মাদারীপুরে উত্তাপ ছড়াচ্ছে আ.লীগের দুই পক্ষ, পাল্টাপাল্টি সমাবেশ

প্রকাশ | ১০ জুন ২০২১, ২২:১৫

মাদারীপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

সাবেক নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খানের পিতা ও স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত মরহুম আছমত আলী খান সম্পর্কে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহাবুদ্দিন আহম্মেদ মোল্লার একটি বক্তব্যকে কেন্দ্র করে ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে উঠছে মাদারীপুরের রাজনীতির মাঠ। সপ্তাহখানেক ধরে চলছে আওয়ামী লীগ দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি প্রতিবাদ সমাবেশ, মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল, স্মারকলিপি প্রদানসহ নানা কর্মসূচি। এতে শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।

এদিকে জেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতারা শাহাবুদ্দিন আহম্মেদ মোল্লাকে নিয়ে সমালোচনা করায় এর তীব্র প্রতিবাদ করেছেন।

এসব কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার বিকালে রাজৈর উপজেলার পাইকপাড়া ইউনিয়নের ফুলতলা বাজার এলাকায় পাশাপাশি স্থানে প্রতিবাদ সমাবেশ করে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষ। মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহাবুদ্দিন মোল্লার পদত্যাগ ও দল থেকে বহিষ্কারের দাবিতে সমাবেশ করে আওয়ামী লীগের এক গ্রুপ।

এতে সভাপতিত্ব করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা বদিউর রহমান তালুকদার। বক্তব্য দেন- সাবেক নৌপরিবহন মন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা শাজাহান খান এমপি, শাকিলুর রহমান সোহাগ তালুকদার, আফম ফুয়াদ, আসিফ খান, ফরিদা হাসান পল্লবী, সাহাবুদ্দিন সাহা, রেদওয়ানুল হক রেজন, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হোসেন মুন্না প্রমুখ।

অপর দিকে একই বাজারের ভিন্ন স্থানে পাইকপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাহাবুদ্দিন আহম্মেদ মোল্লা গ্রুপের কর্মী ও সমর্থকরা সমাবেশ করেন।

এতে বক্তব্য দেন- জেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা সেকেন্দার আলী শেখ, রাজৈর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আল-আমিন মোল্লা, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান শেখ ফজলুল হক বাবুল, জেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী সদস্য ইউসুফ আলী মিয়া, আবু বকর খান, দিলীপ মিয়া প্রমুখ।

সাবেক নৌপরিবহন মন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা শাজাহান খান এমপি বলেন, ‘গত ২৫ মে রাজৈর উপজেলার শান্তি নিকেতন কেন্দ্রে ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে নেতা-কর্মীদের উপস্থিতিতে মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহাবুদ্দিন মোল্লা মাদারীপুরের সর্বস্তরের জনগণের প্রাণপ্রিয় নেতা সর্বজন শ্রদ্ধেয় বীর মুক্তিযোদ্ধা আছমত আলী খানের মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা ও স্বাধীনতা পদক নিয়ে কটূক্তি করেন। যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।’

মূলত এই বক্তব্যকে কেন্দ্র করে অব্যাহতভাবে দুই পক্ষ পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি পালন করায় রাজনীতির মাঠ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। তবে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহাবুদ্দিন আহম্মেদ মোল্লাকে নিয়ে শাজাহান খানপন্থিরা সমালোচনা করায় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজল কৃষ্ণ দে, জেলা যুবলীগের সভাপতি আতাহার আলী সর্দার, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জাহিদ হোসেন অনিক ও সাধারণ সম্পাদক বায়েজিত হাওলাদারসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতারা লিখিত প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

তবে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহাবুদ্দিন আহম্মেদ মোল্লা জানান, ‘আমি যা বলেছি- তা চির সত্য। শাজাহান খান আমাকে হেয় করার জন্যে উঠেপড়ে লেগেছেন। যদি তার কিছু বলার থাকে, তাহলে দলীয় ফোরামে বলুক। কেন তার নিজস্ব লোকজন নিয়ে আমাকে হেয় করার চেষ্টা করছে। যা শুভকর না। আশা করি, তার শুভ বুদ্ধির উদয় হবে।’

(ঢাকাটাইমস/১০জুন/এলএ)