ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’: লণ্ডভণ্ড সেন্টমার্টিন জেটি

কক্সবাজার প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৬ মে ২০২১, ২১:৩৭ | প্রকাশিত : ২৬ মে ২০২১, ২১:১৯

ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ বুধবার সকাল থেকে ভারতের উপকূল অতিক্রম শুরু করেছে। এর প্রভাব থেকে বাংলাদেশ এখন সম্পূর্ণ মুক্ত। তবে ‘ইয়াস’ এর প্রভাবে অতি জোয়ার বা জলোচ্ছ্বাসে কক্সবাজার জেলার বেশকটি উপজেলার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে পানির উচ্চতা অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পাওয়ায় বুধবার কক্সবাজার জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। উপড়ে পড়েছে গাছপালা, বিধ্বস্ত হয়েছে বহু ঘরবাড়ি।

জেলার সদর, কুতুবদিয়া, মহেশখালী, টেকনাফ ও সেন্টমার্টিন দ্বীপের অর্ধশতাধিক গ্রামে ঢুকে পড়েছে জোয়ারের পানি। কক্সবাজার শহরের অন্তত তিনটি এলাকায় বেড়িবাঁধ উপচে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করেছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে হাজারো মানুষ। কক্সবাজার সদরের ১নং ওয়ার্ডে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে হাজারো পরিবার।

কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কেও আচড়ে পড়ছে জোয়ারের পানি। দেশের একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিনে প্রবল জোয়ারের পানিতে উপড়ে যাচ্ছে গাছপালা। ভাঙন ধরেছে জেটির পল্টুনে ও রাস্তাঘাটে। তবে মানুষের জানমাল রক্ষায় সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় প্রশাসন।

সেন্টমার্টিন দ্বীপ ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান প্রকাশ হাবিব মেম্বার জানান, 'কয়েকদিন ধরে বাতাসের গতিবেগ বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে জোয়ারের পানির তোড়ে দ্বীপের একমাত্র জেটির আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।'

তিনি জানান, কয়েকদিন ধরে গুঁড়ি গুঁড়ি বর্ষণ ও দমকা হাওয়া বয়ে গেছে দ্বীপে।

টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপে বেড়িবাঁধের ব্লকে ধস নেমেছে। এদিকে জোয়ারের পানিতে মাতারবাড়ির ইউনিয়নের ৪ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের বিভিন্ন অংশ ভেঙে তচনছ হয়ে গেছে। লোকালয়ে ঢুকে পড়েছে পানি। ইতোমধ্যে ৪০টি ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে। উপড়ে গেছে গাছপালা।

স্থানীয় প্রশাসনের তরফ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনকে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। রাতে জোয়ারে পানির উচ্চতা আবারও বৃদ্ধি পেলে এবং তা লোকালয়ে ঢুকে পড়লে তাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হবে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।

অন্যদিকে কুতুবদিয়ার উত্তরধুরুং, আলী আকবরডেইল ও কৈয়ারবিল ইউনিয়নে অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে ২০টির বেশি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে হাজারো মানুষ। এছাড়া শাহপরীর দ্বীপে জোয়ারের পানি ও ঝড়ো বাতাসে বেশকিছু ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বেড়িবাঁধ।

কুতুবদিয়া উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল বশর চৌধুরী জানিয়েছেন, প্রতিবার ঘূর্ণিঝড় হলে দ্বীপে অবশ্যই আঘাত হানে। এবারেও ব্যতিক্রম হয়নি। বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে এবং জোয়ারের অতিরিক্ত পানি লোকালয়ে ডুকে অনেক ঘরবাড়ি পানিবান্দ হয়ে গেছে।

এদিকে কক্সবাজার জেলার সবচেয়ে ক্ষতি হয়েছে সেন্টমার্টিনের। তাণ্ডব চালিয়ে যাচ্ছে রাক্ষুসে সাগর। ভেঙে যাচ্ছে জেটির পল্টুন।

জেলা প্রশাসক মামুনুর রশীদ জানান, কক্সবাজার উপকূলের ঝূঁকিতে থাকা লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু হয়েছিল দু’দিন আগেই। প্রস্তুত রাখা হয়েছিল আশ্রয়কেন্দ্র এবং স্বেচ্ছাসেবকদের। মানুষের জানমাল রক্ষায় আমাদের সব ধরণের প্রস্তুতি রয়েছে।

সবশেষ ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ এর ঝুঁকি থেকে কক্সবাজার মুক্ত বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ মো. আবদুর রহমান।

তিনি বলেন, কক্সবাজারে ৩নং সতর্ক সংকেত বহাল রয়েছে। সাগরের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ৩ থেকে ৬ ফুট পর্যন্ত বাড়তে পারে।

(ঢাকাটাইমস/২৬মে/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :