নিষেধাজ্ঞা শেষেও ইলিশ মিলছে না তেঁতুলিয়া নদীতে

কৃষ্ণ কর্মকার, বাউফল (পটুয়াখালী)
| আপডেট : ১৯ মে ২০২১, ১৪:৩০ | প্রকাশিত : ১৯ মে ২০২১, ১৪:০৯

মার্চ-এপ্রিল দুই মাস ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞার পর পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার তেঁতুলিয়া ও লোহালিয়া নদীতে ইলিশের দেখা মিলছে না। নদীতে দিনরাত জাল ফেলেও ইলিশ না পাওয়ায় শূন্য হাতে ফিরছে জেলেরা। ইলিশের এমন আকালের কারণে প্রায় দশ হাজার জেলে পরিবারের দিন কাটছে অনিশ্চয়তায়।

গত মৌসুমেও অনেক পরিবার পর্যাপ্ত মাছ না পেয়ে সর্বস্ব হারিয়ে পেশা বদল করে অন্য পেশায়ও যোগ দিয়েছেন।

বাউফল মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা নিবন্ধিত সাড়ে পাঁচ হাজার জেলে রয়েছে। কিন্তু বেসরকারি হিসেব অনুযায়ী উপজেলায় জেলে রয়েছে প্রায় দশ হাজারের বেশি। এসকল জেলে পরিবারের আয়ের প্রধান উৎস ইলিশ শিকার করা। চলতি মাসের প্রথম দিন থেকে জেলেরা নদীতে ইলিশ শিকারে নামলেও শূন্য হাতে ফিরছেন তারা।

চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের চর মিয়াজান গ্রামের জেলে মাহবুব হাওলাদার বলেন, ‘এ বছর অনেক ইলিশ ধরা পড়বে বলে অধিকাংশ জেলে পরিবার দাদনদার, মহাজন, এনজিও এবং ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে এমনকি জমিজমা বন্ধক রেখে জাল-নৌকা প্রস্তুত করেছেন। জেলেরা আশায় বুক বেঁধে রয়েছে চলতি মৌসুমে গত বছরের লোকসান কাটিয়ে উঠতে পারবে। হাসি ফুটবে পরিবার পরিজনদের মুখে। কিন্তু এখন পর্যন্ত তেমন ইলিশের দেখা মিলছে না। কিভাবে মহাজন বা দাদনদারদের দেনা পরিশোধ করে পরিবার পরিজন নিয়ে বেঁচে থাকব সে চিন্তাই করছি এখন।’

কালাইয়া ইউনিয়নের শৌলা গ্রামের জেলে শাহজাহার মুন্সি বলেন, ‘বছরের একটা ঈদ গেল। ছেলে মেয়েদের একটা পোশাক কিনে দিতে পারি নাই। ওর মা পুরনো জামা কাপড় ধুয়ে দিলে আমি লন্ড্রি থেকে ইস্ত্রি করে এনে দিয়েছি। ঈদের দিন ফিন্নি খাওয়ার জন্য সেমাই চিনি ও দুধ বাকিতে কিনেছি। দোকানিকে বলেছি, ইলিশ পেলেই টাকা দিয়ে দেব। নদীতে মাছ না পেলে কিভাবে সংসার চলবে সে চিন্তাই করি।’

উপজেলার কালাইয়া বন্দরের লঞ্চঘাট এলাকার একাধিক মৎস্য আড়ত মালিকরা জানান, এবার ইলিশের দেখা পাওয়া যাচ্ছে না। এসময় জেলেরা দিনে ২/৩ বার ট্রলারে ইলিশ নিয়ে আড়তে আসত। কিন্তু এবার সপ্তাহেও একবার ইলিশের ট্রলার আসছে না।

অন্যদিকে উপজেলার প্রবীণ জেলে চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের বাসিন্দা বাদশা মাঝি বলেন, এই তেঁতুলিয়া নদীতে এক সময় অনেক ইলিশ মাছ পাওয়া যেত। তখন নদী অনেক গভীর ছিল। এখন নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে ডুব চরের সৃষ্টি হওয়ায় নদীতে মাছ আসছে না।

এ বিষয়ে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মাহবুবুর রহমান জানান, বৃষ্টির পরিমাণ বেশি হলেই নদীতে মাছ দেখা দেবে। আশা করা হচ্ছে, বিগত বছরের চেয়ে এ বছর জেলেদের জালে বেশি পরিমাণ ইলিশ ধরা পড়বে।

(ঢাকাটাইমস/১৯মে/পিএল)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :