এখন কোথায় কী করছেন সেই এসি আকরাম

মনে আছে এসি আকরামকে? কোথায় আছেন তিনি? কারাগারে না বাইরে?

আশিক আহমেদ, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১৮ মে ২০২১, ০৮:২৬ | প্রকাশিত : ১৮ মে ২০২১, ০৮:০২

চাঞ্চল্যকর রুবেল হত্যা মামলায় ডিবির সাবেক সহকারী কমিশনার (এসি) আকরামের কথা মনে আছে? একটি হত্যা মামলা তাকে এনে দেয় দেশব্যাপী পরিচিতি। তিনি হয়েছেন আলোচিত-সমালোচিত। বর্তমানে এসি মো. আকরাম হোসেনের দুইটি কিডনিই অচল হয়ে গেছে। তিনি পাঁচ বছর আগে জেল থেকে বের হয়েছেন। থাকেন রাজধানীর মিরপুর এলাকায়।

১৯৯৮ সালের ২৩ জুলাই ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটির ছাত্র শামীম রেজা রুবেলকে গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) হায়াতুল ইসলাম ঠাকুরের নেতৃত্বে একটি দল ৫৪ ধারায় আটক করে। পরে ডিবি হেফাজতে থাকাবস্থায় রুবেলের মৃত্যু হয়। রুবেলের পরিবারের পক্ষ থেকে পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।

এ মামলায় বিচার শেষে ঢাকার অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালত ২০০২ সালের ১৭ জুন এক রায়ে ১৪ জনকে সাজা দেয়। এর মধ্যে এসি আকরামসহ ১৩ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এছাড়া মুকুলি বেগম নামের এক আসামিকে এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

ওই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন আসামিরা। ২০১১ সালের ৫ মে দেওয়া হাইকোর্টের রায়ে একমাত্র হায়াতুল ইসলাম ঠাকুরের সাজা বহাল রাখা হয়। এসি আকরামসহ যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ১৩ জনকে খালাস দেওয়া হয়। খালাস পাওয়া অন্যরা হলেন- পরিদর্শক আমিনুল ইসলাম, এসআই আমীর আহমেদ তারেক, নুরুল আলম, এএসআই আবদুল করিম, হাবিলদার নুরুজ্জামান, কনস্টেবল রাতুল পারভেজ, মীর ফারুক, মং শে ওয়েন, আবুল কালাম আজাদ, কামরুল হাসান, জাকির হোসেন ও মুকুলি বেগম।

এ রায়ের পর ওই বছরের ৯ মে কারাগার থেকে মুক্তি পান এসি আকরাম। এসি আকরামকে খালাস দেওয়ার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করে। অন্যদিকে সাজার বিরুদ্ধে হায়াতুলও আপিল করেন। এ দুটি আপিলের ওপর শুনানি শেষে তা নিষ্পত্তি করে রায় দেন আপিল বিভাগ। রায়ে হাইকোর্টের সিদ্ধান্ত বহাল রাখা হয়।

পুলিশ সদর দপ্তরের একটি সূত্র জানিয়েছে, এসি আকরাম পদোন্নতিপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। বিভাগীয় পদোন্নতি পেয়ে তিনি সহকারী কমিশনার হয়েছিলেন। তিনি অনেক আগেই চাকরি থেকে অবসরে গেছেন। ফলে তার ব্যাপারে আর কোনও খোঁজখবর নেই কারো কাছে।

হাইকোর্টে এসি আকরামের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন এস এম শাহজাহান। এস এম শাহজাহান ঢাকা টাইমসকে বলেন, এসি আকরামের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছিল আরও পাঁচ বছর আগে। তিনি জেল থেকে বের হওয়ার পরে আর যোগাযোগ করেননি। দুলাল নামে তার এক ভাই আমার সঙ্গে যোগাযোগ করতেন। শুনেছি এসি আকরাম মিরপুর এলাকায় থাকেন। অনেক আগেই চাকরি থেকে অবসরে গেছেন। শুনেছি তার দুইটি কিডনি নষ্ট । তার এখন কী অবস্থা সেটা বলতে পারবো না।

অপর একিিট সূত্র জানায়, কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর বর্তমানে মিরপুরের বাসায় প্রতিবেশী, স্বজনদের সঙ্গে দেখা করে সময় কাটছে এসি আকরামের। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়েন তিনি, রেখেছেন দাড়িও। নিজের চার তলা বাড়ি ‘হোসাইন ভিলার’ দ্বিতীয় তলায় থাকেন তিনি।

এসি আকরাম একবার বলেছিলেন, ‘এখানে জজ মিয়ার মতো নাটক হয়েছে। আমি পেশাগত প্রতিহিংসার শিকার। পত্রিকায় দেখেছি, রুবেল আমার ছেলের বয়সী একটা ছেলে। ওকে আমি চিনতামও না। তারপরও আমাকে জড়ানো হয়েছে।’

তিনি গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, কারাগারে যাওয়ার পর ডায়াবেটিস, কিডনির সমস্যাসহ নানা রোগে আক্রান্ত হন তিনি। পায়ে পানি জমে। হাসপাতালের প্রিজন্স সেলে কাটে তার চার বছর। মুক্তি পেয়েছেন সেখান থেকেই।

ক্ষোভের সঙ্গে তিনি বলেছিলেন, ‘আমার একটি ছেলে মারা গেছে অনেক আগে। আরেক ছেলেকে আমি সরকারি চাকরিতে যেতে নিষেধ করেছি। আমি নিজেও পুলিশের চাকরি ছেড়ে দেই।’

(ঢাকাটাইমস/১৮মে/এএ/ডিএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বিশেষ প্রতিবেদন বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :