দুর্ভিক্ষের কবলে ইথিওপিয়ার উত্তরাঞ্চল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১২ জুন ২০২১, ১১:৫২ | প্রকাশিত : ১২ জুন ২০২১, ০৯:২৬

ইথিওপিয়ার উত্তরাঞ্চলের সংঘাতপ্রবণ টিগ্রাই এলাকার মানুষ দুর্ভিক্ষের কবলে পড়েছে বলে জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা ও দাতা গোষ্ঠীগুলোর একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

শুক্রবার জাতিসংঘের মানবিক ত্রাণ সাহায্য বিষয়ক প্রধান মার্ক লোকক বলেছেন, ওই অঞ্চলে এখন দুর্ভিক্ষ চলছে। সেখানকার পরিস্থিতি দিন দিন আরো খারাপের দিকে যাচ্ছে।

বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, আগামী জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে টিগ্রাই দুর্ভিক্ষের মুখোমুখি মানুষের সংখ্যা বেড়ে ৪ লাখেরও বেশি হয়ে যাবে।

জাতিসংঘের তথ্য মতে, ইথিওপিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় টিগ্রাই অঞ্চলে দুর্ভিক্ষের কারণে ১০ হাজার শিশু মারা যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। জাতিসংঘের সহযোগিতা ও বিভিন্ন সংস্থার উদ্যোগে পরিচালিত ওই সমীক্ষায় দেখা গেছে যুদ্ধ-বিধ্বস্ত অঞ্চলটিতে সাড়ে তিন লাখ মানুষ "গুরুতর সংকটের" মধ্যে বসবাস করছে। ওই অঞ্চলে সরকারি বাহিনী ও বিদ্রোহীদের মধ্যে গত বছরের নভেম্বর মাস থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধের কারণে ১৭ লাখ মানুষ স্থানচ্যুত হয়েছে।

এধরনের বিশ্লেষণকে বলা হয় ইন্টিগ্রেটেড ফেজ ক্লাসিফিকেশন বা আইপিসি। জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা মিলে এই সমীক্ষা প্রতিবেদন তৈরি করে থাকে। এই আইপিসি পর্যালোচনায় দেখা গেছে টিগ্রাই অঞ্চলে খাদ্য সঙ্কট "বিপর্যয়কর" পরিস্থিতিতে চলে গেছে। যার ফলে ক্ষুধা ও মৃত্যু বেড়ে গেছে।

এরকম পরিস্থিতিতে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি এবং শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ সঙ্কট মোকাবেলায় জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে।

তবে এই বিশ্লেষণের সঙ্গে একমত নয় ইথিওপিয়ার সরকার। তারা বলছে, ওই অঞ্চলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতির সাথে সাথে তারা সেখানে মানবিক ত্রাণ সাহায্যের কর্মসূচিও বিস্তৃত করছে। টিগ্রাইয়ের পশ্চিমে বিচ্ছিন্ন কাফতা হোমেরা অঞ্চলের লোকজন বিবিসিকে বলেছে, তারা দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে।

খাওয়ার জন্য আমাদের কিছু নেই, টেলিফোনে বিবিসিকে একথা বলেছেন এক ব্যক্তি। তিনি জানান সাত মাস ধরে চলা যুদ্ধের মধ্যে তাদের ফসল এবং গবাদি পশু লুট হয়ে গেছে।

তিনি বলেছেন, যেসব মিলিশিয়া সরকারি বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ করছে তাদের কাছ থেকে ত্রাণ-সাহায্য নিতেও তাদেরকে বাধা দেয়া হচ্ছে।

এক কৃষক বলেন, যে সামান্য কিছু শস্য আমরা লুকিয়ে রাখতে পেরেছিলাম, সেগুলো খাচ্ছি, কিন্তু এখন আর কিছু নেই।

কৃষক আরো জানিয়েছেন, কেউ আমাদের কোনো ত্রাণ-সাহায্য দেয়নি। প্রায় সবাই এখন মৃত্যুর মুখে। ক্ষুধার কারণে আমাদের চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, পরিস্থিতি খুবই মারাত্মক। মৃত্যু আমাদের দরজায় কড়া নাড়ছে। আমাদের প্রত্যেকের মুখে আপনি ক্ষুধা দেখতে পাবেন।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, তারা ত্রাণ-সাহায্য নিয়ে গাড়ি যেতে দেখেছেন, কিন্তু কেউ তাদের ব্যাপারে খোঁজ খবর নেয়ার কথা ভাবেনি।

এর আগে ১৯৮৪ সালে টিগ্রাই এবং প্রতিবেশী ওল্লো প্রদেশে খরা ও যুদ্ধের কারণে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি হয়েছিল। যাতে ছয় থেকে দশ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছিল বলে ধারণা করা হয়।

সমীক্ষার রিপোর্টে বলা হয়েছে, মে মাস পর্যন্ত ৫৫ লাখ মানুষ খাদ্য সঙ্কটে ভুগেছে এবং সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই পরিস্থিতির আরো অবনতি ঘটবে। তবে এই রিপোর্টে আনুষ্ঠানিকভাবে দুর্ভিক্ষের কথা ঘোষণা করা হয়নি।

(ঢাকাটাইমস/১২জুন/কেএমএস/কেআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

আন্তর্জাতিক বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ

দুই নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিকে গুলি করে হত্যার পর বালিচাপা দিলো ইসরায়েলি সেনারা 

গাজায় যুদ্ধাপরাধে জড়িতদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করতে আইসিসির প্রতি আহ্বান

কলকাতা বিমানবন্দরে চলল গুলি, নিরাপত্তা কর্মীর মৃত্যু

ইসরায়েলের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার আহ্বান জানিয়ে হুমকি পেলেন জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞ

মস্কোতে কনসার্টে হামলা: এখনো প্রায় ১০০ জন নিখোঁজ 

বাবা কোটিপতি, ২০ বছর ধরে জানতই না ছেলে!

গাজা যুদ্ধের ১৭৩তম দিন, প্রাণহানি বেড়ে সাড়ে ৩২ হাজার

মস্কোতে সন্ত্রাসী হামলা: ফের মৃত্যুদণ্ড চালুর আহ্বান রুশ আইনপ্রণেতাদের

দশ বছরে ৬৪ হাজার অভিবাসীর মৃত্যু, বেশিরভাগই সাগরে ডুবে: জাতিসংঘ

৩০ হাজার কোটি রুপি ব্যয়ে মিয়ানমার সীমান্তে বেড়া দেবে ভারত

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :