কে এই গোল্ডেন মনির?

প্রকাশ | ১১ মে ২০২১, ১৭:৫১ | আপডেট: ১১ মে ২০২১, ১৮:১৫

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
ফাইল ছবি

নব্বইয়ের দশকে রাজধানীর গাউছিয়া মার্কেটে একটি কাপড়ের দোকানে সেলসম্যান হিসেবে কাজ করতেন মনির হোসেন। তারপর শুরু করে কোকারিজের ব্যবসা। তখন লাগেজ ব্যবসায় যুক্ত হয়ে ট্যাক্স ফাঁকি দিয়ে বিভিন্ন মালামাল দেশে আনার কাজ শুরু করেন। এক পর্যায়ে জড়িয়ে পড়েন স্বর্ণ চোরাচালানির সঙ্গে। বিদেশ থেকে অবৈধভাবে বিপুল স্বর্ণ দেশে আনতেন।

এরপর আর পেছনে ফিরে তাকে হয়নি তাকে। মনির হোসেন থেকে নাম পাল্টে হয়ে যান 'গোল্ডেন মনির'। অবৈধ উপায়ে দিনে দিনে কামিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। এসব টাকায় কিনেছেন জমি, করেছেন বড় বড় শপিংমল। দিয়েছেন গাড়ির ব্যবসা। তার হাত ধরে বোন, বোনের স্বামীসহ অনেকে বিপুল ধন সম্পদের মালিক হয়েছেন। অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থদিয়ে মেরুল বাড্ডায় বিলাস বহুল ছয়তলা বাড়ি করেছেন। সেই বাড়িতে অভিযান চালিয়ে গত ২০ নভেম্বর মনিরকে মাদক ও অস্ত্রসহ আটক করে র‌্যাব। বাড়ি থেকে নগদ এক কোটি নয় লাখ টাকা, চার লিটার মদ, আট কেজি সোনা (৬০০ ভরি), একটি বিদেশি পিস্তল ও গুলি উদ্ধার করা হয়।

মানিলন্ডারিং আইনের একটি মামলায় মঙ্গলবার গোল্ডেন মনির ও তার দশ সহযোগী এবং অজ্ঞাত আরও পাঁচজনসহ মোট ১৫ জনের বিরুদ্ধে রাজধানীর বাড্ডা থানায় মামলা করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি। মামলা নম্বর ২৪।

জানা যায়, গোল্ডেন মনির মূলত একজন হুন্ডি ব্যবসায়ী। তিনি স্বর্ণ চোরাকারবারি এবং ভূমির দালালির সঙ্গেও জড়িত। তার একটি 'অটো কার সিলেকশন' নামে গাড়ির শোরুম রয়েছে। পাশাপাশি গাউসিয়াতে একটি স্বর্ণের দোকান আছে। স্বর্ণ চোরাকারবারির পাশাপাশি মনির ভূমির দালালও।

জানা গেছে, স্বর্ণ চোরাচালান কারবারিদের সঙ্গে নিজেকে জড়িয়ে ফেলে বিপুল পরিমাণ স্বর্ণ অবৈধভাবে বিদেশ থেকে বাংলাদেশে নিয়ে আসেন। তার স্বর্ণ চোরাচালান কারবারিদের রুট ছিল ঢাকা-সিঙ্গাপুর এবং ভারত। এসব দেশ থেকে তিনি ট্যাক্স ফাঁকি দিয়ে বিপুল পরিমাণ স্বর্ণ বাংলাদেশের নিয়ে আসতেন।

গামছা থেকে সোনায়

মনিরের বাবা কেরানীগঞ্জের বাসিন্দা সিরাজ মিয়া ছিলেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। তিনি ঢাকার নিউ মার্কেট ও গাউছিয়া মার্কেট এলাকায় ফেরি করে গামছা বিক্রি করতেন। মনির দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়া শোনা করেছেন। মূলত বাড্ডায় নানার বাসায় থেকে তিনি বড় হন।

বাবার সূত্রে মনিরেরও ব্যবসার শুরু একইভাবে। পরে তিনি মৌলভীবাজার থেকে কাপড় এনে বিভিন্ন দোকানে সরবরাহ করা শুরু করেন। এভাবে তিনি ব্যবসার প্রসার ঘটিয়ে ব্যাংকক-সিঙ্গাপুরে আসার যাওয়ার মাধ্যমে ল্যাগেজ ব্যবসা শুরু করেন। এই ব্যবসার আড়ালে তিনি স্বর্ণ চোরাচালান ব্যবসায় জড়িয়ে যান।

(ঢাকাটাইমস/১১মে/এসএস/জেবি)