কুড়িগ্রামে ভিজিএফের টাকা ‘আত্মসাতে’ ইউপি চেয়ারম্যান আটক

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১৩ মে ২০২১, ২০:২১ | প্রকাশিত : ১৩ মে ২০২১, ২০:১৮

কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলায় ভিজিএফের প্রায় ১৪ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে গুনাইগাছ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ খোকাকে আটক করেছে উপজেলা প্রশাসন। বৃহস্পতিবার বিকালে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় থেকে তাকে আটক করে পুলিশ। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

জানা যায়, পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গুনাইগাছ ইউনিয়ন পরিষদে ৬ হাজার ১৭৮ হতদরিদ্র পরিবারের মাঝে ৪৫০ টাকা করে ২৭ লাখ ৮০ হাজার ১০০ টাকা বরাদ্দ আসে। চেয়ারম্যান ইউপি কার্যালয়ে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত অর্ধেক টাকা বিতরণ করেন। আর বাকি সুবিধাভোগীদের ঈদের পরে আসতে বলেন। কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী ভিজিএফের টাকা ঈদের আগেই হতদরিদ্রদের মাঝে বিতরণ করার নিয়ম। তিনি তা না করে তিন সহস্রাধিক দরিদ্রদের ঈদের আনন্দ থেকে বঞ্চিত করে ফিরিয়ে দেন। এ ঘটনার প্রতিবাদে বঞ্চিতরা ইউপি কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ করতে থাকেন। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও অফিসার ইনচার্জ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। এ সময় তাদের কাছে ইউপি সদস্য ও বঞ্চিতরা অভিযোগ করেন, চেয়ারম্যান অর্ধেক টাকা বিতরণ করে বাকি টাকা না দিয়ে ভুক্তভোগীদের ঈদের পরে আসতে বলেন।

ইউপি সদস্য আব্দুল জলিল বলেন, ঈদের আগে বরাদ্দ সব টাকা বিতরণের কথা থাকলেও চেয়ারম্যান অর্ধেক টাকা বিতরন করে বাকি টাকা ব্যক্তিগত ব্যাংক হিসাব নম্বরে জমা রেখেছেন যা আত্মসাতের শামিল।

ইউনিয়ন পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, ৬ হাজার ১৭৮ পরিবারের মধ্যে ৩ হাজার ১৫০পরিবারকে টাকা বিতরণ করা হয়েছে। বাকি ৩ হাজার ২৮ পরিবারের টাকা চেয়ারম্যানের কাছে গচ্ছিত রয়েছে। চেয়ারম্যানের কক্ষে উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা বৈঠকে বসেন। সেখানে চেয়ারম্যানকে দীর্ঘ সময় দেয়া হলেও দরিদ্রদের বরাদ্দ ৪৫০ টাকা করে ৩ হাজার ২৮ পরিবারের ১৩ লাখ ৬২ হাজার ৬০০ টাকা তিনি দেখাতে পারেননি। এ সময় তিনি বলেন, ঈদের পর বাকি টাকা বিতরণ করা হবে।

এদিকে গত ৯ মে ওই ইউপির সংরক্ষিত আসনের ৩ সদস্য পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ভিজিএফের টাকা বিতরণের তালিকা চেয়ারম্যান তার নিজস্ব লোকজন দিয়ে তৈরি করেছেন। তালিকায় একই পরিবারের একাধিক ব্যক্তির তালিকা এবং ভুয়া নাম ব্যবহার করে তালিকা প্রস্তুত করছেন বলে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ জেলা প্রশাসক ও উপজেলা প্রশাসনের নিকট লিখিত দেন।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের সুপারভাইজার ও গুনাইগাছ ইউপির দায়িত্বপ্রাপ্ত ট্যাগ অফিসার নূরে আলম সিদ্দিকী জানান, ব্যাংক থেকে সমূদ্বয় টাকা উত্তোলন হয়েছে কিনা তা তিনি জানেন না? ভিজিএফের অবশিষ্ট টাকা ইউনিয়ন পরিষদের হিসাব নম্বরে না চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত হিসাব নম্বরে জমা আছে- তাও তিনি জানেন না? মাস্টার রোল ঠিক আছে কিনা তা জানতে চাইলে তিনি কোন উত্তর দিতে পারেননি।

উলিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ ইমতিয়াজ কবির ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, সরকারি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে আটক চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূর-এ-জান্নাত রুমি জানান, সরকারি টাকা বিতরণে অনিয়ম করায় গুনাইগাছ ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।

(ঢাকাটাইমস/১৩মে/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :