ভুয়া আইডি খুলে হয়রানি, মেডিকেল ছাত্রীর পাশে পুলিশ
প্রেমে সাড়া না দেয়ায় রাজশাহী মেডিকেলে পড়ুয়া এক ছাত্রীর ভুয়া ফেসবুক আইডি খুলে তার বিভিন্ন ছবি দিয়ে ব্ল্যাকমেইল করছিলেন এক যুবক। হেনস্থার শিকার ওই তরুণী প্রতিকার চেয়ে বিভিন্ন জায়গা দারস্থ হলেও প্রতিকার পাননি। বাধ্য হয়ে বাংলাদেশ পুলিশের ফেসবুক পেজের ইনবক্সে মেসেজ পাঠিয়ে সহায়তা চান তিনি। আর তাতেই ওই শিক্ষার্থীর পাশে দাঁড়ায় পুলিশ। আইনের আওতায় আনা হয় ওই যুবককে।
শুক্রবার বিকালে বাংলাদেশ পুলিশ সদর দপ্তরের মিডিয়া এন্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের এআইজি সোহেল রানা এ তথ্য জানিয়েছেন।
সোহেল রানা জানান, রাজশাহী মেডিকেল কলেজের এক ছাত্রী অভিযোগ করেছেন তার পূর্ব পরিচিত এক ব্যক্তি তাকে ভীষণ জ্বালাতন করছে। এক সময় একটি কোচিং সেন্টারে ওই যুবকের সঙ্গে মেয়েটির পরিচয় হয়। পরে তারা সম্পর্কে জড়ান। কিন্তু সম্পর্কে জড়ানোর কিছুদিনের মধ্যেই ছেলেটির মধ্যে কিছু অসঙ্গতি দেখতে পান ওই তরুণী। শারীরিক সম্পর্কে জড়াতে মেয়েটিতে চাপ দিতে থাকেন ওই যুবক। মেয়েটি রাজি না হওয়ায় তাকে চাপ দিতে থাকেন। এতে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ায় মেয়েটির লেখাপড়াও নষ্ট হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত সম্পর্ক চলমান না রাখার সিদ্ধান্ত নেন মেডিকেল পড়ুয়া ওই ছাত্রী। কিন্তু ওই যুবক তার সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে মেয়েটিকে বাধ্য করতে চাই। রাজি না হওয়ায় মেয়েটিকে নানাভাবে বিরক্ত করতে থাকে। মেয়েটির নামে ফেসবুকে বিভিন্ন ভুয়া একাউন্ট খুলে সেখানে তার ছবি দিয়ে মেয়েটিকে হয়রানি করতে শুরু করে। পড়াশুনায় ব্যাঘাত ঘটতে থাকে মেয়েটির। মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। একপর্যায়ে আইনি সহযোগিতা চেয়ে নানা জায়গায় দারস্থ হন তিনি। এতে ওই যুবক আরও রেগে যান। প্রতিনিয়ত তাকে নোংরা এসএমএস পাঠিয়ে ও ফোন করে হুমকি দিতে থাকেন। লোকটির পরিবারের কাছে বিচার দিয়েও কোনো সুরাহা হয়নি। এই অবস্থা থেকে মুক্তির কোনো উপায় খুঁজে পাচ্ছিল না মেয়েটি।
এক পর্যায়ে হঠাৎ করেই মিডিয়া এন্ড পাবলিক রিলেশন্স উইংয়ের কথা জানতে পারে মেয়েটি। এখানে লিখে তার বিপদের কথা জানিয়ে সে সহযোগিতা চায়। বার্তা পেয়ে মিডিয়া উইং তাৎক্ষণিকভাবে মেয়েটির পাশে দাঁড়ায় পুলিশ। তাকে সকল প্রকার সহযোগিতার আশ্বাস দেয়। এই বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে ওই যুবকের বর্তমান এলাকায় থানা পুলিশকে নির্দেশনা দেয়া হয়। এর প্রেক্ষিতে, কুমিল্লা জেলার বরুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ইকবাল বাহার মজুমদার আন্তরিকতার সঙ্গে মেয়েটির সমস্যা সমাধানে উদ্যোগী হন। লোকটির অভিভাবকদের উপস্থিতিতে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সহযোগিতায় ওই যুবকের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। পুলিশি সহযোগিতা পেয়ে মেডিকেল ছাত্রী মেয়েটি বরুড়া থানা পুলিশ ও সর্বোপরি বাংলাদেশ পুলিশকে তার কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে।
মানুষের পাশে দাঁড়ানোর সুযোগের ক্ষেত্রে একজন পুলিশ কর্মকর্তা অত্যন্ত আশীর্বাদপুষ্ট উল্লেখ করে মেয়েটি লিখেছে, ‘সৃষ্টিকর্তা অনেক পরিকল্পনা করে কিছু মানুষকে পৃথিবীতে পাঠান তাঁর অন্য সকল সৃষ্টির পাশে দাঁড়ানোর জন্য। এ রকম ভাগ্য নিয়ে সবাই পৃথিবীতে আসতে পারেন না।’
ঢাকাটাইমস/১১জুন/এআর/এমআর