অসহনীয় ঈদ যাত্রা, ইতিহাসের সাক্ষী বাংলাদেশ
প্রকাশ | ১৩ মে ২০২১, ১৪:১৪
ঈদ যাত্রায় এমন ভোগান্তি আর কষ্ট আগে দেখেনি বাংলাদেশ। পাশাপাশি কয়েকদিন ধরে ফেরিতে গাদাগাদি করে যাত্রী পারাপারের পরিণামও দেখা গেছে। হুড়োহুড়ি করে নামতে ও উঠতে গিয়ে মারা গেছে বেশ কয়েক জন যাত্রী। অসুস্থ হয়েছে অর্ধশতাধিক। কয়েক দিন ধরেই শিমুলিয়া ঘাটে রাত-দিন লাখও মানুষের ভিড়। অবর্নণীয় কষ্ট সহ্য করে বাড়ি যাচ্ছে মানুষ।
প্রশ্ন উঠেছে স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে। যেই করোনার জন্য গণপরিবহন বন্ধ করা হয়েছে মানুষকে অবস্থান ত্যাগ করতে না করা হয়েছে সেটিই বা কতটুকু বাস্তবায়নে সক্ষম হয়েছে? সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কেউ কেউ বলছেন- সরকারের নীতিনির্ধারকদের হুশ ফিরবে কবে? জনস্রোত যখন সামাল দিতে পারবেন না তখন দূরপাল্লার বাস, ট্রেন ও লঞ্চ চলাচল বন্ধ করে কার স্বার্থ রক্ষা করলেন?
জনগণকে এরকম আর্থিক ও মানসিক ভোগান্তির মধ্যে না ফেললে কি হতো না? সবাই যখন বাড়ি ফিরতেই মরিয়া তখন সরকারের উচিত ছিল যানবাহনের পরিমাণ দ্বিগুণ করে স্বাভাবিক চলাচল অব্যাহত রাখা; এতে অন্তত এক জায়গায় সব মানুষ জড়ো হতো না। একটু সচেতন ভাবে ভাবলে হয়তো আজ কেউ লাশ হয়ে বাড়ি ফিরতো না। এ যন্ত্রণা খুবই কষ্টের...।
ফেরিঘাটে প্রচন্ড রোদ, গরম ও মানুষের চাপে নিঃশ্বাস নেওয়ারও সুযোগ নেই। সিএনজি কিংবা বিভিন্ন মাধ্যমে মোটা অংকের ভাড়া দিয়ে ফেরিঘাটে এসেও দুর্ভোগের শেষ নেই। মাইলের পর মাইল ব্যাগ বাচ্চা নিয়ে হাঁটা তো আছেই। এ এক অসহনীয় যাত্রা। যেখানে জনগণের স্বাস্থ্যবিধির কথা বলা হচ্ছে সেটি কি রক্ষা করা গেছে? যাত্রীরা কেউ কেউ বলছেন-পরিবহন চালু থাকলে ভোগান্তি আর ঝুঁকি কিছুটা হলেও মানুষকে স্বস্থি দিতো। বর্তমানে ফেরিঘাটের বিশৃঙ্খলা চরমে।
এখনও সুযোগ আছে এই ভোগান্তি থেকে রেহাই দেওয়ার। ফের ঢাকামুখীদের জন্য দূরপাল্লার বাস, ট্রেন ও লঞ্চ চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয় তাহলে এই কষ্ট কিছুটা হলেও লাঘব হবে। তাহলে হয়তো আর কেউর লাশ হতে হবে না। এখনও সময় আছে জনগনের স্বার্থে বাস, ট্রেন ও লঞ্চ চলাচলের অনুমতি দেওয়ার। এরকম অবর্ণনীয় অমানুষিক এবং অমানবিক ঈদ যাত্রা বাংলাদেশের ইতিহাসে কখনোই হয়নি। ঘন্টার পর ঘন্টা লাখো মানুষের কষ্ট খরস্রোত পদ্মা নদীও সেটি সাক্ষী হয়ে রইল। পরিবারের জন্য একটু সময় বের করতে এই কষ্টের যাত্রা।
লেখক: সাংবাদিক
ঢাকাটাইমস/১৩মে/এসকেএস