আবুল কালাম আজাদের দুর্নীতি তদন্তের কী হলো

সৈয়দ ঋয়াদ, ঢাকটাইমস
| আপডেট : ১৭ মে ২০২১, ১২:১১ | প্রকাশিত : ১৭ মে ২০২১, ১১:২৮

করোনাভাইরাস মহামারিতে নিম্নমানের মাস্ক, পিপিইসহ স্বাস্থ্য সরঞ্জাম সরবরাহ ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একের পর এক কেলেঙ্কারিতে গোটা স্বাস্থ্য খাত নিয়ে প্রশ্ন উঠে। এসব ঘটনায় তোপের মুখে পড়েন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ।

মূলত কোভিড-১৯ সময়ে চিকিৎসকদের মানহীন স্বাস্থ্য সরঞ্জাম সরবরাহের ঘটনার মধ্য দিয়ে স্বাস্থ্য খাতের এসব অনিয়ম সামনে চলে আসে। একইসঙ্গে জেকেজি হেলথ কেয়ারের জালিয়াতি ও রিজেন্ট হাসপাতালে ভুয়া রিপোর্টকাণ্ডে আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও সমালোচনা দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়ে।

স্বাস্থ্যখাতের ‍দুর্নীতির বিভিন্ন বিষয়ে সংশ্লিষ্টতা এবং কমিশনের অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে ২০২০ সালের ৬ আগস্ট স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালককে পৃথক ‍দুটি নোটিশ দিয়ে তলব করে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক। অবশ্য দুদকের তলবের আগেই ওই বছরের ২১ জুলাই মহাপরিচালকের পদ থেকে পদত্যাগ করেন আবুল কালাম আজাদ।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পদত্যাগী ওই মহাপরিচালককে (আবুল কালাম আজাদ) অনুসন্ধান কর্মকর্তা মীর মো. জয়নুল আবেদীন শিবলীর পাঠানো ‘অতীব জরুরি’ তলবি নোটিশে বলা হয়, নির্ধারিত সময়ে (১২ আগস্ট ২০২০) হাজির হয়ে বক্তব্য দিতে ব্যর্থ হলে বর্ণিত অভিযোগসংক্রান্ত বিষয়ে তার কোনো বক্তব্য নেই মর্মে গণ্য করা হবে।

পৃথক আরেকটি নোটিশে দুদকের পরিচালক শেখ মো. ফানাফিল্যা আবুল কালাম আজাদকে ১৩ আগস্ট হাজির হয়ে বক্তব্য প্রদান করতে বলেন। নোটিশে বলা হয়, সাহেদের অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে তার (আবুল কালাম আজাদ) বক্তব্য গ্রহণ প্রয়োজন।

দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিম্নমানের স্বাস্থ্য সরঞ্জাম কেনায় কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সেসময় মহাপরিচালকের সঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক মো. আমিনুল হাসানসহ চারজনকে তলব করে সংস্থাটি।

গত বছর কোভিড-১৯ সংক্রমণ বাড়তে থাকলে রোগীদের চিকিৎসায় ওই বছর ২১ মার্চ রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে চুক্তি হয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের। সেই চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তৎকালীন মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদসহ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা।

করোনাভাইরাসের পরীক্ষা না করে ভুয়া রিপোর্ট প্রদান করে সরকারের কাছ বিল আদায় করার পরও রোগীর কাছ থেকে করোনা টেস্টে বাড়তি টাকা আদায়ের ও অনিয়মের অভিযোগে র‌্যাপিড একশন ব্যাটেলিয়ান-র‌্যাব গত বছরের ৭ ও ৮ জুলাই অভিযান চালিয়ে মো শাহেদ এর মালিকানাধীন রিজেন্ট হাসপাতালের মিরপুর ও উত্তরা শাখা বন্ধ করে দেয়। সেসময় পালিয়ে যান শাহেদ।

লাইসেন্সের মেয়াদ না থাকা সেই রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে করোনা চিকিৎসা ও পরীক্ষা নিরীক্ষার চুক্তিটিতে পরবর্তীতে অনেকেই অবাক হয়েছেন। বিশেষ করে রিজেন্টের করোনার ভূয়া রিপোর্ট প্রদানের কারণে ইতালির একটি জাতীয় দৈনিকে বাজে ভাবে শিরোনাম হতে হয় বাংলাদেশকে।

এরপর রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে স্বাস্থ অধিদপ্তরে চুক্তির নানা দিক খতিয়ে দেখে দুদক। পরে গত বছর সংস্থাটি স্বাস্থ্যের সেই ডিজিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। এই বিষয়ে দুদকের পরিচালক ও তদন্ত কর্মকর্তা শেখ মো. ফানাফিল্যা ঢাকাটাইমসকে বলেন, রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে চুক্তির বিষয়ে আবুল কালাম আজাদকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তবে এর সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি।

পৃথক আরও একটি নোটিশের মাধ্যমে পদত্যাগ করা ওই ডিজিকে (আজাদ) জিজ্ঞাসবাদ করেন দুদকের পরিচালক তদন্ত (গোয়েন্দা শাখা) মীর জয়নুল আবেদিন শিবলী।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে সঙ্গে জেকেজির মতো প্রতিষ্ঠানের চুক্তি, লাইসেন্সের মেয়াদহীন রিজেন্ট হাসাপাতালের সঙ্গে চুক্তি। স্বাস্থ্যের এক গাড়ী চালককের শত কোটি টাকার মালিক হয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠলে স্বাস্থ্যে সাবেক মহাপরিচালকের বিষয়ে তদন্ত শুর করে সংস্থাটি।

তবে দুদকের তদন্ত সংশ্লিষ্ট একটি একটি সূত্র জানিয়েছে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালকসহ স্বাস্থ অধিদপ্তর, সিএিএসডি ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে বেশ কয়েকজন পদস্থ কর্মকর্তার দুর্নীতির বিষয় তদন্ত করছে দুদক। তদন্ত শেষ হলে তাদের বিষেয় সিদ্ধান্ত নেবে সংস্থাটি।

(ঢাকাটাইমস/১৬মে/এসআর/ডিএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বিশেষ প্রতিবেদন বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :