ঢাকার কাছে জনপ্রিয় টুরিস্ট স্পট

ফিচার প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৪ মে ২০২১, ০৮:০৭

ঢাকা জেলা বাংলাদেশের একটি প্রাচীন প্রশাসনিক এলাকা যার ইতিহাস কয়েক শতাব্দী প্রাচীন। অধুনা এই জেলার উত্তরে গাজীপুর ও টাঙ্গাইল জেলা, দক্ষিণে মুন্সিগঞ্জ ও রাজবাড়ী জেলা, পূর্বে নারায়ণগঞ্জ জেলা এবং পশ্চিমে মানিকগঞ্জ জেলার অবস্থান। জেলার সদর দপ্তর অর্থাৎ নগর ঢাকা বর্তমান পৃথিবীর একটি অন্যতম প্রধান মেগাসিটি। বাংলাদেশে যারা ঢাকা শহরে থাকেন তাদের প্রকৃতির দেখা পাওয়া বা মনোরম কোন জায়গায় যেতে হলে অনেক দূর পথ পারি দিতে হয় ঢাকার বাইরে। আবার ঢাকার বাইরে যেকোনো জায়গায় যাওয়াটা এবং যাতায়াত, থাকা, ঘোরা অনেক সময়ের ব্যাপার। কম সময়ে পরিবার নিয়ে ঢাকার আশেপাশেই ঘুরা যায় এমন অনেক সুন্দর জায়গা আছে। যেখানে আপনি একদিনে ঘুরে আসতে পারবেন।

পদ্মা রিসোর্ট

মুন্সীগঞ্জের লৌহজং থানা সংলগ্ন পদ্মার বিস্তৃত চরজুড়ে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক অপরূপ নিদর্শন পদ্মা রিসোর্ট।এ রিসোর্টে দিনদিন পর্যটন বাড়ছে। পদ্মা রিসোর্ট দেখলে মনে হবে চরে যেন সেন্টমার্টিন দ্বীপ জেগে আছে। সাড়ে তিন শ শতাংশ জমির বিশাল বিস্তৃত চরে প্রকৃতির এক অপার সৌন্দর্য নিয়ে পদ্মা রিসোর্টের কটেজগুলো (কুড়েঘর) নির্মাণ করা হয়েছে। নদীরপাড় সংলগ্ন পদ্মা নদীঘেরা চরের মধ্যে কুড়েঘর ও প্রাকৃতিক পরিবেশ পদ্মা রিসোর্টকে মনোমুগ্ধকর করে রেখেছে। লৌহজং থানা সংলগ্ন স্থান থেকে ট্রলারে বা স্পিডবোটে পদ্মার ছোট একটি নদী পাড়ি দিয়েই পদ্মা রিসোর্ট। রাতের বেলায় যারা চাঁদ দেখতে এবং ভোরের গ্রামীণ পরিবেশ দেখতে ভালোবাসেন তারা একবার ঢু মেরে আসতে পারেন ঢাকার কাছের এই রিসোর্ট থেকে।

ড্রিম হলিডে পার্ক

ড্রিম হলিডে পার্ক ঢাকার পাশেই নরসিংদী জেলায় অবস্থিত অন্যতম থিম পার্ক । পরিবার পরিজনদের সারাদিন হৈচৈ আর আনন্দে মাতামাতি করতে অথবা পিকনিকের আয়োজন করতে চাইলে ঘুরে আসতে পারেন এখান থেকে। রাতে থাকার জন্য রয়েছে রিসোর্টের ও সুব্যবস্থা আর প্রবেশমূল্য জনপ্রতি ২০০ টাকা করে।

নিকলী হাওর

খোলামেলা পরিবেশে স্নিগ্ধ প্রকৃতির ছোঁয়া পেতে ঘুরে আসতে পারেন কিশোরগঞ্জের নিকলী হাওর থেকে । ঢাকা থেকে বাসে বা ট্রেনে যেতে পারেন কিশোরগঞ্জ শহরে, সেখান থেকে সিএনজি তে করে নিকলি ঘাট । ঘাট থেকে নৌকা ভাড়া করে ঘুরে দেখুন হাওর । মনে রাখবেন, বর্ষার শেষ দিকে হাওর ভ্রমণের উপযুক্ত সময় ।

জিন্দা পার্ক

কম সময়ে ও কম খরচে ঘুরে আসার জন্য যেতে পারেন পূর্বাচল হাইওয়ের কাছেই নারায়নগঞ্জের রূপগঞ্জে অবস্থিত জিন্দা পার্ক। ঢাকা থেকে দুরত্ব মাত্র ৩৭ কিলোমিটার । খাওয়া দাওয়ার জন্য পার্কের ভিতরেই রেস্টুরেন্ট আছে । এছাড়া, রাতে থাকার জন্যেও আছে গেস্ট হাউজ । প্রবেশ টিকেট জনপ্রতি ১০০ টাকা।

পানাম সিটি

সোনারগাঁ একটি গুরুত্বপূর্ন অঞ্চল হলেও উনিশ শতকের প্রথম দিকে পানাম নগর বিখ্যাত হয়ে উঠে। ইংরেজরা এটিকে ব্যবসা বাণিজ্যের কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলে মূলত ঢাকাই মসলিন কাপড়ের কেনাবেচার জন্য। এছাড়াও মুঘল আমলে এই এলাকায় বেশ কিছু ব্রিজ নির্মাণ এবং অবকাঠামোগত উন্নয়ন করা হয়। এসব ঐতিহাসিক স্থাপনার ধ্বংসাবশেষ এখনো আপয়ান্র জন্য অপেখহা করে আছে পানাম নগরে। ঐতিহাসিক স্থাপনা সংরক্ষণে বাংলাদেশ কখনোই উদাহরণ নয়। তবুও, বেশ কিছু লাল ইটের দালান এখনো টিকে আছে পানাম নগরে যা হতে পারে আপনার ঘুরতে যাওয়ার ঠিকানা।

মাওয়া ঘাট

মাওয়া রিসোর্ট ঢাকা থেকে মাওয়া গোলচত্বরের ডান দিকের রাস্তায় দুই কিমি দূরের লৌহজং পুলিশ ফাড়ির নিকটে পুরনো ফেরী ঘাটের পাশের নদীর পাশে।

আড়িয়াল বিল

ঢাকার খুব কাছেই এই মুন্সিগঞ্জ এক ঐতিহ্যবাহী অঞ্চল। আড়িয়াল বিল নিয়ে মানুষের মধ্যে বেশ আগ্রহ। বিলের পানিতে পা ডুবিয়ে চম’কার একটা দিন পার করতে পারেন।

এম জে হলিডে রিসোর্ট

মুন্সিগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান উপজেলার ইছাপুরা এলাকার গ্রামের পথ পেরিয়ে পশ্চিম ইছাপুরা গ্রামে সাড়ে ৮ একর বিশাল জমির উপর রয়েছে এম জে হলিডে রিসোর্ট। এই রিসোর্টটিও এক মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক পরিবেশে আচ্ছন্ন। সুইমিং পুল, খেলার মাঠ, পুকুর, সংগীত পরিবেশনের মঞ্চ, নাটক-সিনেমার সুটিংসহ নানা ধরণের বিনোদনের ব্যবস্থা রয়েছে এই রিসোর্টটিতে। এখানে অবকাশ যাপনকারীদের জন্য রয়েছে এসি ও নন-এসি উভয় ধরণের কটেজ।

মেঘনা ভিলেজ হলিডে রিসোর্ট

মুন্সীগঞ্জ জেলার গজারিয়া উপজেলায় মেঘনা নদীর কোলঘেষে মেঘনা ব্রিজ থেকে ১ কিলোমিটার দূরত্বে এই রিসোর্টটি অবস্থিত। সম্পূর্ণ গ্রামীণ নিরিবিলি পরিবেশে এই রিসোর্টটি গড়ে তোলা হয়েছে। এখানে অবকাশ যাপনকারীদের জন্য রয়েছে এসি ও নন-এসি উভয় ধরণের কটেজ। এখানকার কটেজগুলো দেখতে অনেকটা নেপালি বাড়িঘরের মতো। পর্যটকদের জন্য এখানে রয়েছে সুবিশাল খেলার মাঠ, খেলাধুলার উপকরণ, সুস্বাদু ও উন্নতমানের খাবারের ব্যবস্থা। রাতের বেলায় যারা চাঁদ দেখতে ভালোবাসেন তারা একবার ঢু মেরে আসতে পারেন ঢাকার কাছের এই মেঘনা ভিলেজ থেকে। পর্যটকদের জন্য এই রিসোর্টে ছিপ-বরশি দিয়ে মাছ ধরার সু-ব্যবস্থা রয়েছে। অবশ্য সেজন্য বাড়তি টাকা গুণতে হবে।

মুড়াপাড়া জমিদার বাড়ী

ঢাকা থেকে কাঁচপুর ব্রীজ পার হয়ে বামে রূপগঞ্জ উপজেলা । একটু সামনেই রূপসী বাসস্টেন থেকে সিএনজি করে ( ২০ টাকা জন প্রতি ভাড়া ) মুড়াপাড়া জমিদার বাড়ি ।

বাংলার তাজমহল

২০০৮ সালে সোনারগাঁয়ে আগ্রার তাজমহলের আদলে নির্মিত হয় ‘বাংলার তাজমহল’। বিভিন্ন স্থানে বসানো টাইলস, বিদেশি ডায়মন্ড পাথর, গম্বুজের ওপরে ব্রোঞ্জের তৈরি চাঁদ-তারায় দৃষ্টিনন্দন এ তাজমহল। এখানে প্রবেশ মূল্য ৫০ টাকা।

চলচ্চিত্র পরিচালক ও প্রযোজক আহসানউল্লা মনি নিজস্ব অর্থায়নে পেরাব গ্রামে নিজ বাড়িতে ১২ বিঘা জমির ওপর এ তাজমহল নির্মাণ করেন। এতে ব্যবহৃত টাইলসগুলো আনা হয়েছে ইতালি থেকে। স্থাপনাটির বিভিন্ন জায়গায় বসানো হয়েছে ১৭২টি বিদেশি ডায়মন্ড পাথর। এছাড়া গম্বুজের ওপর চাঁদ-তারা তৈরিতে ব্যবহৃত হয়েছে ৪ মণ ব্রোঞ্জ।

(ঢাকাটাইমস/১৪মে/এজেড)

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফিচার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :