সকালে স্যুট-টাইয়ে ঢাকা পড়ে সব

প্রকাশ | ১৪ জুন ২০২১, ১৫:২৬

শাহানাজ খুশি

মডেল তিন্নির কথা মনে আছে? হার্টথ্রব মডেল ছিল! বুড়িগঙ্গা সেতুর নিচে লাশ পড়ে ছিল! সব কিছুই জানা ছিল। কিন্তু কিছুই হয়নি। ক্ষমতার সংস্কৃতি সবচেয়ে আলোকিত সময়কে আড়াল করে!

 

পরীমনি কয়টা প্রেম করবে, কয়টা বিয়ে করবে, কয়টা ডিভোর্স করবে, কার সাথে ডেট করবে, কে প্রিয় হবে, কাকে ঘৃণা করবে এটা একান্ত পরীমনির বিষয়। অনেক বড় বড় ক্ষমতাধরদের সন্তানরা বিদেশে বসে কি করছে, তা সবাই না জানলেও, কেউ কেউ জানে। মিডিয়ার মানুষদের জীবন তো আপনাদের মতো হবে না। তাদের হাসি/কান্না/সৌন্দর্য্য/আনন্দ/পছন্দ একটু হলেও অন্য বোধের জন্যই তো ভিন্ন ভিন্ন চরিত্র রুপায়ন করতে পারে। আপনাদের বিকৃত রুচির খোরাক তারা নয়, এটা বুঝতে হবে!

 

যে দেশে করোনায় হাজারো মানুষ কর্ম হারা। পরিবারের নিকটজনকে হারিয়ে দিশেহারা, হাসপাতালগুলোতে রোগী আর রোগীর স্বজনদের নানান অসামন্জস্যতায় দিশেহারা অবস্থা, সে দেশে রাতের বেলা স্ট্যাটাস ক্লাবগুলো আলোকিত হয় সন্ধ্যে থেকে ভোর পর্যন্ত। টাকা এবং ক্ষমতা ব্যবহারে মরিয়া হয়ে উঠে সুইট ভাইয়ারা! এদের কোনো বদনাম নাই! স্ত্রী-সন্তান রেখে যারা ক্লাবে/বাগান বাড়িতে রোজ অসভ্যতা উগরে দেয়,তাদের জন্য কোনো আইন/বদনামী নাই! সকালে স্যুট-টাইয়ে ঢাকা পড়ে সব।

 

দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নের সাথে সাথে যদি মানবিক প্রবৃত্তিগুলোর উন্নয়ন না হয়, তাহলে সবটাই বৃথা আসলে। মানুষ ছাড়া রাস্ট্রীয় আভ্যন্তরীন কোনো অবয়ব হয় কি? সে মানুষ যদি পঁচে যায়/গলে যায়, তবে দেশ অসুস্থ হবে বইকি। সে পঁচা-গলা দুর্গন্ধে সবাই আক্রান্ত হবে,তা হোক আজ,না হয় কাল।

 

পরীমনির ঘটনার সুষ্টু তদন্ত হোক, দোষী যত ক্ষমতাধর হোক আইন তাকে চিনে নিক, এটা বিনীত প্রার্থনা। ক্ষমতাধর, বীরপুরুষ, ঘোর লাগা সুইট ভাইয়াদের প্রতি আকুল আবেদন, ক্ষমতা, পেশীশক্তি, কিম্বা টাকা দিয়ে নয়, প্রেম দিয়ে মানুষ/সম্পর্ক অর্জন করেন! নতুবা আইন আপনাকে আজ চিনতে না পারলেও, আম-জনতা ঠিকই চিনে রাখছে, প্রতিদান দিতে তারা ছাড়বে না! হয়তোবা দুদিন দেরি হবে!

 

লেখক: অভিনয়শিল্পী

 

ঢাকাটাইমস/১৪জুন/এসকেএস