চাঁদপুরের আড়তে হাতিয়া-ভোলার ইলিশ সয়লাব

শওকত আলী, চাঁদপুর
 | প্রকাশিত : ২৯ মে ২০২১, ২১:৫৪

চাঁদপুর নৌ-সীমানার পদ্মা-মেঘনায় ইলিশের এখন ভর মৌসুম হলেও ইলিশের একেবারেই দেখা নেই। চাঁদপুর মৎস্য আড়ৎ এখন দক্ষিণ অঞ্চলীয় হাতিয়া-ভোলার ইলিশের দখলে। এখানে হাতিয়া ও ভোলার ইলিশের কারণে চাঁদপুর মাছঘাট সয়লাব হয়ে গেছে। এখানে বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতিদিন ৬০০ থেকে ৭০০ মণ ইলিশ আমদানি হচ্ছে। এতে করে মৎস্য ব্যবসায়ীদের মধ্যে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে। তারা প্রচুর ইলিশ আমদানি হওয়ায় তাদের কমিশন পাচ্ছে বেশি। এখানকার শ্রমিকের মনের মধ্যে ও আনন্দ দেখা গেলেও চাঁদপুরের হাজার-হাজার জেলেদের মধ্যে চলছে হাহাকার। তারা পদ্মা-মেঘনায় ইলিশ না থাকায় বিগত বছরের দেনার ভারে দিশেহারা। তারা পরিবার পরিজন নিয়ে দিন কাটাচ্ছেন, কষ্টের মধ্যদিয়ে।

অপরদিকে চাঁদপুরে প্রচুর আমদানিকৃত ইলিশ চাঁদপুর জেলার চাহিদা পূরণ করে দেশের বিভিন্ন জেলায় পেকিংয় করে পাঠাতে দেখা যাচ্ছে। এ ছাড়া চোরাইপথে পাশের দেশে পাচার হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।

ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে জাটকা রক্ষায় মার্চ-এপ্রিল দুই মাস ছিল চাঁদপুরে পদ্মা-মেঘনা নদীসহ দেশে ৫টি অভয়াশ্রমে মাছ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল। টানা দুই মাস সেই নিষেধাজ্ঞা শেষে ১ মে থেকে আবার শুরু হয় জেলেদের মাছ ধরা। প্রথম পর্যায়ে জেলেরা পদ্মা-মেঘনা নদীতে কিছু মাছ পেলেও এখন মাছ পাচ্ছে না। গত প্রায় এক মাস হতে চলল, চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনায় ইলিশের দেখা মিলছে না। ইলিশের দেখা না পাওয়ায় স্থানীয় জেলেরা পদ্মা-মেঘনা নদীতে ইলিশ শিকারে নেমে হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরছে। নিষেধাজ্ঞা শেষে যেখানে জালভর্তি ইলিশ মাছ পেয়ে জেলেদের মুখে হাসির ঝিলিক লেগে থাকার কথা, সেখানে অধিকাংশ জেলের মুখ এখন মলিন।

এদিকে ইলিশের মৌসুমের শুরুতেই নৌকা ও জাল কেনা এবং মেরামতের জন্য মহাজনের কাছ থেকে দাদনসহ স্থানীয় পর্যায়ে ঋণ করেছেন বলে জানান জেলেরা। মৌসুম এলে চার-পাঁচ মাস ইলিশ শিকার করবে। সেই ইলিশ মাছ বিক্রির আয় দিয়ে বিড়ত বছরের দেনা দাদন ও কিস্তির মাধ্যমে ঋণ শোধ করবে তারা। বাকি টাকায় সংসার চলবে। কিন্তু আশানুরূপ মাছ না পাওয়ায় কীভাবে ঋণ পরিশোধ করবেন, এই চিন্তায় দিশেহারা হয়ে দিন কাটছে জেলেদের।

চাঁদপুর জেলার মৎস্যজীবীদের নেতা আ. মালেক দেওয়ান জানান, এবার জাটকা অভিযানের সময় প্রচুর জাটকা ইলিশে পোনা মাছ নিধন করা হয়েছে, যা বিগত বছরগুলোতে এ জাটকা ধরার মহাৎসব দেখা যায়নি। এখন সমুদ্রে ৬৫ দিনের অভিযান শেষ হয়েছে। এখন কার এ সময় উজানের নদীতে মাছ পাওয়ার কথা, কিন্তু এই নদীতে ইলিশ প্রায়ই শূন্যই বলা চলে, নদীতে ইলিশ নেই। নদীতে মাছ থাকলে তো জেলেরা পাবে সব মাছ অভিযানের সময় ধরে ফেলছে অসাধু জেলেরা।

এদিকে স্থানীয় নদীতে ইলিশের আকাল বজায় থাকলেও হঠাৎ করে চাঁদপুর মাছ ঘাটে একদিনেই ৫০০ থেকে ৭০০ মন ইলিশ ঘাটে আসছে। এসব ইলিশ হাতিয়া ও ভোলা অঞ্চলের মেঘনা নদীর বলে জানিয়েছেন চাঁদপুর মৎস্য বণিক সমবায় সমিতি পরিচালনা কমিটির সভাপতি আব্দুল বারী জমাদার মানিক।

তিনি বলেন, কক্সবাজার চট্টগ্রাম সমুদ্র এলাকায় প্রজনন মৌসুমে সামুদ্রিক মাছ রক্ষায় গভীর সমুদ্রে মাছ শিকারে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা কয়েকদিন হলো শেষ হয়েছে। নদীতে তো এখন অভিযান নেই। সমুদ্রের মাছ এখন উজানের নদীতে চলে এসেছে। যার ফলে হাতিয়া ও ভোলা উপকূলীয় অঞ্চলের জেলেরা সেই ইলিশ পাওয়ায় আমাদের আড়তগুলোতে সেই ইলিশ কিছু পরিমাণে এসে আড়ৎ এখন ইলিশে ভরপুর হয়ে গেছে।

(ঢাকাটাইমস/২৯মে/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

ফেসবুক আইডি ক্লোন করে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ, যুবক গ্রেপ্তার

ফরিদপুর প্রেসক্লাবের নবনির্বাচিত নেতৃবৃন্দের সঙ্গে পুলিশ সুপারের মতবিনিময়

পতেঙ্গায় ফিশিং বোটের ইঞ্জিন বিস্ফোরণে ৪ জন দগ্ধ

চট্টগ্রামে ঈদকে সামনে রেখে জালনোট চক্রের ৩ সদস্য গ্রেপ্তার

বরিশালে নামাজের সময় মসজিদের এসি বিস্ফোরণ

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দ্রুতগতির লেনে যাত্রী নামানোর অপরাধে ৩৩ যানবাহনকে মামলা 

বরগুনা প্রেসক্লাব দখলের মামলায় ৭ জন কারাগারে  

পর্যটকদের আকৃষ্ট করছে তাহিরপুরের শহীদ সিরাজ লেক

ঝিনাইদহে ভর্তুকি মূল্যে টিসিবির পণ্য বিক্রি শুরু

ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কে বেতন বৃদ্ধির দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :