চট্টগ্রাম ওয়াসায় লবণাক্ততায় উৎপাদন কমেছে

চট্টগ্রাম ব্যুরো, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ০২ জুন ২০২১, ১৭:৫০ | প্রকাশিত : ০২ জুন ২০২১, ১৭:৪৮

হালদাতে তিন কারণে বেড়েছে মাত্রাতিরিক্ত লবণ। বৃষ্টির পরিমাণ কম, কাপ্তাই লেক থেকে পানি সরবরাহ কম এবং ঘূর্ণিঝড় ইয়াসে অতিরিক্ত জোয়ারের ফলে লবনাক্ত পানি ঢুকে পড়ায় নতুন করে এ সমস্যা তৈরি হয়েছে। এ কারণে চট্টগ্রাম ওয়াসার সরবরাহকৃত পানিতে লবণাক্ততা বেড়েছে।

পরিস্থিতি সামাল দিতে জোয়ারের সময়ে হালদা থেকে পানি উত্তোলন বন্ধ রাখছে চট্টগ্রাম ওয়াসা। এতে প্রতিদিন গড়ে চার থেকে ছয় কোটি লিটার পানি উৎপাদন কম হচ্ছে সেবা সংস্থাটির।

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী মাকসুদ আলম ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘মূলত তিন কারণে হালদাতে লবণ পানির আগ্রাসন হয়েছে। গত সপ্তাহে হালদার পানিতে সর্বোচ্চ চার হাজার মিলিগ্রাম পার লিটারে লবণ পাওয়া গেছে। এর আগে ভাটার সময়েও লবণের উপস্থিতি মিলছে। সর্বশেষ রবিবার বিকালে জোয়ারের সময়ে ১৪০০ মিলিগ্রাম পার লিটারে লবণ পাওয়া গেছে। যেখানে সহনীয় মাত্রা হচ্ছে ২০ থেকে ৬০ মিলিগ্রাম পার লিটার। এ কারণে মদুনাঘাট ও মোহরা পানি শোধনাগার প্রকল্পের উৎপাদন জোয়ারের সময়ে বন্ধ রাখা হচ্ছে।’

প্রকৌশলী মাকসুদ আলম বলেন, ‘বৃষ্টির পরিমাণ কম, কাপ্তাই লেক থেকে পানি সরবরাহ হ্রাস এবং ঘূর্ণিঝড় ইয়াসে অতিরিক্ত জোয়ারে লবণের আগ্রাসনের কারণে হালদাতে এ সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে ওয়াসার উৎপাদন দৈনিক চার থেকে ছয় কোটি লিটার কমিয়ে ৩৮ কোটি লিটারে নিয়ে আসা হয়েছে। অথচ বর্তমানে ওয়াসার দৈনিক স্বাভাবিক উৎপাদন হচ্ছে প্রায় ৪৪ কোটি লিটার।’

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সাধারণত শুষ্ক মওসুম মার্চ-এপ্রিলে হালদাতে লবণ পানি বৃদ্ধি পায়। কিন্তু এ বছর মে মাসে লবণের আগ্রাসন আরো বেড়েছে। সুতরাং এটি নদীর জন্য একটি অশনি সংকেত সৃষ্টি হয়েছে। নদীতে লবণ থাকলে ওয়াসার উৎপাদন ব্যাহত হয়। সমস্যায় পড়েন ওয়াসার গ্রাহকরা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, কাপ্তাই লেক থেকে পানি ছাড়া কমে যাওয়ায় নদীর প্রবাহ কমে গেছে। এতে বঙ্গোপসাগরের লবণ পানি জোয়ারের সময় কর্ণফুলী নদী হয়ে হালদায় প্রবেশ করছে। মোহরা পানি শোধনাগার ও মদুনাঘাট (শেখ রাসেল) পানি সরবরাহ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রতিদিন নয় কোটি লিটার করে মোট ১৮ কোটি লিটার পানি উত্তোলন করে চট্টগ্রাম ওয়াসা। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে ওয়াসার পানিতে লবণের পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে গ্রাহকদের মধ্যে উৎকণ্ঠা দেখা দেয়।

নগরীতে প্রতিদিন প্রায় ৪৪ কোটি লিটার পানি সরবরাহ করে চট্টগ্রাম ওয়াসা। এর মধ্যে হালদা নদী থেকে দুইটি প্রকল্পের মাধ্যমে ১৮ কোটি লিটার। অবশিষ্ট পানি সরবরাহ হয় গভীর নলকূপ ও কর্ণফুলী (শেখ হাসিনা) পানি প্রকল্প দুটির মাধ্যমে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে হালদা নদীর পানিতে অস্বাভাবিকভাবে লবণাক্ততা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

অন্যদিকে শুস্ক মওসুমে কাপ্তাইলেকে পানির প্রবাহ হ্রাস পাচ্ছে। ফলে জোয়ারের সময় বঙ্গোপসাগরের লবণাক্ত পানি কর্ণফুলী নদী হয়ে হালদায় ঢুকে। এ অবস্থায় মোহরা ও মদুনাঘাট পানি শোধনাগারের মাধ্যমে এ লবণ পানি পৌঁছে যাচ্ছে নগরবাসীর কাছে। এ লবণ পানি পানের ফলে মানুষের শরীরে নানা রোগব্যাধি দেখা দেয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

ওয়াসার মোহরা প্রকল্পের ল্যাবরেটরির পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, হালদার নদীর পানিতে স্বাভাবিক লবণের (ক্লোরাইড) মাত্রা থাকে প্রতি লিটারে ২০ থেকে ৩০ মিলিগ্রাম। কিন্তু ২০০৭ সালের ১৯ জানুয়ারি হালদার পানিতে প্রতিলিটারে লবণের সর্বোচ্চ মাত্রা ছিল ১১ হাজার ৫৫০ মিলিগ্রাম। যা এ যাবতকালের সর্বোচ্চ রেকর্ড। পরদিন ২০ জানুয়ারি ছিল আট হাজার মিলিগ্রাম। এর আগে ১৯৯৫ সালেও হালদা নদীর পানিতে মাত্রাতিরিক্ত লবণ পাওয়া যায়। এ সময় লবণের মাত্রা ছিল সর্বোচ্চ ছয় হাজার ৮০০ মিলিগ্রাম। এভাবে প্রতি বছরই প্রথম পাঁচ মাসে হালদার পানিতে লবণের পরিমাণ তুলনামূলকভাবে বেশি পাওয়া যাচ্ছে বলেন সূত্রটি।

(ঢাকাটাইমস/২জুন/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

ফেসবুক আইডি ক্লোন করে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ, যুবক গ্রেপ্তার

ফরিদপুর প্রেসক্লাবের নবনির্বাচিত নেতৃবৃন্দের সঙ্গে পুলিশ সুপারের মতবিনিময়

পতেঙ্গায় ফিশিং বোটের ইঞ্জিন বিস্ফোরণে ৪ জন দগ্ধ

চট্টগ্রামে ঈদকে সামনে রেখে জালনোট চক্রের ৩ সদস্য গ্রেপ্তার

বরিশালে নামাজের সময় মসজিদের এসি বিস্ফোরণ

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দ্রুতগতির লেনে যাত্রী নামানোর অপরাধে ৩৩ যানবাহনকে মামলা 

বরগুনা প্রেসক্লাব দখলের মামলায় ৭ জন কারাগারে  

পর্যটকদের আকৃষ্ট করছে তাহিরপুরের শহীদ সিরাজ লেক

ঝিনাইদহে ভর্তুকি মূল্যে টিসিবির পণ্য বিক্রি শুরু

ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কে বেতন বৃদ্ধির দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :