কোভ্যাক্সিনের তুলনায় কোভিশিল্ড বেশি কার্যকর?
মহামারিকালে মানুষের চেয়ে পাঁচ হাজার কোটি গুণ ক্ষুদ্র করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ভ্যাকসিন এখন আশার আলো দেখাচ্ছে। কার্যত এই ক্ষুদ্র ভাইরাস থেকে মুক্তির সুনির্দিষ্ট ওষুধ নেই। চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা তাদের অভিজ্ঞতা দিয়ে নানা ওষুধের সমন্বয়ে মোকাবিলা করার চেষ্টা করছেন। বিস্ময়করভাবে চিকিৎসা বিজ্ঞান অত্যন্ত অল্প সময়ের মধ্যে করোনার অনেক ভ্যাকসিন উদ্ভাবন করেছে। ট্রায়ালে কার্যকারিতা প্রমাণের পর মানুষের শরীরে ভ্যাকসিন দেওয়াও শুরু হয়েছে।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও বৃটিশ সুইডিস সংস্থা অ্যাস্ট্রাজেনেকার যৌথ উদ্যোগে বিকাশ করা হযেছে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন কোভিশিল্ড। অন্যদিকে কোভ্যাকসিন ভারত বায়োটেক, ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ ও ন্যাশনাল ভাইরোজিলের সহযোগিতায় তৈরি করা হয়েছে।
কোভিশিল্ড নিলে কোভ্যাক্সিনের তুলনায় তৈরি হচ্ছে বেশি অ্যান্টিবডি , এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য দেখা গিয়েছে নতুন গবেষণায়, দাবি একদল গবেষকের। এই গবেষণায় টিকা নেওয়ার পর অংশগ্রহণ করেছিলেন চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা। তাদের শরীরে তৈরি হওয়া অ্যান্টিবডির ভিত্তিতে এই পরীক্ষা করা হয়। এদের মধ্যে কেউ কোভিশিল্ড নিয়েছিলেন, কেউ আবার কোভ্যাক্সিন। দুই প্রতিষেধকই করোনাভাইরাস আটকাতে এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা বাড়াতে যথেষ্ট সক্ষম। কিন্তু তারতম্য রয়েছে অ্যান্টিবডি তৈরিতে।
প্রথম ডোজ নেওয়ার পরই কোভিশিল্ডের এফিকেসি ৭০ শতাংশ। কোভ্যাক্সিনের বেশ কিছুবার পরীক্ষা করার পর জানা যায়, এর এফিকেসি ৮১ শতাংশ।
৫১৫ জন স্বাস্থ্যকর্মী অংশগ্রহণ করেন। যার মধ্যে ৯৫ শতাংশের শরীরে দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার পর বেশি সংখ্যায় অ্যান্টিবডি পাওয়া গিয়েছে। যার মধ্যে ৪২৫ জন কোভিশিল্ড নিয়েছিলেন, বাকি জন কোভ্যাকসিন। দেখা গিয়েছে, কোভিশিল্ডে শরীরে তৈরি হচ্ছে ৯৮.১ শতাংশ অ্যান্টিবডি। সেখানে কোভ্যাকসিনে পাওয়া যাচ্ছে ৮০ শতাংশ। এমনটাই দাবি গবেষকদের।
গবেষণা অনুযায়ী, দুই প্রতিষেধকের ক্ষেত্রেই রোগ-প্রতিরোধক ক্ষমতা রয়েছে । অ্যান্টি-স্পাইক অ্যান্টিবডি তৈরির তারতম্য দেখা হয়েছে এই গবেষণায়। এই পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে এই পরীক্ষা অনুযায়ী, দু’টি ডোজ নেওয়ার পর ২৭ জন কোভিড আক্রান্ত হন। তবে কোনও মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি। কোভিশিল্ডের ক্ষেত্রে ৫.৫ শতাংশ এবং কোভ্যাক্সিনের ক্ষেত্রে ২.২ শতাংশ করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। প্রসঙ্গত, যারা ৬০ বছরের ঊর্ধ্বে তাদের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হওয়ার সংখ্যা কম।
তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ার আগে নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে ভ্যাকসিন নেয়া জরুরি।
(ঢাকাটাইমস/৮জুন/আরজেড/এজেড)