চট্টগ্রামে ৬ তলার প্ল্যান নিয়ে ১২ তলা ভবন নির্মাণ স্যানমার প্রপার্টিজের

প্রকাশ | ১২ জুন ২০২১, ১৯:১৭

এম হাশেম তালুকদার, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম নগরীর খুলশীতে ছয় তলার অনুমোদন নিয়ে ‘স্যানমার গ্রান্ডি’ নামে ১২তলা ভবন নির্মাণ করেছে। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) অনুমোদিত প্ল্যান মতে ভবন নির্মাণ করার কথা ছিল ছয় তলা। ভবন নির্মাণে সিডিএ ও গৃহনির্মাণ আইনের তোয়াক্ষা করছে না আবাসন প্রতিষ্ঠান স্যানমার প্রপ্রার্টিজ লিমিটেড।

পাহাড়ের টিলায় অবস্থিত এই ভবনের কারণে ঝুঁকিতে পড়েছেন চট্টগ্রাম নগরীর উত্তর খুলশীর আশপাশের বাসিন্দারা। এ বিষয়ে গত মঙ্গলবার (৮ জুন) সিডিএর স্পেশাল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করা হলে বিষয়টি আমলে নেন আদালত।

মঙ্গলবার নির্মাণাধীন ভবনের প্রতিবেশী মো. শাহাবুদ্দীন আলম স্থানীয় এলাকাবাসীর পক্ষে সিডিএ আদালতে মামলাটি করেন।

মামলায় বিবাদীরা হচ্ছেন, স্যানমার প্রপার্টিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর এম মাসুক হক, প্রজেক্ট ম্যানেজার সেলিম বিন সালেহ, প্রজেক্ট ডিরেক্টর সফিকুর রহমান ও ম্যানেজার (এডমিন) মো. মাইনুল হক। বিচারক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম চৌধুরী বিবাদীদের প্ল্যান অনুমোদনের ডকুমেন্টসসহ আদালতে হাজির হওয়ার আদেশ দিয়েছেন।

মামলা সূত্রে জানা যায়, নগরীর উত্তর খুলশী থানাধীন ইম্পেরিয়াল হিলের ১০৯/সি নম্বর প্লটে ১২তলা ভবনের নির্মাণ কাজ করছে স্যানমার প্রপার্টিজ লিমিটেড। এটি উত্তর খুলশী আবাসিক এলাকার ৪ নম্বর রোডে অবস্থিত।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, ১০-১২ ফুট প্রশস্ত রাস্তায় ছয়তলা ভবনের বেশি চউক থেকে অনুমোদন দেয়া হয় না। অথচ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অগোচরে ১২তলা ভবন নির্মাণ করছে প্রতিষ্ঠানটি। পাহাড়ের ঢালু জায়গার ওপরের অংশে বহুতল ভবন নির্মাণ করায় পাহাড় ধস, ভূমিকম্পসহ যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ফলে আশপাশের অন্তত ১২টি প্লটের মালিক ক্ষতির শিকার হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

এ প্রসঙ্গে মামলার বাদী মো. শাহাবুদ্দীন আলমের পক্ষে আমমোক্তার ও প্রতিনিধি সৈয়দ রাফিদুল আলম বলেন, সিডিএর আইন ও গৃহ নির্মাণ আইন ভেঙে ৬০ থেকে ৭০ ফুট মাটি কেটে তারা এ ভবন নির্মাণ করছেন। সিডিএকে বিভিন্ন সময়ে এ বিষয়ে অভিযোগ দিলেও তাতে কোনো সদুত্তর পাইনি। তাই নিরুপায় হয়ে মামলা করেছি।

স্যানমার প্রপ্রার্টিজ লিমিটেডের সিনিয়র ম্যানেজার (এডমিন) মাইনুল হককে একাধিকবার ফোন করেও পাওয়া যায়নি।

মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. ইয়াসিন আরাফাত সাজ্জাদ বলেন, সামনের দিকে ছয়তলা করলেও পেছনের দিকে ১২তলা ভবন নির্মাণ করছে স্যানমার প্রপার্টিজ।

সিডিএর প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস বলেন, ভবন নির্মাণে কোনো অনিয়ম হলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। ভবন নির্মাণ করতে হলে তিন ফুট জায়গা ক্লিয়ার রাখতে হবে। কিন্তু স্যানমার প্রপার্টিজ পুরো জায়গাটা নিয়ে ফেলছে। তারপর তলা বাড়িয়েছে। সবকিছুর জন্য আমরা তাকে উচ্ছেদ করব।

গত বছরের ২১ সেপ্টেম্বর সিডিএতে অভিযোগ দেন মো. শাহাবুদ্দীন আলম। ওই অভিযোগের পরও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি সিডিএ। পরে পাহাড় ধসের আশঙ্কায় গত ২৯ এপ্রিল খুলশী থানায় একটি জিডিও করেন তিনি।

(ঢাকাটাইমস/১২জুন/কেএম)