চাকরি পরীক্ষার ভোগান্তি কি শেষ হবে না?

প্রকাশ | ০১ জুন ২০২১, ১৯:২১

মো. শাহিন রেজা

বাংলাদেশের প্রতিবছর ২০ লক্ষ তরুণ তরুণী চাকরির বাজারে প্রবেশ করছে। যারা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ থেকে অনার্স/ মাস্টার্স শেষ করে সরকারি-বেসরকারি চাকরি প্রত্যাশী। কিছু দিন আগে করোনা আক্রান্তের সংখা বৃদ্ধি পাওয়ায় চাকরির পরীক্ষা স্থগিত ছিল। বর্তমানে আবার শুরু হয়েছে। বিসিএস বাদে প্রায় সব পরীক্ষায় রাজধানী শহর ঢাকাতে অনুষ্ঠিত হয়। ফলে ঢাকার বাহিরের বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থীরা পড়া লেখা শেষ করে ঢাকামুখী হয়।

বিশ্বের অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ শহর ঢাকার  জনসংখ্যা বর্তমানে ২ কোটি। এ শহরের জনসংখ্যার সমস্যা অন্যতম প্রধান সমস্যা হিসাবে চিহ্নিত হয়েছে। যেখানে সমস্যা সমাধানে নগর-পরিকল্পনাবীদরা বিচার ব্যবস্থা, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সেবা বিকেন্দ্রীকরণের কথা কথা বলছেন, সেখানে চাকরির জন্যই প্রতি বছর বহু মানুষকে আমরা ঢাকামুখী করছি।

গ্রাম থেকে ঢাকাতে চাকরি পরীক্ষা দিতে আসতে একজন মানুষের ভোগান্তির শেষ থাকে না। ধরুন এক জনের বাড়ি ঝিনাইদহে। মাসে দুইটি করে পরীক্ষা থাকলে যাতায়াত, থাকা খাওয়া বাবদ প্রতিবার ১৫০০/২০০০ টাকা খরচ হয়। সাথে ঢাকাতে আসা যাওয়ার কষ্ট, সময় ব্যয় ও ভোগান্তি তো আছেই। একজন মেয়ের পক্ষে এটা আরো বেশি ভোগান্তির এবং পরিবার তাঁর নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত থাকে। অনেক চাকরি প্রত্যাশী টিউশনির মাধ্যমে নিজের ও পরিবারের খরচ মেটায়। অনেকে থাকে বেকার। করোনাতে অনেকে টিউশনি হারিয়েছে। এখন এমন একজন ব্যক্তির পক্ষে প্রতি মাসে এত টাকা খরচ করে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা কি সম্ভব? এখনতো লকডাউনের ফলে গাড়ি ভাড়া আবার প্রায় দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে অনেকে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে না।

মূলত কেন্দ্রীয় ভাবে পরীক্ষা নেওয়ায় এই ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। সমস্যা সমাধানে পরীক্ষাগুলো বিভাগীয় কিংবা বৃহত্তর জেলা শহরে নেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। উদাহরণ হিসাবে বলা যায়, যশোর শহরে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলে যশোরসহ ঝিনাইদহ, মাগুরা, নড়াইলের মানুষ সহজেই বাড়ি থেকে পরীক্ষা দিতে পারবে। ঢাকাতে যাওয়ার মতো ভোগান্তি পোহাতে হবে না সাথে অর্থ ও সময় ব্যয় কমে যাবে।

চাকরি প্রত্যাশীরা প্রায় সবাই বেকার। ফলে আবেদন ফি দেওয়া তাদের জন্য কষ্টসাধ্য। তাই আবেদন ফি না নিয়ে বৃহত্তর জেলা শহরে চাকরির পরীক্ষা আয়োজন করে চাকরি প্রত্যাশিদের ভোগান্তি নিরসনে উদ্যোগ গ্রহণ করুন।

লেখক: নাগরিক সাংবাদিক

ঢাকাটাইমস/১জুন/এসকেএস