গবেষণায় অর্থায়ন না বাড়ালে শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য মুখ থুবড়ে পড়তে পারে

প্রকাশ | ০১ জুন ২০২১, ১৭:০০

সাঈদ চৌধুরী

বাজেট নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে। বাজেট গণমুখী হতে হবে, অন্তর্বর্তীকালীন হতে হবে, মানুষের আস্থার জায়গায় আসতে হবে, দ্রব্য মূল্য নিয়ে সুস্পষ্ট বিষয় থাকবে ইত্যাদি ইত্যাদি!

বাজেটে অনেক ভাবনা আসে কিন্তু তার মধ্য থেকে এমন কিছু ভাবনা যোগ করা প্রয়োজন তা যেন হয় ভবিষ্যতের এগিয়ে যাওয়ার ধারক। আমাদের দেশে শিক্ষায় সবচেয়ে বেশি বাজেট থাকে। শিক্ষার উন্নয়নে দৃশ্যত যে পরিবর্তন এসেছে তা কেবল পাশের হার বৃদ্ধিকেই বলা যেতে পারে।

কিন্তু বর্তমান বিশ্বে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে চাইলে শিক্ষার বিষয়টিই আরও বেশি বৈজ্ঞানিক ও প্র্যাকটিক্যাল করতে হবে।

গবেষণায় বাজেট বাড়াতে হবে। স্কুল থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায় পর্যন্ত গবেষণা বাড়াতে পারলেই কেবল শিক্ষার স্বার্খকতা আসবে। আমাদের মেধাবী মানুষগুলো দেশ ছেড়ে অন্য দেশে চলে যায় শুধুমাত্র দেশে উচ্চ গবেষণার জায়গার অভাব বলে। যেকোনো একটি বা দুটি খাতকে টার্গেট করে হলেও প্রণোদনার মতো করে একেক বছরে একেক বিষয়ে গবেষণায় অর্থ বাড়াতে হবে।

বিজ্ঞান ও বিজ্ঞানীর উন্মুক্ত বিচরণই পারে আধুনিক একটি দেশ গড়ে তুলতে। যখন বৈজ্ঞানিক চিন্তা বাড়বে তখন বিনিয়োগও বাড়বে কারণ নতুন নতুন অনেক ভাবনার জায়গা তৈরি হবে।

টেকসই উন্নয়নে শুধুমাত্র দক্ষ কর্মী বা কর্মপরিবেশের মাধ্যমে মুক্তি আসে না। বরং প্রয়োজন গবেষণা এবং গবেষণার ইমপ্লিমেন্ট। ধরা যাক আমরা পোষাক শিল্পে অনেক এগিয়ে কিন্তু আমরা কি এখনও ইতালির টনেলো, কিম্বা জাপানী কোনো ফুল কোয়ালিটি সমৃদ্ধ কোনো মেশিন তৈরি করতে সক্ষম হয়েছি?

কেন হলাম না? যদি আমরা আমাদের দেশে অন্য দেশের সক্ষমতার হাই কোয়ালিটির মেশিন তৈরি করতে পারি তবে বিদেশ থেকে এই মেশিনগুলো আনার বন্ধ করা যেতে পারে। এখানেও গবেষণা প্রয়োজন। ২০৩০ সালের পরে ইলেক্ট্রিক ও মেকানিক্যাল ইনস্ট্রুমেন্ট বড় বাজার সৃষ্টি করবে। সুতরাং এখানেও গবেষণা ও অনুসরণ করা প্রয়োজন উন্নত বিশ্বকে।

বাজেটে সুস্পষ্টভাবে থাকা প্রয়োজন আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার বিষয়টি। প্রতিটি পৌরসভা ও উপজেলায় ডাম্পিং স্টেশন নির্মাণ এবং হাসপাতাল বর্জ্যের সঠিক ট্রিটমেন্টের জন্য প্রয়োজন ইনসিনারেটর স্থাপন।

এ বিষয়গুলো বাজেটে না আসলে আগামীতে এর প্রভাব স্বাস্থ্যে পড়বেই এবং আমরা দিন দিন অসুস্থ জাতিতে পরিণত হব। করেনার সময় এ বিষয়টি আরও গাঢ়ভাবে দেখা প্রয়োজন ছিল। কারণ করোনা বর্জ্যে যোগ হতে পারে নতুন কোনো রোগ।

বাজেটে অর্থ বাড়ানো প্রয়োজন দুস্থদের চিকিৎসাসেবায় সরকারি অনুদানের জায়গায়। অনেক ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগী বা বড় কোনো অসুখে আক্রান্ত রোগী যাতে চিকিৎসা পায় সে ব্যপারে দৃষ্টি দেয়া সরকারের একান্ত কর্তব্য। এ কর্তব্য থেকে সরে আসার কোনো সুযোগ আছে বলে মনে করি না। যেহেতু সকলেই আস্তে আস্তে স্মার্ট কার্ড পেতে যাচ্ছে সুতরাং সবচেয়ে ভালো সিদ্ধান্ত হতে পারে স্বাস্থ্য বিমা ও জনসাধারণের নিরাপত্তার জন্য স্বল্প মেয়াদী ঋণের ব্যবস্থা করা।

লেখক: গবেষক

ঢাকাটাইমস/১জুন/এসকেএস