যানবাহনের তীব্র স্রোত, ঘরমুখো মানুষের ভোগান্তি

প্রকাশ | ১২ মে ২০২১, ২০:৩৫

ফরমান শেখ, ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল)

করোনাভাইরাসের কারণে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় এবারের ঈদ যাত্রায় ঘরমুখো মানুষের চরম দুর্ভোগে পোহাতে হচ্ছে। অতিরিক্ত গাড়ির চাপে বুধবার সকাল থেকেই ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কের বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব থেকে মহাসড়কের করটিয়া পর্যন্ত প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ কিলোমিটার এলাকায় খণ্ডখণ্ড যানজটের সৃষ্টি হয়। ফলে মহাসড়কে গাড়ির চাপে থেমে থেমে যানবাহন চলাচল করে।

এর মধ্যে বিকালে বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব পাড় গোল চত্বর এলাকায় ৪টা ৩৮ মিনিটে প্রায় ২০ থেকে ২৫ মিনিট টোল আদায় বন্ধ রাখেন। টোলপ্লাজার সামনে দুর্ঘটনার কারণে এই টোল আদায় বন্ধ রাখেন বলে জানান চেকপোস্টের দায়িত্ব পুলিশ সদস্যরা। এতে করে গোল চত্বরের চারপাশ গাড়ির ছড়াছড়ি চিত্র দেখা যায়। ফলে আরও চরম দুর্ভোগে পড়েন ঘরমুখো মানুষ। পরে পুলিশের দ্রুত তৎপরতায় টোলপ্লাজা এলাকাতে স্বাভাবিক হলে টোল আদায় শুরু করে বঙ্গবন্ধু সেতু কর্তৃপক্ষ।

যানজটে আটকাপড়া বগুড়ার শেরপুরের হাসান মাহমুদ ঢাকাটাইমসকে বলেন, সাভার থেকে কয়েকটি ছোট ছোট পরিবহন পরিবর্তন করেছি। ভাড়াও তিন-চার গুণ বেশি। গাজীপুরের চন্দ্রা থেকে টাঙ্গাইল আসতে সময় লেগেছে ৫ ঘণ্টা। আর ভাড়া গুণতে হয়েছে ৩০০ টাকা। পরে টাঙ্গাইল থেকে সেতু পূর্ব আসতে ৩ ঘণ্টা। ভাড়াও ডাবল। যা বেতন পেয়েছি তা গাড়ি ভাড়াই শেষ।

দিনাজপুর খানসামার উপজেলার সালমা আক্তার ঢাকাটাইমসকে বলেন, স্বামী-সন্তান নিয়ে নয় মাস পর বাড়ি যাচ্ছি ট্রাকে করে। শ্যামলী থেকে সকালে বের হয়েছি বাড়ির উদ্যেশে। এখন বিকাল গড়িয়ে গেলেও সেতু পার হতে পারলাম না। শুনেছি, সেতুতে নাকি দুর্ঘটনা ঘটেছে। তবে মনে হচ্ছে এবার ঈদ অনিশ্চিত।

ট্রাকচালক আব্দুল কাদের ঢাকাটাইমসকে বলেন, লকডাউনের কারণে মহাসড়কে গাড়ির চাপ বেড়েছে। সরকার যদি ঈদের সময় গণপরিবহন চলাচলের সুযোগ দিত, তাহলে এত ভোগান্তি আর সড়কে দুর্ভোগ পৌহাতে হত না।

ট্রাকে গাদাগাদি করে যাত্রী তুলেছেন কেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, বাস বন্ধ। ঈদের ছুটি পেয়ে মানুষ বাড়ি ফিরছেন। প্রাইভেটকার-মোটরবাইকে ভাড়া বেশি। আমরা কম ভাড়ায় মানুষদের পরিবহন করছি। লোকজন মাস্ক বা স্বাস্থবিধি না মানলে আমরা কি করব বলুন।

এদিকে, সরকারের ঘরে থাকার কঠোর বিধিনিষেধ মানছে না সাধারণ মানুষ ও দূর পাল্লার গণপরিবহনগুলো। করোনার ঝুঁকি নিয়েই ঈদে ঘরে ফিরছে মানুষজন। দূরপাল্লার গণপরিবহন ছাড়াও পণ্যবাহী ট্রাক, খালি ট্রাক, খোলা পিকআপ, মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার, মোটরসাইকেল, লেগুনা ও সিএনজিচালিত অটোরিকশাযোগে গন্তব্যে যাবার চেষ্টা করছেন তারা।

অন্যদিকে, এবারের ঈদ যাত্রায় বঙ্গবন্ধু সেতুতে যানবাহন পারাপারে অতীতের সকল রেকর্ড ছাড়িয়েছে। গত মঙ্গলবার (১১ মে) সকাল ৬ টা থেকে আজ বুধবার (১২ মে) সকাল ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘন্টায় প্রায় ৫২ হাজার যানবাহন পারাপার করেছে। এতে টোল আদায় হয়েছে ২ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। এর আগে গত বছর ঈদ যাত্রায় সর্বোচ্চ ৩৩ হাজার যানবাহন পারাপার হয়।

এ বিষয়ে বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সফিকুল ইসলাম ঢাকাটাইমস বলেন, সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত মহাসড়কে গাড়ির ব্যাপক চাপ থাকলেও সন্ধ্যা থেকে গাড়ির চাপ নেই। স্বাভাবিক গতিতে পরিবহন চলাচল করছে। বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে সেতু এলাকায় দুর্ঘটনার কারণে ২০ থেকে ২৫ মিনিট সাময়িক টোল বন্ধ ছিল। পরে স্বাভাবিক হয়।

(ঢাকাটাইমস/১২মে/এলএ)