নুসরাতের ‘কল রেকর্ড’ গোয়েন্দাদের হাতে!

প্রকাশ | ১৩ মে ২০২১, ২০:৪৬

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

দিন যত যাচ্ছে কলেজছাত্রী মোসারাত জাহান মুনিয়ার আত্মহত্যার নেপথ্যের রহস্য তত উন্মোচিত হচ্ছে। এই ঘটনার পেছনে মুনিয়ার বড় বোন নুসরাতের ইন্ধনের গুঞ্জনও জোরালো হচ্ছে। তবে সবকিছু নিয়ে চলছে মামলার তদন্ত। ইতিমধ্যে অজ্ঞাত এক ব্যক্তির সঙ্গে নুসরাতের একটি কল রেকর্ড এসে পৌঁছেছে গোয়েন্দাদের হাতে। যা নিয়ে তদন্ত সংশ্লিষ্টদের মধ্যে তোলপাড় শুরু হয়েছে। রেকর্ডের পুরোটা জুড়েই দেশের একটি বৃহৎ ব্যবসায়িক গ্রুপের এমডিকে ফাঁসানোর কথাবার্তা রয়েছে বলে জানা গেছে।

গত ২৬ এপ্রিল গুলশানের একটি ফ্ল্যাট থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় মুনিয়ার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ওই ঘটনায় বাদী হয়ে মামলা করেন মুনিয়ার বড় বোন নুসরাত।

জানা গেছে, মুনিয়া যেদিন মারা যান এর তিন দিন আগে অর্থাৎ ২৩ এপ্রিল নুসরাত ওই ব্যবসায়িক গ্রুপের এমডিকে কীভাবে ফাঁসানো যায় তার পরিকল্পনা করেন। অপর প্রান্তে পুরুষ কণ্ঠস্বরে কেউ একজন তার সঙ্গে সাত মিনিট এ বিষয়ে কথা বলেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, সেই আলাপচারিতায় ওই ব্যবসায়ীর কাছ থেকে কীভাবে মোটা অংকের টাকা নেয়া যায় তা নিয়ে আলোচনা হয়। এছাড়া চট্টগ্রামের হুইপপুত্রকে নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ কীভাবে বন্ধ করা যায় তা নিয়েও কথাবার্তা হয় ওই ফোনালাপে।

সম্প্রতি চট্টগ্রামে একজন ব্যাংক কর্মকর্তার আত্মহত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। ওই ঘটনায় হুইপপুত্র শারুন চৌধুরীর  বিরুদ্ধে প্ররোচণার অভিযোগ নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। যা নিয়ে অনেকটা বেকায়দায় পড়তে হয়েছে হুইপপুত্রকে।

সূত্রমতে, মোবাইলের কথাবার্তার এক পর্যায়ে নুসরাতকে বলতে শোনা যায়, ওই ব্যবসায়ীকে ফাঁসালেই সব বন্ধ করা যাবে। তিনি সেই ব্যবস্থা করছেন। শুধু তাই নয়, অপর প্রান্তে থাকা ব্যক্তিকে বিষয়টি নিয়ে দুশ্চিন্তা করতে বারণ করেন নুসরাত।

জানা গেছে, মুনিয়ার বোন কথাগুলো কাকে বলছিলেন তা জানার চেষ্টা করছেন  গোয়েন্দারা। ওই টেলিফোন কলের মূল উৎস এবং এই কলের সূত্র ধরে অনুসন্ধান করলেই অপমৃত্যুর মামলার রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব হবে বলে ধারণা তদন্ত সংশ্লিষ্টদের।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তদন্ত সংশ্লিষ্ট একজন সদস্য ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘যেকোনো একটি মামলার মোটিভ হলো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। নুসরাত কেন এই মামলাটি করেছেন সেই মোটিভটি জানার চেষ্টা করা হচ্ছে।’

গত ২৬ এপ্রিল রাজধানীর গুলশান-২ নম্বরের ১২০ নম্বর সড়কের এক ফ্ল্যাটে মুনিয়ার লাশ সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় পায় পুলিশ। মুনিয়া ঢাকার একটি কলেজে দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন।

পুলিশ জানায়, মুনিয়ার বাড়ি কুমিল্লা শহরে, তার পরিবার সেখানেই থাকে। তিনি এখানে থেকে পড়াশোনা করতেন। ওই ফ্ল্যাটে তিনি একাই থাকতেন।

এদিকে এ ঘটনায় নিহতের বোন নুসরাত হাজান গুলশান থানায় আত্মহত্যার প্ররোচনায় একটি মামলা করেন। পরে ২ মে এ ঘটনায় মুনিয়ার ভাই আশিকুর রহমান সবুজ হুইপপুত্র নাজমুল হক চৌধুরী শারুনের বিরুদ্ধে আদালতে হত্যা মামলার আবেদন করেছেন।

(ঢাকাটাইমস/১৩মে/বিইউ/জেবি)