সাংবাদিক আটক: স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এজাহারে যা আছে

প্রকাশ | ১৮ মে ২০২১, ০০:১৫

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকটাইমস
সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম (ফাইল ছবি)

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ নথির ছবি ও কাগজ সরিয়ে ফেলার চেষ্টার অভিযোগে দৈনিক প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগপত্র দায়ের করা হয়েছে। সোমবার রাতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের উপসচিব ডা. মো. শিব্বির আহমেদ ওসমানী রাজধানীর শাহবাগ থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ সচিবের একান্ত সচিবের দপ্তরে বিনা অনুমতিতে প্রবেশ করে সরকারি বেশকিছু নথি শরীরের বিভিন্ন স্থানে লুকান এবং মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ছবি তোলেন বলে অভিযোগ এনেছেন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।

সেখানে সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা আটকে রাখার পর শাহবাগ থানায় হস্তান্তর করা হয়। সহকর্মীকে আটকে রাখার খবরে সাংবাদিকরা শাহবাগে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন।

থানায় দেয়া লিখিত অভিযোগে শিব্বির আহমেদ ওসমানী বলেন, সোমবার বিকাল ২টা ৫৫ দিকে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ সচিবের একান্ত সচিব এর দপ্তরে রোজিনা ইসলাম নামের একজন নারী প্রবেশ করেন। এ সময় একান্ত সচিব দাপ্তরিক কাজে সচিবের কক্ষে অবস্থান করছিলেন। এ সুযোগে ওই নারী দাপ্তরিক গুরুত্বপূর্ণ কাগজ-পত্র শরীরের বিভিন্ন স্থানে লুকান এবং মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ছবি তোলেন। এ সময় সচিবের দপ্তরে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য মো. মিজানুর রহমান খান দেখতে পান এবং তাকে বাধা প্রদান করেন। তিনি নির্ধারিত কর্মকর্তার অনুপস্থিতিতে কক্ষে কী করছেন জানতে চান। এ সময় ওই নারী নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দেন। পরবর্তীতে অতিরিক্ত সচিব কাজী জেবুন্নেছা বেগম, উপসচিব জাকিয়া পারভীন, সিনিয়র সহকারী সচিব শারমীন সুলতানা, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিবের একান্ত সচিব মো. সাইফুল ইসলাম ভূঞা, সিনিয়র সহকারী সচিব মোসাদ্দেক মেহদী ইমাম, অফিস সহায়ক মো. মাহফুজুল ইসলাম, সোহরাব হোসেনসহ অন্যান্য কর্মকর্তা ও স্টাফরা ঘটনাস্থলে আসেন। এবং অতিরিক্ত সচিব কাজী জেবুন্নেছা বেগম তল্লাশি করে তার কাছ থেকে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র এবং ডকুমেন্টসের ছবি সম্বলিত মোবাইল উদ্ধার করেন। এতে প্রমাণিত হয় যে, ডকুমেন্টসগুলো তিনি চুরি করে নিয়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় সচিবালয়ের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনারের নেতৃত্বে শাহবাগ থানার মহিলা পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে তাকে জিম্মায় নেন।

এজাহারে আরো বলা হয়, বর্তমানে বিভিন্ন দেশের সাথে বাংলাদেশের ভ্যাকসিন ক্রয় ও সংগ্রহসংক্রান্ত নেগোসিয়েশন চলমান রয়েছে এবং খসড়া সমঝোতা স্মারক ও নন-ডিসক্লোজার এগ্রিমেন্ট প্রণয়ন কাজ চলমান রয়েছে। সমঝোতা স্মারক নিয়ে দুই পক্ষের মাঝে প্রতিনিয়ত পত্র এবং ই-মেইলের মাধ্যমে যোগাযোগ হচ্ছে। যেখানে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সন্নিবেশিত রয়েছে। উক্ত নারী যেসকল নথিপত্রের ছবি তুলছিলেন। তার মধ্যে উল্লিখিত গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্রও ছিল। এসকল তথ্য জনসমক্ষে প্রচার হলে সংশ্লিষ্ট দেশসমূহের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যাওয়ার অশঙ্কা রয়েছে। উল্লিখিত কাগজপত্রসমূহ গুরুত্বপূর্ণ বিধায় মন্ত্রণালয়ে সংরক্ষিত আছে, যা পরবর্তীতে বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রদর্শন করা হবে। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে অভিযোগ দায়ের করতে বিলম্বিত হলো। অতএব, এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ করা হলো।

(ঢাকাটাইমস/১৭মে/এসএস/এআর/জেবি)