‘শেখ হাসিনাকে ঘিরেই সুন্দর আগামীর স্বপ্ন দেখে বাংলাদেশ’

প্রকাশ | ১৭ মে ২০২১, ১৭:৪০

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, ‘বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা সেদিন ফিরে এসেছিলেন বলেই এই করোনা সংকটেও বাংলাদেশে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। বাংলাদেশের ইতিবাচক পরিবর্তনের অগ্রনায়ক শেখ হাসিনা। তাকে ঘিরে সুন্দর আগামীর স্বপ্ন দেখে বাংলাদেশ।’

সোমবার দুপুরে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘এই দিনটি বাঙালি জাতি তথা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অনুসারি ও স্বাধীনতার স্বপক্ষ শক্তি আপামর জনতার জন্য একটি বিশেষ দিন। কারণ বাংলাদেশের ইতিহাসে এই দিনটি যদি না আসত তাহলে বঙ্গবন্ধু মুজিবের নাম এদেশের ইতিহাস থেকে মুছে ফেলা হত। স্বাধীনতাবিরোধী চিহ্নিত রাজাকার আলবদর ও ধর্মীয় উগ্রবাদীরা জাতীয় পতাকা গাড়িতে উড়িয়ে ঘুরে বেড়াত।’

১৫ আগস্ট নির্মম হত্যাকাণ্ডের কথা স্মরণ করে নানক বলেন, ‘১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট মদদে দেশীয় সামরিক ও সাম্রাজ্যবাদের বেসামরিক চক্রের ষড়যন্ত্রে সামরিক বাহিনীর কতিপয় উচ্ছৃঙ্খল সদস্য স্বাধীনতা আন্দোলনের একক নেতা আমাদের প্রিয় জন্মভূমির জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করে। এই হত্যাকাণ্ডে বঙ্গববন্ধুর আদর্শের অনুসারি নেতা-কর্মীরাসহ সমগ্র জাতি কিংকর্তব্যবিমূঢ় ও হতবিহ্বল হয়ে পড়ে। ফলে কোনো রকম প্রতিরোধ-প্রতিবাদ বা বিভক্তিহীন পরিবেশের মধ্যে ষড়যন্ত্রকারী চক্রটি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করে নেয়।’

বিদেশে অবস্থান করার কারণে বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার বেঁচে থাকার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে নানক বলেন, ‘জাতির পিতার জ্যেষ্ঠ কন্যা আজকের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাত্র ২৭ বছর ১০ মাস ১৭ দিন বয়সে পিতা-মাতা ভ্রাতৃবধূ একমাত্র চাচাসহ পরিবারের ১৭ জন আপনজনকে হারিয়ে বেঁচে থাকার একমাত্র ছোট বোন শেখ রেহানা, স্বামী ও দুই সন্তানকে নিয়ে নানা প্রতিকূলতার মধ্যে প্রবাসে নির্বাসিত জীবন-যাপন করতে থাকে। তিনি নীরবে মাতৃভূমির রাজনৈতিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে থাকে।’

বঙ্গবন্ধুবিহীন বাংলাদেশে জগদ্দল পাথরের মতো রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় চেপে বসা সামরিক স্বৈরশাসকদের মামলা-হামলা নির্যাতন নিপীড়নে দিশেহারা আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও স্বাধীনতার স্বপক্ষের মানুষ প্রত্যক্ষ করতে থাকে নানা গোষ্ঠী দ্বন্দ্বে বিভক্ত নেতৃত্ব, নেতৃত্বশূন্য দলে ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব প্রত্যাশীদের দ্বন্দ্ব ও প্রতিযোগিতার অশুভ কার্যক্রম। ঠিক এমনি এক পরিবেশে ১৯৮১ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনে বহুধা বিভক্ত দলকে ঐক্যবদ্ধ করতে সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের প্রত্যাশা পূরণে ৩৩ বছর চার মাস ১৭ দিন বয়সে দেশের সর্ববৃহৎ এবং প্রাচীনতম রাজনৈতিক দলটির সভাপতি নির্বাচিত হন জাতির পিতার কন্যা শেখ হাসিনা। মানবতার জননী, নির্ভীক জননী আজকের প্রধানমন্ত্রী সফল রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা। সভাপতি নির্বাচতি হওয়ার তিন মাস একদিন পর ১৯৮১ সালের ১৭ মে সম্পূর্ণ প্রতিকূল পরিবেশ জেনেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পিতামাতা ভাইবোনবিহীন দেশের জনগণের টানে স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করেন। দেশে ফেরার পর চার দশকে শেখ হাসিনার লড়াই-সংগ্রাম, আন্দোলন ও রাষ্ট্র পরিচালনার অগ্রযাত্রার অপ্রতিরোধ্য পথচলার প্রসঙ্গ তুলে ধরেন বক্তারা।

আলোচনা সভার প্রধান অতিথি দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের তার সরকারি বাসভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেন।

সভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সাদেক খান। বঙ্গবন্ধু এভিনিউ প্রান্তে বক্তব্য দেন দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিয়ষক সম্পাদক আব্দুস সবুর, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য আনোয়ার হোসেন, শাহাবুদ্দীন ফরাজী, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচিসহ অনেকে। সভা পরিচালনা করেন মহানগর উত্তরের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন।

(ঢাকাটাইমস/১৭মে/টিএ/জেবি)