বাগেরহাটে ৫৭ যাত্রাশিল্পীকে খাদ্য সহায়তা

বাগেরহাট প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৩ মে ২০২১, ১৮:০৮

বাগেরহাটে করোনা পরিস্থিতিতে কর্মহীন নারীসহ ৫৭ জন যাত্রাপালা অভিনয় শিল্পীকে খাদ্য সহায়তা দিয়েছে জেলা প্রশাসন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাগেরহাট পুরাতন কোর্ট চত্বর এলাকায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) খোন্দকার মো. রিজাউল করিম এই যাত্রাশিল্পীদের হাতে খাদ্য সহায়তা তুলে দেন। হারিয়ে যেতে বসা গ্রামবাংলার চিরচেনা যাত্রাপালা অভিনয় শিল্পীদের খুঁজে খাদ্য সহায়তা দেয়ায় তারা খুব খুশি।

প্রত্যেক অভিনয় শিল্পীকে ২০ কেজি করে চাল দেয়া হয়।

এসময় বাগেরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ মুছাব্বেরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

এই নিয়ে বাগেরহাটে করোনায় কর্মহীন হয়ে পড়া নিম্ন আয়ের সাড়ে ছয় সহস্রাধিক পরিবারকে খাদ্য ও নগদ অর্থ সহায়তা করল জেলা প্রশাসন। এর মধ্যে রয়েছে যৌনকর্মী, তৃতীয় লিঙ্গ, ঝষি, ডোম, খ্রিষ্টান, বেদে, মোটরযান শ্রমিক, রিকশা ও অটোরিকশাচালক, প্রতিবন্ধী, বাবুর্চি ও নরসুন্দর।

বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক আ ন ম ফয়জুল হক বলেন, গত মার্চ মাসে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ শুরুর পর সরকারের দেয়া লকডাউনে সবচেয়ে বেশি আর্থিক ক্ষতিরমুখে পড়ে নিম্ন আয়ের মানুষ। জেলা প্রশাসন এই নিম্ন আয়ের মানুষদের তালিকা তৈরি করে। তালিকা অনুযায়ী তাদের খাদ্য এবং আর্থিক সহায়তা দেয়া হয়েছে। প্রতি বছর সরকার ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সাহায্য করতে চাল বরাদ্দ দেয়। এবছর করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হলে গণজমায়েত, ওয়াজ মাহফিল ও সনাতন ধর্মাবলম্বীদের নামযজ্ঞ অনুষ্ঠান না করতে সবার প্রতি অনুরোধ করেন। তাতে তারা রাজি হওয়ায় স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে এবছর এসব অনুষ্ঠানের বরাদ্দ বাতিল করে তা করোনায় কর্মহীন হয়ে পড়া নিম্ন আয়ের পরিবারকে সহায়তা করার সিদ্ধান্ত নেয় জেলা প্রশাসন। ওই ধর্মীয় অনুষ্ঠান থেকে বেঁচে যাওয়া প্রায় ৭৫ মেট্রিক টন চাল এসব নিম্ন আয়ের সাড়ে ছয় হাজার পরিবারকে দেয়া হয়েছে। প্রত্যেকটি পরিবারকে সর্বনিম্ন দশ কেজি এবং সর্বোচ্চ ২৫ কেজি করে চাল দেয়া হয়।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) খোন্দকার মো. রিজাউল করিম বলেন, এক সময় গ্রামের বিভিন্ন মেলায় সামাজিক যাত্রাপালার আয়োজন থাকত। যাত্রাপালা ছিল খুবই জনপ্রিয়। গ্রামের সাধারণ মানুষ এই যাত্রাপালা উপভোগ করত। এখন তা অতীত হয়ে গেছে। যাত্রাপালা এখন বিলুপ্তির পথে। হারিয়ে যেতে বসা একটি রুগ্ন শিল্প হয়ে গেছে যাত্রাপালা। এক সময়ের বিখ্যাত যাত্রাপালায় অভিনয় করা শিল্পীদের সন্ধান পেয়ে তাদের তালিকা করে খাদ্য সহায়তা দিলাম। তাদের এই সামান্য খাদ্য সহায়তা দিতে পারায় নিজেকে গর্বিত মনে করছি।

অভিনয় শিল্পী শিবপদ রায় বলেন, যুগের তালে তাল মিলাতে না পারায় গ্রামবাংলার ঐতিহ্য যাত্রাপালা হারিয়ে যাচ্ছে। গ্রামের মেলা মানেই ছিল যাত্রাপালা। ছেলে বুড়ো সবাই যাত্রাপালা কোন মেলাতে হচ্ছে তা জানতে পেরে দেখার জন্য এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় ছুটে যেত। এই যাত্রাপালা কি নতুন প্রজন্ম তা জানেই না। আমাদের এখন কেউ চিনে না জানে বা জানার চেষ্টাও করে না। প্রশাসন করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের মধ্যে আমরা যে আছি তার খোঁজ নিয়ে আমাদের কাছে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে তাতে আমরা দারুণ খুশি।

(ঢাকাটাইমস/১৩মে/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :