প্রধানমন্ত্রীর দেয়া নৌ-অ্যাম্বুলেন্সগুলো একদিনও কাজে লাগেনি

নিজস্ব প্রতিবেদক, সুনামগঞ্জ
| আপডেট : ১১ জুন ২০২১, ১৭:৫৭ | প্রকাশিত : ১১ জুন ২০২১, ১৭:৪৯

সুনামগঞ্জের হাওরপাড়ের উপজেলাগুলোতে সরকারি স্বাস্থ্যসেবাকে মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে উপহার হিসেবে দেয়া হয় নৌ-অ্যাম্বুলেন্স। এসব অ্যাম্বুলেন্স এখন পড়ে আছে অযত্ন-অবহেলায়। এগুলো যেন দেখার কেউ নেই।

দুটি নৌ-অ্যাম্বুলেন্সের একটি সারা বছর নদীর ঘাটে এবং আরেকটি হাসপাতালের অভ্যন্তরে একেবারেই জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে আছে। এই চিত্র সুনামগঞ্জের তাহিরপুর ও জামালগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দেয়া দুটি নৌ-অ্যাম্বুলেন্সের। এগুলোর তৎকালীন মূল্য ছিল প্রায় ১০ লাখ টাকা। এই বেহাল অবস্থার কারণে এলাকাবাসীর মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।

জামালগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্সটি ২০২০ সালে নেত্রকোণা থেকে জামালগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়। ওই সময় ঢাকা থেকে আসা মেকানিকরা অ্যাম্বুলেন্সটি চালু করে দিয়ে যান। এরপর একদিন একজন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা পরিদর্শনে যাওয়ার সময় ব্যাটারি বিকল হয়ে অ্যাম্বুলেন্সটি আটকা পড়ে যায়।

পরে বিকল্প ব্যবস্থায় অ্যাম্বুলেন্সটি জামালগঞ্জ লঞ্চঘাটে নিয়ে এসে বেঁধে রাখা হয়। সেখানেই ধীরে ধীরে তলিয়ে যায় অ্যাম্বুলেন্সটি। পরে সেটিকে লঞ্চঘাটের বৈদ্যুতিক খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়। প্রায় এক বছর ধরে অ্যাম্বুলেন্সটি সুরমা নদীর জামালগঞ্জ লঞ্চঘাটে বাঁধা রয়েছে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলদের অবহেলায় সুরমা নদীতে তলিয়ে যাচ্ছে অ্যাম্বুলেন্সটি।

এদিকে হাওরবেষ্টিত জেলার তাহিরপুর উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের বর্ষায় ‘নাউ হেমন্তে পাও’ অবস্থা। ফলে সড়ক পথের জরাজীর্ণ অবস্থার কারণে বর্ষায় হাওর পাড়ের অবহেলিত জনগোষ্ঠীর চিকিৎসাসেবা দেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে উপহার হিসেবে নৌ-অ্যাম্বুলেন্স দেয়া হয় ১০ বছর আগে। কিন্তু শুরু থেকেই চালক না থাকায় সেটি কোনো কাজেই আসেনি। ফলে এক দিনের জন্যও সেটির ব্যবহার হয়নি।

শুরুতে কয়েক বছর অব্যবহৃত অবস্থায় অ্যাম্বুলেন্সটি তাহিরপুর থানার সামনে রাখা হয়। এরপর থেকে প্রায় পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে হাসপাতালের পুকুরে নিয়ে ফেলে রাখে দায়িত্বশীলরা। এর ফলে রৌদ-বৃষ্টি-ঝড়ে পড়ে থেকে নৌ-অ্যাম্বুলেন্সটির বিভিন্ন অংশ ভেঙে যায়।

দুই বছর আগে সড়ক পথে চলাচলের জন্য একটি সরকারি অ্যাম্বুলেন্স দেয়া হয়। এতে হাওর পাড়ের অবহেলিত জনগোষ্ঠী উন্নত চিকিৎসার জন্য সড়ক পথে সুনামগঞ্জ ও সিলেট যেতে পারছেন সরকার নির্ধারিত ভাড়ায়। ফলে এই নৌ অ্যাম্বুলেন্সটি কেনার টাকা বিফলেই গেছে বলে জানান হাওর পাড়ের মানুষ।

জামালগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মঈন উদ্দিন আলমগীর বলেন, ‘অ্যাম্বুলেন্সটি উদ্ধারের কার্যক্রম চলমান। শিগগিরই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়ে সেটি পুনরায় চালুর ব্যবস্থা করা হবে।’

তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সৈয়দ আবু আহমদ শাফী বলেন, ‘আমি এই হাসপাতালে নতুন যোগ দিয়েছি। অনেক কিছু আমার অজানা। নৌ-অ্যাম্বুলেন্সের বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।’

(ঢাকাটাইমস/১১জুন/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :