কোটি টাকার ওয়াকওয়ে সন্ধ্যার পর ‘ভুতুড়ে গলি’

প্রকাশ | ২৮ মে ২০২১, ১৬:৩৭

সাগর হোসেন তামিম, মাদারীপুর

মাদারীপুরের আড়িয়াল খাঁ নদের পাড় ঘেঁষে চার বছর আগে নির্মাণ করা হয়েছে ওয়াকওয়ে। কিন্তু বিদ্যুৎ সংযোগ না দেয়ায় সন্ধ্যা হলেই পুরো এলাকা পরিণত হয় ভুতুড়ে গলিতে। এ কারণে এতদিনেও কাজে আসছে না কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ওয়াকওয়ে। নষ্ট হচ্ছে বৈদ্যুতিক সরঞ্জামগুলো।

বিআইডব্লিউটিএ সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুরের পূর্ব রাস্তি থেকে পাঁচখোলা ইউনিয়নের মহিষেরচর পর্যন্ত আড়িয়াল খাঁ নদের পাড় ঘেঁষে ছয় কোটি ৬০ লাখ ৬০ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয় ৩ দশমিক ৮ কিলোমিটার ওয়াকওয়ে। এটি দৃষ্টিনন্দন করতে নির্মাণ করা হয় বেঞ্চসহ বিভিন্ন স্থাপনা। পুরো ওয়াকওয়ে জুড়ে বসানো হয় বৈদ্যুতিক খুঁটি ও লাইট। তবে বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় সন্ধ্যা হলেই ওয়াকওয়েতে নেমে আসে আতঙ্ক। ছিনতাইয়ের পাশাপাশি চুরি হচ্ছে বৈদ্যুতিক সরঞ্জামও।

স্থানীয় আমীর হোসেন জানান, বিদ্যুৎ না থাকায় সন্ধ্যার পরে ওয়াকওয়েতে মানুষ চলাচল করতে ভয় পায়। অন্ধকারের সুযোগে এখানে চুরি-ছিনতাই বাড়ছে। দ্রুত বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ার পাশাপাশি ঝোপঝাড় পরিষ্কার করলে মানুষ নিরাপদে ওয়াকওয়ে ব্যবহার করতে পারবে, সৌন্দর্যও বাড়বে।

প্রতিদিন সকালে শত শত মানুষ এখান দিয়ে হাঁটাহাঁটি করেন। তবে পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার ব্যবস্থা না থাকায় প্রায়ই দুর্ভোগ পোহাতে হয় তাদের।

শহরের আমিরাবাদ এলাকার ইব্রাহিম মিয়া বলেন, ‘আমরা প্রায় সাত-আটজন প্রতিদিন সকালে এই ওয়াকওয়েতে হাঁটি। তবে মাঝে মাঝেই ঝোপঝাড় আর গাছপালার ডাল পড়ে রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। এ কারণে আমরা প্রতিনিয়ত হাঁটতে পারি না। কর্তৃপক্ষ এই ওয়াকওয়ে রক্ষণাবেক্ষণ করার জন্যে একজন লোক নিয়োগ দিলে আমাদের হাঁটার প্রবলেম হয় না। বিষয়টি বিশেষ নজর দেয়া উচিত।’

মাদারীপুর উন্নয়ন-সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি মাসুদ পারভেজ জানান, ‘সরকারকোটি টাকা খরব করে ওয়াকওয়ে নির্মাণ করেছে। তবে সেটা তদারকির অভাবে মানুষ ব্যবহার করতে পারছে না। এটা খুবই দুঃখজনক। আমরা আশা করছি, শিগগির এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

বিআইডব্লিউটিএর বরিশাল ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন-উর-রশীদ বলেন, ওয়াকওয়ে নির্মাণ শেষ হওয়ার পর আমরা জেলা প্রশাসন ও মাদারীপুর পৌরসভাকে জানিয়েছি। বিদ্যুৎ সংযোগ তারা দেবে, রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বও তাদের।

মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন বলেন, ‘বিআইডব্লিউটিএ ও পৌর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত ওয়াকওয়েতে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হবে। এছাড়া দৃষ্টিনন্দন এ ওয়াকওয়ের সৌন্দর্য রক্ষায় কাজ চলবে।’

(ঢাকাটাইমস/২৮মে/কেএম)