কোথায় আছেন ড. ইউনূস?

প্রকাশ | ২০ মে ২০২১, ১০:৪৫ | আপডেট: ২০ মে ২০২১, ১১:৪৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা এবং নোবেলজয়ী প্রথম বাংলাদেশি ড. মোহাম্মদ ইউনূস। দেশের এই করোনাকালে তিনি এখন কোথায় আছেন, কী করছেন সে বিষয়ে বাংলাদেশের মানুষ খুব কমই জানতে পারছে। অধিকাংশ সময় লোকচক্ষুর অন্তরালেই থাকছেন দেশের বিশ্বখ্যাত মানুষটি।

সাম্প্রতিক সময়ে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরউল্লাহ দেশে চলমান বৈশ্বিক মহামারি মোকাবিলায় টিকা পাওয়ার কূটনীতিতে ড. ইউনূসকে কাজে লাগানোর জন্য প্রধানমন্ত্রীকে এক খোলা চিঠিতে পরামর্শ দিয়েছিলেন। তখন অনেকে তাকিয়ে ছিলেন ড. ইউনূস এ নিয়ে কী প্রতিক্রিয়া দেখান তা জানতে। কিন্তু সে রকম কোনো প্রতিক্রিয়া তার কিংবা তার প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে দেখা যায়নি।

গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা, নোবেল বিজয়সহ নানা কাজের কারণে ড. ইউনূস এমনিতেই দেশ-বিদেশে বিপুল পরিচিত একটি নাম। সেটি দেশে আরও বেশি সামনে আসে তার নোবেল জয়ের পর রাজনীতিতে আসার ঘোষণায়। দেশে অস্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ২০০৭ সালের এক-এগারোর পর সেনা-সমর্থিত ফখরুদ্দিন সরকারের সময় তিনি জানিয়েছিলেন, নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করতে চান তিনি। এ জন্য তিনি দেশবাসীর কাছ মতামত আহ্বান করেছিলেন। তার এ ঘোষণায় বিভিন্ন মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়৷ তা দেখে রাজনীতিতে আসার ঘোষণা বাতিল করেন তিনি।

পরবর্তীকালে পদ্মা সেতুতে বিদেশি সাহায্য বন্ধে তার ভূমিকা নিয়েও সন্দেহ প্রশ্ন তুলেছিল সরকার। গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি পদে থাকা নিয়ে আদালতে মামলার ঘটনা সারা দেশে দীর্ঘদিন আলোচনায় রাখে ড. ইউনূসকে। সর্বশেষ গ্রামীণ টেলিকমের সাবেক ও বর্তমান কর্মীদের পাওনা নিয়ে মামলায় প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ড. ইউনূসকে দাঁড়াতে হয় আদালতের কাঠগড়ায়।

দেশে-বিদেশে আলোচিত এই মানুষটি মানবজাতির বর্তমান ক্রান্তিকালে একদম নিশ্চুপ। করোনায় জর্জরিত দেশ। প্রতিদিন মানুষ মরছে, আক্রান্ত হচ্ছে হাজারো মানুষ। কিন্তু বাংলাদেশের একমাত্র নোবেলজয়ীর কোনো বক্তব্য জানতে পারছে না দেশের মানুষ।  

এদিকে দুদিন আগে দেশের একজন নারী সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের সচিবালয়ে সরকারি নথি সরানোর অভিযোগ ও তাকে মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠানোর ঘটনায় দেশের সুশীল সমাজের একটি অংশ, বিভিন্ন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, সংগঠন প্রতিবাদ জানাচ্ছে। তারা এর ন্যায়বিচার দাবি করে মানববন্ধন করছেন, বিবৃতি দিচ্ছেন। কিন্তু সেখানেও ড. ইউনূস বা তার প্রতিষ্ঠান থেকে এ বিষয়ে কিছু বলা হয়নি এখনো।

এ বিষয়ে গতকাল ড. ইউনূসের বক্তব্য জানতে চেষ্টা করে ঢাকা টাইমস। কিন্তু তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তার প্রতিষ্ঠানের কয়েকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারাও কোনো তথ্য দিতে সক্ষম হননি। 

অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৯৪০ সালের ২৮ জুন জন্মগ্রহণ করেন। কর্মজীবনের শুরুতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের একজন শিক্ষক ছিলেন তিনি। চট্টগ্রাম থেকেই গড়ে তোলেন গ্রামীণ ব্যাংক। এই ব্যাংকের মাধ্যমে মানুষকে ঋণ দিয়ে স্বাবলম্বী করে তোলার চেষ্টা করেন তিনি। তার এই অবদানের স্বীকৃতি মেলে ২০০৬ সালে, যৌথভাবে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন ড. ইউনূস এবং তার প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংক। এরপর বিশ্ব খাদ্য পুরস্কারসহ আরও শতাধিক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কার লাভ করেন এই অর্থনীতিবিদ।

(ঢাকাটাইমস/২০মে/কারই/মোআ)