বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানের নামে ইকোপার্ক ও তোরণ নির্মাণ হোক

প্রকাশ | ২৩ মে ২০২১, ১৭:৪৪

মো. শাহিন রেজা

মহান মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বের জন্য সর্বোচ্চ খেতাব প্রাপ্ত বীরশ্রেষ্ঠ  হামিদুর রহমানের গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার খোর্দ্দ খালিশপুর গ্রামে। ১৯৫৩ সালে তিনি জন্ম গ্রহণ করেন। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হলে  তিনি মাতৃভূমির টানে যুদ্ধে যোগ দেন এবং ২৮ অক্টোবর, ১৯৭১ সালে মৌলভীবাজারের ভারত সীমান্তবর্তী এলাকায়  তিনি শহীদ হন। তখন তাঁর লাশটি ভারতে সমাহিত করা হলেও ৩৬ বছর পর তাঁর দেহাবশেষ দেশে ফিরিয়ে আনা হয়।

হামিদুর রহমানের গ্রামটি সবুজ শ্যামলে ঢাকা একটি গ্রাম। ২০০০ সালে তাঁর নামে গ্রামে একটি কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয় যা পরবর্তীতে সরকার কলেজটি সরকারি করণ করে। কলেজ ক্যাম্পাসে রয়েছে বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান গ্রন্থগার ও স্মৃতি জাদুঘর। কলেজের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে কপোতাক্ষ নদ। নদের পাশে ও কলেজের সামনের অংশে রয়েছে ৩৭ বিঘা খাস জমি। এখানে আছে একটি কুঠি বাড়ি যা নীলকুঠি নামে পরিচিত। কুঠি বাড়ির চার পাশে রয়েছে শত বছরের বড় বড় আম গাছ। এখানে ছিলো গাড়ি রাখা ও বৈকালীন অবকাশ যাপনের যায়গা। এগুলো আঠারো শতকে নির্মিত হয়েছিল। এ অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি এখানে একটি ইকোপার্ক নির্মাণের।

ইকোপার্ক হচ্ছে এক ধরনের প্রাকৃতিক বাগান যা কোনো প্রাকৃতিক পরিবেশের মাঝে তৈরি করা হয় মানুষের বিনোদনের জন্য। প্রকৃতি প্রেমি মানুষদের কাছে খুব বেশি আকর্ষনের যায়গা এটি। ইকোপার্ক তৈরির মূল উদ্দেশ্য থাকে মানুষকে প্রকৃতির কাছাকাছি নিয়ে আসা যার মাধ্যমে প্রকৃতি সম্পর্কে জানা যায় এবং এখানে বিলুপ্ত প্রায় প্রাণীসমূহ সংরক্ষণ করা হয়। ফলে দেশ বিদেশের অনেক মানুষ এখানে বেড়াতে আসে। হামিদুর রহমান কলেজের পাশে ইকোপার্ক তৈরি হলে দেশ বিদেশের অনেক মানুষের সমাগম হবে ফলে সহজেই হামিদুর রহমান, স্বাধীনতা যুদ্ধ ও এ অঞ্চলের ইতিহাস ঐতিহ্য সম্পর্কে মানুষ জানতে পারে। এছাড়াও খালিশপুরে প্রবেশ মুখে একটি তোরণ নির্মাণ করতে হবে যার মাধ্যমে বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানের বীরত্ব গাঁথা ইতিহাস মানুষের মাঝে তুলে ধরা যাবে। খালিশপুরে উপর দিয়ে চলে গেছে যশোর-চুয়াডাঙ্গা মহাসড়ক। তোরণ নির্মাণ হলে এ অঞ্চলের যারা আসবে তাঁরা হামিদুর রহমান সম্পর্কে জানতে পারবে।

হামিদুর রহমানের নামে কলেজ ও স্মৃতি জাদুঘর ছাড়াও গ্রামে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ঝিনাইদহ শহরে একটি স্টেডিয়াম রয়েছে। এই স্টেডিয়ামকে আন্তর্জাতিক মানের স্টেডিয়ামে রূপান্তরিত করতে পারে সরকার। সরকার মহেশপুরের দত্তনগরে দেশের বৃহত্তর কৃষি খামারে তাঁর নামে একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করে হামিদুর রহমানের বীরত্বের প্রতি সম্মান দেখাতে পারে।

লেখক: নাগরিক সাংবাদিক

ঢাকাটাইমস/২৩মে/এসকেএস