নাটোরে ঐতিহ্যবাহী বেতশিল্প বিলুপ্তির পথে

প্রকাশ | ৩০ মে ২০২১, ১২:২১ | আপডেট: ৩০ মে ২০২১, ১২:২৬

সাইফুল ইসলাম, নাটোর

নাটোরের নলডাঙ্গা থেকে ক্রমান্বয়ে হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী বেতশিল্প। এক সময় গ্রামীণ জনপদের মানুষ গৃহস্থালি, কৃষি ও ব্যবসা ক্ষেত্রে বেত-বাঁশের তৈরি সরঞ্জামাদি ব্যবহার করত। কিন্তু এখন জেলায় বেতের তৈরি পণ্যের আর কদর নেই বললেই চলে। ফলে বিলুপ্তির পথে শিল্পটি।

সরেজমিনে দেখা গেছে, প্লাস্টিক সামগ্রীর কদর বেড়ে যাওয়ায় এই কুটির শিল্পের চাহিদা এখন আর নেই। বাজারগুলো দখল করেছে প্লাস্টিক ও অ্যালুমিনিয়াম। দেখা মিলে না আর বাঁশঝাড়। প্লাস্টিক পণ্য টেকসই ও স্বল্পমূল্যে পাওয়ায় সাধারণ মানুষের চোখ প্লাস্টিক সামগ্রীর ওপর। এছাড়াও দুষ্প্রাপ্য হয়ে পড়েছে এ শিল্পের কাঁচামাল বাঁশ ও বেত।

এক সময় দেশের বিস্তীর্ণ জনপদে বাঁশ-বেত দিয়ে তৈরি হতো গৃহস্থালি ও সৌখিন পণ্যসামগ্রী। ঘরের কাছের ঝাড় থেকে তরতাজা বাঁশ-বেত কেটে গৃহিণীরা তৈরি করতেন হরেক রকমের পণ্য। এসব বিক্রি করেই চলত তাদের সংসার। তবে এখন গ্রামীণ উৎসব ও মেলাগুলোতে বাঁশ ও বেতজাত শিল্পীদের তৈরি খোল, চাটাই, খালুই, ধামা, টোনা, পাল্লা, মোড়া, বুক সেল্ফ কদাচিৎ চোখে পড়ে। যতই দিন যাচ্ছে ততই কমে যাচ্ছে এই হস্তশিল্পের চাহিদা। মূল্যবৃদ্ধি, বাঁশ-বেতের দুষ্প্রাপ্যতা আর অন্যদিকে প্লাস্টিক, সিলভার ও মেলামাইন জাতীয় হালকা টেকসই সামগ্রী নাগরিক জীবনে গ্রামীণ হস্তশিল্পের পণ্যকে হটিয়ে দিয়েছে।

উপজেলার মাধনগরে বেত আসবাব বিক্রি করতে আসা দুলাল দাস বলেন, ২০ বছর থেকে আমি এই কাজে জড়িত। বেতশিল্পের দুর্দিনেও হাতে গোনা কিছু সংখ্যক পরিবার এ শিল্পকে আঁকড়ে ধরে আছেন। অনেকে এ পেশা বদলে অন্য পেশায় গেলেও পূর্ব পুরুষের হাতেখড়ি পেশাকে কিছুতেই ছাড়তে পারেননি তারা। কিছু পণ্য গ্রাম-গঞ্জে নিয়ে ঘুরাফেরা করলে কিছু সৌখিন মানুষ তাদের পণ্য কেনেন। বেলা শেষে যা বিক্রি হয় তা দিয়ে তরি-তরকারি কিনে বাড়ি ফেরেন তারা।

(ঢাকাটাইমস/৩০মে/পিএল)