‘সুমিস হট কেকের’ বিরুদ্ধে ১০ কোটি টাকার মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ০৯ জুন ২০২১, ১৫:০৬ | প্রকাশিত : ০৯ জুন ২০২১, ১৪:৫৮

পাঁচ বছর ধরে ভ্যাট ফাঁকি দিয়ে আসছিল রাজধানীর উত্তরার ‘সুমিস হট কেক’ নামের একটি বেকারিপণ্যের চেইনশপ। অবশেষে শুল্ক গোয়েন্দাদের হাতে ধরা পড়েছে প্রতিষ্ঠানটি। আর দীর্ঘদিন ভ্যাট ফাঁকি দেয়ায় সুদসহ সাড়ে ১০ কোটি টাকার মামলা হয়েছে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে।

মঙ্গলবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদপ্তর এই মামলা দায়ের করে। ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদপ্তর মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

অধিদপ্তর জানায়, সুমিস হট কেক ২০১৬ সালের জুলাই থেকে ২০২১ সালের এপ্রিল পর্যন্ত প্রায় ৫ বছরে সাত কোটি ১৩ লাখ টাকা ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে।

ফাঁকি দেয়া ভ্যাটের ওপর সুদ বাবদ তিন কোটি ৩৮ লাখ টাকাসহ মোট ১০ কোটি ৫১ লাখ টাকা আদায়ে এ মামলা করে এনবিআর।

ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান বলেন, ‘সুমিস হট কেক’ প্রধানত ঘোষণার তথ্যে জালিয়াতি করেছে। গত ২ জুন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক নাজমুন নাহার কায়সার ও ফেরদৌসী মাহবুবের নেতৃত্বে ভ্যাট গোয়েন্দার একটি দল সেখানে এই অভিযান চালিয়ে মেশিনে কেক তৈরির ব্যবস্থা সরেজমিন পরিদর্শন করে এসেছে।

চলতি সপ্তাহের মধ্যে এটি ন্যায় নির্ণয়ের জন্য ঢাকা উত্তর কমিশনারেটের কাছে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক।

অধিদপ্তর জানিয়েছে, হাতে তৈরি কেকের ওপর ৫ শতাংশ হারে ভ্যাট নেয়া হয়। কেক যদি মেশিনের মাধ্যমে তৈরি করা হয় তাহলে ভ্যাট নেয়া হয় ১৫ শতাংশ হারে।

তবে সুমিস হট কেক এতদিন হাতে কেক তৈরি করে এমন ঘোষণা দিয়ে ৫ শতাংশ হারে ভ্যাট দিয়ে আসছিল। মূলত প্রতিষ্ঠানটি কেক তৈরি করছে মেশিনে। এতে ১০ শতাংশ হারে ভ্যাট ফাঁকি দিয়ে আসছিল সুমিস হট কেক।

প্রতিষ্ঠানটির উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক লে. কর্নেল (অব.) শেখ মো. শাহজালালের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘২০১২ সালের ভ্যাট আইনের ২০১৬ সালের সম্পূরক শুল্কের তৃতীয় তফশিল ১৯.৫ বিধিমালা অনুযায়ী এক কেজি ওজনের বেশি কেকের উপর ৫ শতাংশ আর এক কেজির কম ওজনের কেকের ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে হয়। ভ্যাট আইন অনুযায়ী আমরা ক্রেতাদের কাছ থেকে ৫ শতাংশ ভ্যাট নিয়েছি। সরকারের কোষাগারেও একই হারে ভ্যাট জমা দিয়েছি।

প্রতিষ্ঠানটি মেশিনে নয়, হাতেই কেক তৈরি করে। এমন দাবি করছেন প্রতিষ্ঠানটির উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহজালাল। তিনি বলেন, যে কোনো কেক তৈরি করতে হলে প্রথমে হাতে সকল কাঁচামাল নির্দিষ্ট একটি ছাঁচে গুলিয়ে ওভেনের মাধ্যমে নির্ধারিত তাপমাত্রায় তৈরি করা হয়। এরপর কেকের লেয়ার তৈরি করা হয় সম্পূর্ণ হাতের মাধ্যমে। আর মেশিনের কেক তৈরির নিয়ম হচ্ছে পরিমাণ মতো কাঁচামাল মেশিনের নিদির্ষ্ট কন্টেইনারে ঢালা হয় আর ওই মেশিনের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে হাজার হাজার পিছ কেক তৈরি হয়। মূলত মেশিনের মাধ্যমে ছোট কেক তৈরি করা হয়।

তিনি আরও বলেন, আমরা ব্যবসায়িকভাবে কেক তৈরি করি বলে বেশি লোকবল ও বেশি ছাঁচ দিয়ে বেশি পরিমাণে কেক তৈরি করি। এটা কোনোভাবেই মেশিনের সঙ্গে তুলনীয় নয়।

এদিকে কারখানাটি পরিদর্শনকালে প্রতিষ্ঠানের কারখানায় স্থাপন করা ছয়টি কেক মিক্সিং মেশিনসহ অটো ওভেন, বিস্কুট তৈরির বড় অটো ওভেন ও ক্রিম মিক্সিং মেশিন পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন শুল্ক গোয়েন্দারা।

(ঢাকাটাইমস/৯জুন/কারই/কেআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :