টিকার দুই ডোজের মধ্যে লম্বা বিরতিতে ঝুঁকি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১২ জুন ২০২১, ১৫:৩০ | প্রকাশিত : ১২ জুন ২০২১, ১৫:১২

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের স্বাস্থ্য বিষয়ক উপদেষ্টা ডা. অ্যান্টনি ফাউসি বলেছেন, করোনা ভাইরাসের টিকার দুই ডোজের মধ্যকার লম্বা বিরতি সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।

শুক্রবার ভারতের সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ডা. ফাউসি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, সম্প্রতি বিশ্বজুড়ে মূল করোনাভাইরাস ছাড়াও এর কয়েকটি অভিযোজিত ধরন বা ভ্যারিয়েন্টের অত্যন্ত সক্রিয় উপস্থিতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এই অভিযোজিত ধরনগুলো বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মূল করোনাভাইরাসের চেয়ে শক্তিশালী।

তিনি আরো বলেন, যদি কোনো ব্যক্তি করোনা টিকার প্রথম ডোজ নেয়ার পর দ্বিতীয় ডোজ নিতে দীর্ঘ বিরতি দেন, সেক্ষেত্রে তিনি করোনার যেকোনো অভিযোজিত ধরনে আক্রান্তের ঝুঁকিতে থাকেন।

ফাউসি বলেন, করোনার টিকা ফাইজারের প্রথম ডোজ ও দ্বিতীয় ডোজের মধ্যকার সঠিক বা আদর্শ বিরতি হলো ৩ সপ্তাহ। মডার্নার ক্ষেত্রে এটি ৪ সপ্তাহ। আপনি যদি টিকার প্রথম ডোজ নেয়ার পর এর চেয়ে বেশি বিরতি নেন, সেক্ষেত্রে করোনার যেকোনো অভিযোজিত ধরনে আক্রান্ত হবার ঝুঁকি বাড়বে। যুক্তরাজ্যে এমনটা দেখা গেছে। প্রচুর মানুষ সেখানে করোনার অভিযোজিত ধরনে আক্রান্ত হয়েছেন। এটি ঘটেছে টিকার দুই ডোজের মধ্যকার দীর্ঘ বিরতির কারণে। এ কারণে আমরা সবাইকে নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে টিকার দুই ডোজ নেয়ার পরামর্শ দেব।

ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার বলছে, দুই ডোজের মধ্যকার দীর্ঘ বিরতিতে মানবদেহে অ্যান্টিবডি বাড়ে বলে গবেষণায় প্রমাণ হয়েছে। তবে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানা যায়, ভারতে টিকার ডোজের তীব্র ঘাটতি দেখা দেয়াতেই এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে সরকার।

এদিকে ভারতে ‘ডেল্টা’ নামে করোনার যে অভিযোজিত ধরন বা ভ্যারিয়েন্ট দেখা গেছে, তা মূল করোনাভাইরাসের চেয়ে ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ বেশি সংক্রামক বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানী ও গবেষকরা। এমনকি গত কয়েক মাসে করোনাভাইরাসের যে ধরনগুলো শনাক্ত হয়েছে, সেগুলোর মধ্যেও সবচেয়ে শক্তিশালী ও বিধ্বংসী ডেল্টা।

ফাউসিও এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ভারতের বেশিরভাগ রাজ্যে করোনাভাইরাসের ডেল্টা ধরন শনাক্ত হয়েছে। করোনাভাইরাসের এই ধরনটি মূল ভাইরাসের তুলনায় অনেক দ্রুত ও নিখুঁতভাবে মানবদেহে সংক্রমিত হওয়ার ক্ষমতা রাখে এবং তা প্রমাণিত। কোনো দেশে যদি ডেল্টা ধরন শনাক্ত হয় তাহলে এখন প্রায় নিশ্চিতভাবেই বলা যায় যে সেখানে খুব দ্রুত উচ্চহারে করোনা সংক্রমণ দেখা দেবে। বিশেষ করে ওই দেশের বেশিরভাগ নাগরিক যদি টিকা না নিয়ে থাকেন।

করোনার দ্বিতীয় ঢেউ থেকে পরিত্রাণের জন্য দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশগুলোকে গণটিকাদান কর্মসূচির ওপর জোর দেয়া প্রয়োজন উল্লেখ করে ফাউসি বলেছেন, যত দ্রুত সম্ভব অধিকসংখ্যক মানুষকে টিকার আওতায় আনা উচিত। যদিও গবেষণায় দেখা গেছে, ডেল্টার সংক্রমণ ক্ষমতা এতই বেশি যে টিকার দুই ডোজ নেয়ার পরও অনেকেই করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তারপরও আমি বলব, মহামারির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এখন পর্যন্ত আমাদের হাতে থাকা সবচেয়ে শক্তিশালী অস্ত্র এটি। বিশ্বের যত বেশিসংখ্যক মানুষকে আমরা টিকার আওতায় আনতে পারব, তত দ্রুত এই মহামারি থেকে মুক্তি মিলবে।

(ঢাকাটাইমস/১২জুন/কেএমএস/কেআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

করোনাভাইরাস বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা