মদনপুরের পরতে পরতে ইয়াসের ক্ষত

ইকরামুল আলম, ভোলা
| আপডেট : ৩১ মে ২০২১, ১৫:২১ | প্রকাশিত : ৩১ মে ২০২১, ১৫:০৭

ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে ভোলার যে কয়টি চরে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে তার মধ্যে দৌলতখান উপজেলার মদনপুর একটি। মেঘনা নদী বেষ্টিত এ ইউনিয়নের পরতে পরতে চোখে পড়ছে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে হওয়া ক্ষয়ক্ষতি। ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে এখানকার কৃষি, মৎস্য আহরণ ও পশু পালন করে জীবিকা নির্বাহ করা মাঝের চর নামে পরিচিত এ ইউনিয়নের প্রায় ২০ হাজার বাসিন্দা কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

এখানকার কারো ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে, কারো বা গবাদিপশু জোয়ারে ভেসে গেছে। আবার অনেকের মাছের ঘেরে জোয়ারে পানি ঢুকে লাখ লাখ টাকার মাছ চলে গেছে। জোয়ারের তোরে এই ইউনিয়নের সারে চার কিলোমিটার হেরিং বোন ও ১৫ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা ভেঙে বড় বড় গর্তে পরিণত হয়েছে। কোনো কোনো রাস্তার অস্তিত্বও খুঁজে পাওয়া যাবে না।

ইউনিয়নটি ঘুরে দেখা গেছে, জোয়ারের পানিতে ইউনিয়নে থাকা ১৪টি গুচ্ছগ্রামের প্রায় ৮৪০টি ঘরের ভিটার মাটি চলে গেছে। কারো ঘর ঝড়ে পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়েছে। ২০টির বেশি মাছের ঘের জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে। অনেকের গরু-মহিষ জোয়ারের পানিতে ভেসে গেছে। সাগরের অতিরিক্ত লোনা পানি খেয়ে গরু, ছাগল ও মহিষ অসুস্থ হয়ে মারা যাচ্ছে। জোয়ারে প্রতিটি রাস্তার মাটি ধুয়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। এই ইউনিয়নটি মেঘনা নদীর মাঝে অবস্থান ও যোগাযোগ ব্যবস্থা খারাপ হওয়ায় অনেকের নজরেই পড়েনি এখানকার ক্ষয়ক্ষতির বাস্তব চিত্র।

ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের চরমুন্সি গ্রামের গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দা সীমা বেগম, ইয়ানুর বেগম, মনির মাঝি, মানিকজানসহ ১৫-২০ জন নারী-পুরুষ জানান, তাদের গ্রামে সাতটি গুচ্ছগ্রাম রয়েছে। গুচ্ছগ্রাম ছাড়াও এখানে শতাধিক ঘর রয়েছে। এখানে সহস্রাধিক লোকের বসবাস। তিন-চার ফুট জলোচ্ছ্বাসে তাদের ঘরের ভিটার মাটি নিয়ে গেছে। অনেকের গবাদিপশু জোয়ারে ভেসে গেছে। এখন তাদের ঘরগুলো বসবাসের অনুপযোগী। কিন্তু তারা কোনো সরকারি সহায়তা পায়নি। এছাড়াও এখানে কোনো রাস্তাঘাট নেই। নেই কোনো আশ্রয়কেন্দ্র। তাদের জোয়ারের পানিতে ভাসতে হয়। কেউ অসুস্থ হলে তাকে চিকিৎসা দেয়ারও ব্যবস্থা নেই। কোমর সমান পানিতে নেমে ১০-১২ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে খেয়াঘাটে এসে ট্রলারে করে মূল ভূখণ্ডে আসতে হয়।

মদনপুর ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক জানান, সরকারি সহায়তা না পেলে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো ঘুরে দাঁড়াতে পারবে না।

এ বিষয়ে ভোলা জেলা প্রশাসক (ডিসি) তৌফিক-ই-লাহী চৌধুরী জানান, ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় প্রাথমিকভাবে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। তালিকা অনুযায়ী তাদের প্রয়োজনীয় সহায়তা করা হবে।

(ঢাকাটাইমস/৩১মে/পিএল)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :