কবিতা
সময় শেকলে বাঁধা আশা
প্রকাশ | ০৭ জুন ২০২১, ০৮:৪৮
আমাকে যদি আবার আসতে বলো
সোনালি ধানের শীষের এই তল্লাটে,
তখনো আমি ভিড়াবো আমার নাও
জোড়পুকুরিয়ার পরিচিত ভাঙ্গা ঘাটে।
আমাকে যদি আবার গাইতে বলো
পুরানো দিনের মরমিয়া কোনো গান,
আকাশ কাঁপিয়ে গাইবো সে রাখালিয়া
যে গান গাইতো কৈয়নীর গাড়োয়ান।
আবার যদি কবিতা পড়তে বলো
সুলতান কাকার কবিতার খাতা খুঁজবো,
পুলের ধারের আমের ছায়ায় একা
ভাবের মুলুকে হারিয়ে দু’চোখ বুঁজবো।
ইস্কুল মাঠের গ্রাম্য নাট্যমঞ্চে-
অভিনয় করার ফরমাশ যদি মেলে,
মুখস্ত করা সংলাপ ভুলে যাবো
‘বিষাদসিন্ধু’ নাটক রিহার্সেলে।
আঙ্গুলে রোমাল,মাথায় গামছা বেঁধে,
আমান মিয়ার মানবো ডিকটেশান,
কারবালার ঐ করুণ কাহিনি নিয়ে
আবার গাইবো বিষাদের জারীগান।
গোমতিকূলের কাশবনে যদি আবার
হারিয়ে যাবার ফরসুত মিলে যায়,
কল্পনারঙের আবীর ছড়িয়ে দেবো-
গাংচিলদের সোনালি ডানায় ডানায়।
আবার কখনো খেলার সাথিরা যদি
ডাংগুলি খেলায় মেতে উঠি কোলাহলে,
বেপারী বাড়ির পাড়াতো রশিদ মামাকে
রাখতেই হবে আমার নিজের দলে।
জোলাভাতি খেলার মওকা আবার পেলে,
দুলু,শানু,দেলু,সাহিদা,বিউটি মিলে;
কারন ছাড়াই কলহ বাঁধাবো নিজেরা
বেগম বুবুর আমরোজ গাছতলে।
জৈষ্ঠ মাসের দুপুরে ভ্যাঁপসা গরমে
বড়োরা যখন নিবে ক্ষণ বিশ্রাম,
খেলার সাথিরা ঢিল পাটকেল মেরে
পেড়ে আনবোই লালচে সিঁদুরে আম।
ছালেহার মা’র শসার মাচার ফাঁকে
শসাগুলো যখন খানিক উঠবে বেড়ে,
আমরা থাকবো সুযোগের সন্ধানে-
ডাঁশা কচি শসা চুরি করে নেবো পেড়ে।
আরবার যদি বালক বেলায় ফিরি,
খাঁচায় ভরবো ছোট্ট শালিক ছানা;
নৌকো ভাসাবো শাওনের ভরা জলে
মানবো না কারো শাসন বারন মানা।
জানিনা আবার ফিরতে পারবো কি না!
ফেরার পথেও নানান গোলক ধাঁধা,
হয়তো সে আশা দুরাশাই হয়ে রবে-
সব আশা থাকে সময় শেকলে বাঁধা।