে ভুগতে থাকায় তাকে অনেকদিন ধরেই দলীয় কর্মকাণ্ডে দেখা যায় না। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অসুস্থতার মাত্রা এত বেশি যে, তিনি এখন পুরোপুরি শয্যাশয়ী। বিছানায় দিন কাটে প্রবীণ এই আইনজীবী ও রাজনীতিকের।

খালেদা জিয়ার প্রথম সরকারের (১৯৯১-৯৬) মন্ত্রিসভায় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী ছিলেন ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া। এছাড়া বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের সংগঠন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামেরও তিনি নেতা ছিলেন।

আইনাঙ্গনে বিচরণের পাশাপাশি একটা সময় দলের সব সভা-সমাবেশে সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল রফিকুল ইসলাম মিয়ার। তবে গত কয়েক বছর ধরে রোগে-শোকে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েন তিনি। গত বছর গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাকে লাইফ সাপোর্টেও নিতে হয়েছিল।

দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়ের করা মামলা ছাড়াও অর্ধশতাধিক মামলা আছে তার বিরুদ্ধে। যার বেশিরভাগই বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের গত দুই মেয়াদে করা। এগুলোর বেশিরভাগই সরকারবিরোধী আন্দোলনে কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে।

এদিকে সম্পদের হিসাব বিবরণী না দেয়ায় দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলায় ২০১৮ সালের ২০ নভেম্বর তিন বছরের কারাদণ্ড হয় ব্যারিস্টার রফিকুলের। ওইদিনই তিনি গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। পরে তিনি হাইকোর্ট থেকে জামিন পান।

পরিবারের অভিযোগ, গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে যাওয়ার পর তাকে কনডেম সেলে রাখা হয়েছিল। এছাড়া নির্যাতনে তার পেছনের কয়েকটি হাড় ভেঙে যায়। এরপর থেকেই তিনি ধীরে ধীরে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন।

রফিকুল ইসলাম মিয়ার স্ত্রী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক শাহিদা রফিক। গত কাউন্সিলে তাকে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য করা হয়েছে।

রবিবার রফিকুল ইসলাম মিয়ার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে শাহিদা রফিক ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘তার শারীরিক অবস্থা মোটেও ভালো নয়। তাকে ধরে বসিয়ে ওষুধ, খাওয়া-দাওয়া করাতে হয়। প্রতিদিন কমপক্ষে ১০টি ওষুধ খান তিনি। তাকে দেখভালের জন্য তিনজন শিফট করে ডিউটি পালন করেন। তার জন্য সবার কাছে দোয়া চাই।’

জন্মসূত্রে ‍কুমিল্লার হলেও ২০০৮ সালে ঢাকা-১৬ আসন থেকে ধানের শীষ নিয়ে নির্বাচন করেন রফিকুল ইসলাম মিয়া। একাদশ সংসদ নির্বাচনেও তিনি এই আসন থেকে নির্বাচন করবেন বলে শোনা যাচ্ছিল।তবে অসুস্থতার কারণে দলীয় কর্মকাণ্ডে সক্রিয় না থাকায় শেষ পর্যন্ত তিনি আর ভোটের মাঠে ছিলেন না।

একাদশ সংসদ নির্বাচনে কুমিল্লা-৩ আসন থেকে রফিকুল ইসলাম মিয়ার স্ত্রীকে মনোনয়ন দিয়েছিল বিএনপি। যদিও তিনি জয়ী হতে পারেননি।  

শাহিদা রফিক অভিযোগ করে বলেন, ‘২০১৮ সালে তিনি (রফিকুল ইসলাম মিয়া) কারাগার থেকে মুক্তির পর চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, তিনটা হাড় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আমরা কারা কর্তৃপক্ষ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জানার চেষ্টা করেছি। একজন সুস্থ মানুষ কারাগারে গেলেন, কেন তিনি অসুস্থ হয়ে বের হলেন? তখন তো ঢাকার জেলার জানিয়েছেন, তিনি ডিভিশন পেয়েছেন। কিন্তু কেন এমনটা হলো তার কোনো জবাব পাইনি। বিশ্বাস করি একদিন এর বিচার হবে।’

শারীরিক অসুস্থতার কারণে রফিকুল ইসলাম মিয়ার মস্তিষ্কের নার্ভ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা যুক্তরাষ্ট্রসহ আরও কয়েক জায়গায় তার অপারেশনের চেষ্টা করেছি। কিন্তু অন্য অসুস্থতার কারণে চিকিৎসকরা করাতে পারেননি। এখন যে অবস্থা সেখান থেকে সুস্থ হলে আবার অপারেশন করানোর চেষ্টা করবো। সবার কাছে দোয়া চাই তিনি যেন আবার সুস্থ হন। এরচেয়ে বেশি কিছু চাওয়া নেই।’

(ঢাকাটাইমস/১১মে/বিইউ/জেবি)