নেয়ামত ভূঁইয়া’র পঞ্চপর্ণ ও অণুকাব্য
প্রকাশ | ১৬ মে ২০২১, ১৯:০৫
১. কর্মেই সাফল্য
হাত না পেতে হাত লাগাবে আপন কাজে কাজে,
কোনটা বড়ো কোনটা ছোটো; মরবেনা সেই লাজে।
কাজ না ক’রে পাতলে হাত
জুটবে ভাতই , মরবে জাত;
বিশ্বজোড়া ঘুরবি কতো আর ভিখিরির সাজে-
মর্যাদাবোধ জাগবে কখন বিবেক বোধের মাঝে!
২. যৌবনের জয়
আমার সকল বসন্তই শুকনো পাতায় ছাওয়া।
ফিরলে আবার এই ভুবনে
সেই উপদেশ চলবো মেনে;
‘যৌবনেতেই করবে পূরণ যা জীবনের চাওয়া-
জওয়ান কালের গান চলে না বৃদ্ধকালে গাওয়া;
সেই পিরিতির উষ্ণতাও যায়না খুঁজে পাওয়া।’
৩. থলের বিড়াল
সমাজের মগডালে যতো জঞ্জাল,
ছড়িয়েছে ভেজালের অদ্ভুত জাল।
ভন্ডরা সাধু সাজে,
সেই জাল ছিঁড়েনা যে—
থলিতেই থেকে যায় থলের বিড়াল।
৪. দ্বিমুখিতা
হৃদয়ের ছোঁয়া নেই সব কিছু লৌকিক,
ত্যাগে নেই ভক্তি; ভোগই শুধু যৌগিক।
যতো পায় ততো চায়
শেয়ালের মতো ধায়-
অন্তরে কুটিলতা; সরলতা মৌখিক।
৫. সুবিধাবাদী ছবক
সাধুবাবা সাধুভাষায় কথা বলেন জনম ভর,
চাঁদকে বলেন ’চন্দ্রিমা’ আর গর্তকে কন ’গহ্বর’।
তার সারাটা নগ্ন দেহ
বলবে পাছে ’ন্যাংটা’ কেহ
তাইতো তিনি ছবক শেখান; ’ন্যাংটা’ নয় সে— ‘দিগম্বর’।
৬. দায়শূন্য অভিভাবকত্ব
সন্ধ্যা হ’লে আঁধার নামে দিগন্তটা ঘিরি,
মুরগি-হাঁসের বাচ্চা খোঁজো আসলো কিনা ফিরি!
কিন্তু সেটার খোঁজ রাখোনা
কোথায় তোমার পুত্র-সোনা?
গভীর রাতে কোথায় ছেলে করছে বাবুগিরি?
৭. প্রাণখোলা চরিত
হাসতে হাসতে অনেক কথাই যায় বলা,
হাটতে হাটতে অনেক পথই যায় চলা।
আসল কথা ব’লতে হলে
সঠিক পথে চ’লতে হ’লে-
চলন বলন হতেই হবে প্রাণখোলা।
৮. বাহারি আস্ফালন
সোনা-রূপা-হীরে নেই; সবই লোহা-লক্কর,
নেই ধন টাকা-কড়ি ঠকে ঠকে টক্কর।
গর্জনে কাঁপে বায়ু
হুংকারে কমে আয়ু
এ বীরের বিষ নেই; কুলোপনা চক্কর।
৯. মুল্যবৃদ্ধির বিজ্ঞাপন
চোখের পলকে মনের বারুদের
ঘটালে এমন বিস্ফোরণ,
আমি তো ভেবেছি,করেছো মনের
না-বলা কথার উন্মোচন।
ভেবেছি করবো এ শুভক্ষণের
জাঁকজমকী উৎযাপন,
পরে বুঝলাম, ভঙ্গিমা কেবলি
দাম বাড়ানোর বিজ্ঞাপন।