বঙ্গবন্ধু সেতু পার হতেই আড়াই ঘণ্টা!
প্রকাশ | ১২ মে ২০২১, ১০:০১ | আপডেট: ১২ মে ২০২১, ১১:৫৮
যানবাহনের অতিরিক্ত চাপের কারণে বঙ্গবন্ধু সেতু-ঢাকা মহাসড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এতে ঈদে ঘরমুখী যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।
করোনার প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে গণপরিবহন বন্ধ থাকার পরও বিভিন্ন উপায়ে মানুষ বাড়ির পথে রওনা হওয়ায় মহাসড়কে যানজটের এমন ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। টাঙ্গাইলের করটিয়া থেকে বঙ্গবন্ধু সেতুপূর্ব গোলচত্বর পর্যন্ত প্রায় ৩০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে গাড়ির দীর্ঘ সারির সৃষ্টি হয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে ঘরমুখো মানুষকে।
জানা গেছে, রাতের শুরুর দিকে মহাসড়কে গাড়ির চাপ কিছুটা কম থাকলেও মাঝরাতে তা বাড়তে থাকে। যাত্রীর চাপও বেড়েছে তুলনামূলক। ভোরের দিকে এই পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করে। এতে উত্তরের পথে যাওয়া যানবাহনগুলো অনেকটা থমকে যায়। স্বাভাবিকভাবে বঙ্গবন্ধু সেতু পার হতে যেখানে ১০ মিনিটের কম সময় লাগতো সেই সেতু পার হতে আড়াই ঘণ্টার মতো সময় লেগেছে।
নারায়ণগঞ্জ থেকে মাইক্রোবাসে করে স্ত্রীকে নিয়ে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে বাড়ির উদ্দেশে রওনা হয়েছিলেন মাইদুল ইসলাম। বঙ্গবন্ধু সেতুতে ওঠার পর ভয়াবহ যানজটের কবলে পড়ে তার গাড়ি। ভেতরে বসে না থেকে স্ত্রীকে নিয়ে নেমে পড়েন মাইক্রোবাস থেকে। ক্যামেরাবন্দি করেন সেতুর ছবি।
জানতে চাইলে মাইদুল ইসলাম বলেন, সেতুতে ওঠার পর গাড়ি একেবারে বন্ধ হয়ে যায়। যে সেতু পার হতে ১০ মিনিটও সময় লাগতো না, সেই সেতু পার হতে হয়েছে আড়াই ঘণ্টায়।
দীর্ঘ যানজটে আটকা পড়ে দুর্ভোগ পোহাতে হলেও রাতে বঙ্গবন্ধু সেতুর ওপর দাঁড়িয়ে ছবি তুলতে পারায় অনেকটা উচ্ছ্বাসও দেখা যায় তার মাঝে। স্ত্রীকে নিয়ে বেশ কয়েকটি ছবি পোস্ট করে ক্যাপশনে লিখেছেন ‘নাড়ির টানে বাড়ি ফেরার সময়,,,,রাতের অনিন্দ্য সুন্দর যমুনা সেতু।’
শুধু মাইদুলই নন যানজটে আটকা পড়া অধিকাংশ গাড়ির যাত্রীরা গাড়ি থেকে নেমে পড়েন। অনেককে দুই গাড়ির মাঝের ফাঁকা জায়গায় বসে আড্ডা দিতেও দেখা যায়। আবার অনেকে সেতুর ওপরে গা এলিয়ে দিয়ে বিশ্রাম নেন। আবার অনেককে গান পরিবেশন করতেও দেখা গেছে।
আরেক মাইক্রোবাসের যাত্রী রফিকুল বলেন, যানজট কম হবে গতকাল বিকালেই ঢাকা থেকে বেরিয়ে পড়েছিলাম। কিন্তু সেতুতে আসার পর গাড়ি যেন আর চলছেই না।
তার সঙ্গে থাকা আরেক যাত্রী ইমরান বলেন, সড়কে গণপরিবহন নেই, দূরপাল্লার পরিবহন নেই কিন্তু যানজট কমেনি। এত যানজট হলে বাড়ি ফিরতে মনে হয় দুই দিন লেগে যাবে।
ট্রাকচালক সামছুল বলেন, প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে একই জায়গায় বসে আছি। কিছু সময়ের জন্য গাড়ি ছেড়ে দিয়ে তা বেশিক্ষণ স্থায়িত্ব হয় না। কয়েক গজ যাওয়ার পর আবারও থমকে যায় গাড়ি। তবে সেতু পার হলে যানজটমুক্ত যাত্রা হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
এদিকে বাড়িতে ঈদ করার জন্য ভোর থেকেই অনেক মানুষকে গাড়ির জন্য ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতুপূর্ব মহাসড়কের করটিয়া বাইপাস, টাঙ্গাইলের আশিকপুর বাইপাস, রাবনা বাইপাস, এলেঙ্গাতে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। যানবাহন না পেয়ে অনেকেই হেঁটে গন্তব্যের দিকে রওনা হয়েছেন।
টাঙ্গাইল ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট কাজী অলিদ জানান, গাড়ির চাপ বেড়ে যাওয়ায় মহাসড়কের কোথাও কোথাও যানবাহন থেমে থেমে চলছে। বর্তমানে বঙ্গবন্ধু সেতু থেকে করটিয়া পর্যন্ত মহাসড়কে গাড়ির দীর্ঘ সারি রয়েছে। যানজট কমাতে পুলিশ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
ঢাকাটাইমস/১২মে/এমআর