ফরিদপুরে সরকারি ঘরের অপেক্ষায় ১৫৭২ পরিবার

ফরিদপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৬ জুন ২০২১, ১৮:১৪

সরকার ঘোষিত ‘মুর্জিব শতবর্ষে থাকবে না কেনো গৃহহীন’ কর্মসূচিতে ‘সরকারের আশ্রয়ণ প্রকল্পের-২’-এর আওতায় এবার ফরিদপুরের ১৫৭২ পরিবারের ঘরের অভাব ঘুচবে। আগামী ২০ জুন সারা দেশের সঙ্গে একযোগে ঘরগুলো হস্তান্তর করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এই প্রকল্পের অধীনে জেলার নয়টি উপজেলায় গৃহহীনদের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে ১৫৭২টি ঘর। এগুলোর বেশিরভাগই নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়েছে। আর এই কাজ তদারকিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। দ্বিতীয় পর্যায়ে ঘর পাওয়ার অপেক্ষার প্রহর গুণছেন সুবিধাভোগীরা। ইতোমধ্যেই এই সুবিধা ভোগীদের চূড়ান্ত তালিকা প্রস্তুত করেছে স্থানীয় প্রশাসন।

ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার জানান, ‘মুজিব শতবর্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অসহায় পরিবারের জন্য উপহার স্বরুপ এসব আশ্রয়স্থল করে দিচ্ছেন। বিভিন্ন উপজেলাতে উপকার ভোগীদের মাঝে এই ঘর প্রাপ্তির খবরে আনন্দের ঝিলিক দেখতে পেয়েছি, তাদের এই আনন্দ অশ্রু আমাদের আগামীর পথচলায় প্রেরণা হয়ে থাকবে। আমাদের কর্মীরা দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছে কাজটিকে এগিয়ে নিতে।’

তিনি বলেন, ‘প্রথম পর্যায়ে ঘর দেয়া হয়েছে দুই হাজার ৩৫টি পরিবারকে। এবার দ্বিতীয় পর্যায়ে দেয়া হবে ১৫৭২টি।’

ফরিদপুর জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ‘আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর আওতায় প্রতিটি ঘরের জন্য বরাদ্দ এক লাখ ৯০ হাজার টাকা। এই টাকায় তাদের জন্য ২০ ফুট বাই ২২.৮ ফুট প্রস্থের পাকা ঘরে রয়েছে দুটি কক্ষ, একটি রান্না ঘর, টয়লেট ও সামনে খোলা বারান্দা। এছাড়াও রয়েছে বিশুদ্ধ খাবার পানি ও বিদ্যুতের ব্যবস্থা। তবে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এবারের বিশেষ সংযোজন করা হয়েছে প্রতিটি ঘরের সামনে চারটি করে ফলজ বৃক্ষ রোপণ।’

ফরিদপুর সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক মোল্লা সরকারের এই উদ্যোগের বিষয়ে বলেন, ‘গৃহহীন-হতদরিদ্রদের নিয়ে এর আগে কোনো সরকার এরকম ভাবেনি। এই কাজ সারা বিশ্বের জন্য মডেল হবে।’

তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু যেভাবে দেশ নিয়ে ভেবেছেন, আজ তার কন্যা সে দেশের দরিদ্র মানুষগুলোকে নিয়ে ভাবছেন।’

আলফাডাঙ্গা উপজেলায় ৩৩ একর জমির উপর নির্মিত হচ্ছে ‘স্বপ্ন নগর’। এই উপজেলার নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) তৌহিদ এলাহী জানান, দেশের মধ্যে অন্যতম মডেল হিসেবে আলফাডাঙ্গার এ আশ্রয়ন প্রকল্পটি ধরা হচ্ছে। ৩৩ একর জমির উপর এ প্রকল্পটির নাম দেয়া হয়েছে ‘স্বপ্ন নগর’।

তিনি জানান, ‘এটি শুধুমাত্র আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর নির্মাণই নয়, এখানে থাকছে কমিউনিটি হাসপাতাল, স্কুল, মসজিদ-মাদ্রাসা, মন্দির, হাট-বাজার, কবরস্থান, খেলার মাঠ, বিনোদন কেন্দ্রসহ বসবাসকারীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা। এ স্বপ্ন নগরে ২৫০টি ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে, যা সারাদেশের মধ্যে মডেল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।’

এই প্রকল্পের ঘর পাওয়া রাসেল-স্বপ্না দম্পতি বলেন, ‘তিন বার মধুমতি নদী ভাঙনে বসতবাড়ি নদীরগর্ভে চলে গেছে। কোনো উপায় না পেয়ে সরকারি রাস্তার পাশে ঘর করে বসবাস করতাম। কখনো কল্পনা করিনি আবার নিজেদের ঘর হবে। সরকার প্রধানকে আল্লাহ বাঁচিয়ে রাখুক। আমরা অনেক খুশি।’

স্বপ্ন নগরের আরেক নতুন বাসিন্দা সুনিল রায় ও যমুনা দম্পতি তাদের ভগবানের কাছে শেখ হাসিনার জন্য আশির্বাদ জানিয়ে বলেন, ‘বিয়ের পর থেকেই আমরা ভাড়া বাড়িতে থাকতাম। এখন নিজের ঘর ও জমি পেয়েছি, এর চেয়ে খুশি আর কিভাবে হওয়া যায়।’

এদিকে ফরিদপুর সদর উপজেলার ইউএনও মাসুম রেজা বলেন, ‘বৈরী আবহাওয়ার মধ্যেও আমরা চেষ্টা করেছি কাজের মান ঠিক রাখতে। এ কারণে দৈনন্দিন কাজের মাঝেও খেয়াল রাখতে হচ্ছে সব সময়।’

তিনি বলেন, ‘এতো কষ্ট করার পরে যখন হতদরিদ্র এই সুবিধাভোগীদের মুখে হাসি দেখি তখন আমাদের সব কষ্ট দূর হয়ে যায়।’

(ঢাকাটাইমস/১৬জুন/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :