যে ফোন কলের কারণে ধরা খেলেন বাবুল আক্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৩ মে ২০২১, ১৬:৩৬

চট্টগ্রামের এক সময়ের আলোচিত পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আক্তার। অপরাধীদের কাছে যিনি ছিলেন মূর্তিমান আতঙ্ক। কর্মজীবনে অনেক ক্লু লেস মামলার সমাধান করেছেন তিনি। কিন্তু এবার নিজের স্ত্রী হত্যায় করা পরিকল্পনায় সেই বাবুল আক্তারই ফেঁসে গেলেন।

স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যাকাণ্ডে তার জড়িত থাকার প্রমাণ পেয়েছে পুলিশের পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। যার বড় প্রমাণ স্ত্রী হত্যায় নিয়োগ করা ভাড়াটে খুনি মুছার সঙ্গে তার মাত্র ২৭ সেকেন্ডের কল রেকর্ড। এই কল রেকর্ডেই বদলে যায় মামলার গতিপথ। গতি আসে মামলার তদন্তে। সবাইকে অবাক করে দিয়ে স্ত্রী হত্যার দায়ে প্রায় পাঁচ বছর পর গ্রেপ্তার হয়েছেন সাবেক এই পুলিশ সুপার।

স্ত্রী হত্যার পর বাবুল আক্তারের আহাজারি ব্যথিত করেছিল দেশবাসীকে। সেই সময়ে নিজেই স্ত্রী হত্যার মোটিভ পরিবর্তন করে দায় চাপান জঙ্গি সংগঠনগুলোর ওপর। দাবি করেন, তার স্ত্রী জঙ্গি হামলায় নিহত হয়ে থাকতে পারেন।

পাঁচ বছর আগে ছিলেন স্ত্রী হত্যা মামলার বাদী। সময়ের পরিক্রমায় পাঁচ বছর পর শ্বশুরের করা হত্যা মামলার আসামি হয়ে গ্রেপ্তার হলেন তিনি। এ মামলার বাদী থেকে এখন এই হত্যাকাণ্ডের প্রধান আসামি তিনি। তাকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে পেয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।

পিবিআই সূত্রে জানা গেছে, মিতু হত্যাকাণ্ডের দিন সকাল ৭টা ৩৭ মিনিটে মুছা নামের এক ব্যক্তির মোবাইলে ফোন করেন বাবুল আক্তার। সালাম দিয়ে মুছা ফোনটি রিসিভ করতেই ওপার থেকে বাবুল আক্তার বলেন, 'তুই কোপালি ক্যান?' তিন থেকে চার সেকেন্ড থেমে আবার বলেন, 'বল তুই কোপালি ক্যান? তোরে কোপাতে কইছি?' এরপর ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন বাবুল আক্তার।

হত্যাকাণ্ডের প্রায় দুই সপ্তাহ পর পুলিশের কাছে এই ফোন রেকর্ড আসার পর ঢাকার বনশ্রী শ্বশুরের বাসা থেকে ঢাকা গোয়েন্দা কার্যালয়ে ডেকে নেয়া হয় বাবুল আক্তারকে। গোয়েন্দা কার্যালয়ে প্রায় ১২ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি থাকার পর তিনি পুলিশের চাকরি থেকে পদত্যাগপত্র দিয়ে মুক্তি পান। যদিও বাবুল বলছেন, তাকে চাকরি ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে।

শুরু থেকেই পুলিশের সন্দেহের তালিকায় ছিলেন বাবুল আক্তার। তার শ্বশুর মোশাররফ হোসেন তার মেয়ের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে বাবুলের সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে অভিযোগ করে আসছিলেন।

২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি মোড়ে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় সড়কে খুন হন পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আক্তারের স্ত্রী মিতু। পদোন্নতি পেয়ে পুলিশ সদরদপ্তরে যোগ দিতে ওই সময় ঢাকায় ছিলেন বাবুল। এর আগে তিনি চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা পুলিশে কর্মরত ছিলেন। হত্যাকাণ্ডের পর নগরীর পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজনকে আসামি করে মামলা করেন বাবুল। তবে পুলিশ তদন্তে তার সম্পৃক্ততার গুঞ্জন ছিল আগে থেকেই। এরপর তিনি চাকরি থেকে ইস্তফা দেন। বাবুল সে সময় দাবি করেন, তার স্ত্রী জঙ্গি হামলায় নিহত হয়ে থাকতে পারেন।

সর্বশেষ ১১ মে বাবুল আক্তারকে ঢাকা থেকে ডেকে নিয়ে দিনভর জিজ্ঞাসাবাদ করেন পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো বিভাগের কর্মকর্তারা। এরপর তাকে পিবিআই হেফাজতে রাখা হয়। তার বিরুদ্ধে নতুন করে বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন। এই মামলায় বাবুল আক্তারকে প্রধান আসামি করা হয়। বর্তমানে বাবুল আক্তার ওই মামলায় পাঁচ দিনের রিমান্ডে আছেন।

(ঢাকাটাইমস/১৩মে/এআর/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

জাতীয় এর সর্বশেষ

ডিএনসিসি কার্যালয় সরানোর মধ্য দিয়ে কারওয়ান বাজার স্থানান্তরের প্রক্রিয়া শুরু 

বিএসএমএমইউ উপাচার্যের দায়িত্ব নিলেন দীন মোহাম্মদ, বললেন ‘কোনো অন্যায় আবদার শুনব না’

সাত বিভাগে ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি হতে পারে

বাংলাদেশে মুক্ত গণতন্ত্র বাস্তবায়নে সমর্থন অব্যাহত থাকবে: যুক্তরাষ্ট্র

সীমান্তে নিহত দুই বাংলাদেশির লাশ ফেরত দিলো বিএসএফ

ট্রেনে ঈদযাত্রা: পঞ্চম দিনের মতো অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু

৫০ হাজার টন ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন

চার বিভাগে নতুন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার

শ্রমিকদের বেতন-বোনাস ঈদের আগেই, ছুটি সরকারি ছুটির চেয়ে কম নয়

সব ধরনের বৈষম্যের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের সংবিধান শক্ত অবস্থানে রয়েছে: স্পিকার

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :