টাকা দিলেই নেগেটিভ সনদ, মেডিনোভাসহ চার প্রতিষ্ঠান ধরা

প্রকাশ | ১০ জুন ২০২১, ১৬:৪৬

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

টাকার বিনিময়ে বিদেশগামীদের করোনার ভুয়া সনদ দেওয়ায় অভিযোগে মেডিনোভা মেডিকেল সার্ভিসেসের মিরপুরের ব্রাঞ্চসহ ঢাকার চারটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এসব প্রতিষ্ঠানে এখন থেকে আর করোনার পরীক্ষা করা যাবে না বলে জানিয়েছেন অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) ডা. মো. ফরিদ হোসেন মিঞা।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনুমোদন নিয়ে করোনার পরীক্ষা করে আসছিলো বেশ কিছু বেসরকারি হাসপাতাল ও মেডিকেল সেন্টার। বিশেষ করে বিদেশগামীদের করোনা পরীক্ষার জন্য নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়েছিল মেডিনোভা মেডিকেল সার্ভিসেস-মিরপুর ব্রাঞ্চসহ আরও অনেক প্রতিষ্ঠানকে।

মেডিনোভা ছাড়াও যেসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে সেগুলো হলো- রাজধানীর পুরানা পল্টনের আল জামী ডায়াগনস্টিক সেন্টার, বাংলামোটরের রূপায়ন ট্রেড সেন্টারে অবস্থিত স্টিমজ হেলথ কেয়ার (বিডি), বিজয় স্মরণীর সিএসবিএফ হেলথ সেন্টার।

জানা গেছে, সম্প্রতি এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে  অর্থের লোভে বিদেশগামীযাত্রীদের ভুয়া করোনা নেগেটিভ সনদ দেয়ার অভিযোগ ওঠে। এছাড়াও মিথ্যা তথ্য দিয়ে অনুমোদন নেয়ারও অভিযোগ আছে। পরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লোকজন সরেজমিন তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিদেশগামী যাত্রীদের আরটি-পিসিআর টেস্ট ও নমুনা সংগ্রহের কার্যক্রম স্থগিত করার নির্দেশ দেয়।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পাঠানো চিঠিতে লেখা হয়েছে, সম্প্রতি এসব প্রতিষ্ঠান বিদেশগামী করোনা পজিটিভ যাত্রীকে নেগেটিভ সনদ দিয়েছে। সেই সঙ্গে প্রতারণার মাধ্যমে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করেছে। এছাড়া নমুনা সংগ্রহের নামে বুথে দালাল নিয়োগের মতো অনৈতিক কর্মে যুক্ত হয়েছে এই চার প্রতিষ্ঠান। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিএইচআইএস-২ এর ডাটাবেজ যাচাইয়ের প্রাথমিক অনুসন্ধানে এ চার প্রতিষ্ঠানের এসব অপকর্মের সত্যতা নিশ্চিত পাওয়া গেছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, বৈশ্বিক মহামারিতে তাদের এসব অনৈতিক কর্মকাণ্ড অনাকাঙ্ক্ষিত ও জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি স্বরূপ, যা দেশের ভাবমূর্তি ভয়ঙ্কররূপে ক্ষুণ্ন করেছে মর্মে এ চার প্রতিষ্ঠানের ও তাদের আওতাধীন সব বুথের নমুনা সংগ্রহসহ বিদেশগামী যাত্রীদের আরটি–পিসিআর টেস্ট কার্যক্রম সাময়িক বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

অধিদপ্তরের হাসপাতাল শাখার নতুন পরিচালক ফরিদ হোসেন মিয়া ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে আমাদের কাছে এসব হাসপাতাল থেকে করোনার ভুয়া সনদসহ নানা ধরনের অভিযোগ প্রতিনিয়ত আসছিল। সেই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল হাসপাতালগুলো বন্ধ করে দিতে চিঠি দিয়েছি।’

এদিকে করোনা পরীক্ষা স্থগিতের চিঠি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মেডিনোভা মেডিকেল সার্ভিসের মিরপুর শাখার ব্যবস্থাপক (অ্যাডমিন) টি এম জুলফিকার (সাবু)।

ঢাকাটাইমসকে জুলফিকার বলেন, ‘স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লোকজন এসে দেখে গেছে আমাদের এখানকার কার্যক্রম। পরে চিঠি দিয়ে পরীক্ষা স্থগিত করার জন্য বলেছে। কিন্তু আমাদের এখানের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ এটার জন্য মেডিনোভা জড়িত নয়। একজনের আইডি দিয়ে এমন কাজ করা হয়েছে।’

যার আইডি দিয়ে রিপোর্ট দেয়ার কথা বলছেন তিনি মেডিনোভার কর্মী কি না- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন,‘হ্যাঁ তিনি আমাদের কর্মী।’ মেডিনোভা এর দায় এড়াতে পারে কি না- এমন প্রশ্নে জুলফিকার বলেন, ‘অবশ্যই আমাদের সম্মানহানি হয়েছে।’ পরে অবশ্য তিনি বলেন, আপনার সঙ্গে এসব নিয়ে কথা বলতে চাই না। সরাসরি আসুন কথা বলবো।’

(ঢাকাটাইমস/১০জুন/বিইউ/এমআর)