খোদার নৈকট্য লাভের সিয়াম
শেষ হয়ে গেলো সিয়াম সাধনার পবিত্র রামাদান
এই বার তবে খুলে দেখো মুমিন তাকওয়ার খতিয়ান।
তুমি কি কেবলি করেছো উপোস, পুণ্যের আকর্ষণে;
নাকি তুমি কিছু সফলও হয়েছো তাকওয়ার অর্জনে?
বুভুক্ষদের ক্ষুধার জ্বালা করেছো কি উপলব্ধি
অশুভ তোমার প্রবৃত্তির হলো কি আত্মশুদ্ধি?
কতোটা তোমার অর্জিত হলো নফসের সংযম
ত্যাগের মহিমা অনুশীলনেও হয়েছো কি সক্ষম?
ভেবে দেখো তুমি ভোগের লিপ্সা কতোটা রেখেছো বশে
সিক্ত হয়েছো কতোটা লালসা কামনার পাপরসে?
পানাহার থেকে বিরত থেকে কি সেরে নিলে সব রোজা,
চোখ ও মনের কাঁধে কি চাপালে অসংযমের বোঝা?
পরনিন্দার পাপের কারণে করেছো কি পরিতাপ
তোমার কথায় আহত হলো যে, পেয়েছো কি তার মাফ?
তোমার কোন প্রতিবেশি যদি থেকে থাকে অনাহারে,
তাদের কি শরিক করেছো তোমার সেহেরি ও ইফতারে?
বিপর্যয়ের রাহুগ্রাসে পড়ে আছে যারা ম্রিয়মাণ,
সেই নিঃস্বদের করেছো কতোটা খাদ্য বস্ত্র দান।
আর্ত-পীড়িত পেয়েছে কি সেবা তোমার দরদি হাতে,
দরিদ্র কি পেয়েছে জাকাত সম্পদের অনুপাতে?
সিয়াম যদি শাব্দিক অর্থে বিরত থাকার নাম
পাপাচার থেকে বিরত কি তোমায় রেখেছিল এ সিয়াম?
কোরআন নাজিলের এই মাসে যতো আদেশ নিষেধ জেনেছো
বাস্তবে তার কতোটুকু তুমি জীবনযাপনে মেনেছো?
লাভের লোভের উস্কানি পেয়ে তবু কি অটল ছিলে,
ঈমানের জোরে মুত্তাকি হয়ে তাকওয়ার মঞ্জিলে?
সিয়াম নিজেই তোমার নাজাতের করবে যে ওকালতি
তোমার সিয়ামের রয়েছে কি সেই শতভাগ প্রস্তুতি?
তোমার সিয়াম-সাধনা না পেলে আল্লাহর মঞ্জুরি
খালি পেটে থেকে কামাই কেবল পুণ্যের খালি ঝুড়ি।
সিয়াম সাধনার মহাপুরস্কার তোমার পুণ্যখাতে
শেষ বিচারের দিনে দয়াময় তুলে দেবে নিজ হাতে।
এইবার তুমি আত্মার চোখ আলোর দ্যোতিতে খুলে
পরখ করো হে মুমিন বান্দা ঘোরের পর্দা তুলে।
ঈমান তোমার দাঁড়াল কতোটা মজবুত পাটাতনে,
নৈকট্য কি মিলেছে খোদার; সিয়ামের কল্যাণে?