লাশ গুমের অভিযোগে মামলা: সাত মাস পর গৃহবধূ জীবিত উদ্ধার

প্রকাশ | ৩০ মে ২০২১, ২২:২৮ | আপডেট: ৩০ মে ২০২১, ২২:৩৫

নিজস্ব প্রতিবেদক, লক্ষ্মীপুর

লক্ষ্মীপুরে রায়পুরে পশ্চিম চরপাতা এলাকার গৃহবধূ ইয়াসমিন আক্তার বিথিকে অপহরণ ও লাশ গুমের অভিযোগে শ্বশুর বাড়ির লোকজনকে আসামি করে আদালতে মামলার সাত মাস পর ওই গৃহবধূকে জীবিত উদ্ধার করেছে পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

রবিবার সকালে ঢাকা সাভারের নবীনগর এলাকা থেকে তাকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। পরে বিকালে লক্ষ্মীপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জুয়েল দেব-এর আদালতে হাজির করা হয়। পরে আদালতে ওই গৃহবধূ ১৬৪ ধারা জবানবন্দি প্রদান করেছেন বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা  উপ-পরিদর্শক মো. ফরিদ উদ্দিন।

তিনি জানান, ইয়াসমিন আক্তার বিথিকে অপহরণ ও তাকে হত্যা করে লাশ গুম করা হয়নি। সাত মাস পর তাকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। তদন্তের পর আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।

অভিযোগ রয়েছে, গৃহবধূ বিথির স্বামী আবদুর রব চাকরি সুবাধে ওমানে থাকেন। এ সুযোগে অন্য পুরুষের সাথে পরকীয়া জড়িয়ে পড়েন। এসব বিষয়ে একাধিকবার সামাজিকভাবে দুই পরিবারের মধ্যে শালিস বৈঠকও হয়। এর জের ধরে ২০২০ সালের ২০ অক্টোবর বিকালে শ্বশুরবাড়ি থেকে ইয়াসমিন আক্তার বিথি কাউকে কিছু না বলে স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা পয়সা নিয়ে আত্মগোপনে চলে যায়। এরপরের দিন রায়পুর থানায় গৃহবধূর শ্বশুর আবদুল কাদের একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।

ঘটনার এক মাস পরে ১৯ নভেম্বর ইয়াসমিন আক্তার বিথির বাবা বাবুল মিয়া বাদী হয়ে লক্ষ্মীপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (রায়পুর-১) আদালতে অপহরণ, লাশ গুমের অভিযোগে একটি মামলা করেন। মামলায় আসামি করা হয় শ্বশুর আবদুল কাদের, শাশুড়ি খুকি বেগম, আবদুল কাদেরের মেয়ের জামাতা আক্তার হোসেন ও বিনু আক্তারসহ চারজনকে। পরে আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) নোয়াখালীকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেন।

তবে অভিযোগ রয়েছে, শ্বশুরবাড়ির লোকজনকে ফাঁসাতে ইয়াসমিন আক্তার বিথির বাবা বাবুল মিয়া ও তার মা হাসিনা আক্তার মিলে এ অপহরণ ও লাশগুমের নাটক সাজিয়েছে। দীর্ঘ সাত মাস নানা হয়রানির শিকার হতে হয়েছে। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা ও এ মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান ক্ষতিগ্রস্তরা।

এদিকে আদালত প্রাঙ্গণে কান্নাজড়িত কন্ঠে আবদুর কাদের বলেন, কি অপরাধে অপহরণ করে বিথিকে লাশ গুমের মামলা দেয়া হয়েছে। এ মামলার কারণে দীর্ঘ সাত মাস ঘরে ঘুমাতে পারেনি। অর্থ ও সম্মান সব গেল। এ ঘটনার পেছনে বিথির বাবা বাবুল, মা হাসিনা ও জেঠা সৈয়দ আহমদের ইন্ধনে এ মিথ্যা নাটক সাজিয়ে আমাদের পরিবারের বিরুদ্ধে এ মামলা দেয়া হয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তিনি।

(ঢাকাটাইমস/৩০মে/এলএ)