ফতুল্লায় ১২ দিনেও কমেনি জলাবদ্ধতা

প্রকাশ | ১৬ জুন ২০২১, ১৯:৫৮

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা ইউনিয়ন পরিষদবাসী আকাশে কালো মেঘ দেখলে চিন্তায় থাকে। প্রায় ১২ দিন ধরে বৃষ্টির কারণে জমে থাকা জলাবদ্ধতার সঙ্গেই মানবেতর জীবনযাপন করছে সেখানকার লোকজন। এ কষ্টের যেনো শেষ নেই।

বৃষ্টি হলো প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের আধার। কিন্তু বৃষ্টি হলেই আতঙ্কে থাকে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা ইউনিয়নবাসী। বৃষ্টি ছাড়াই সেই ইউনিয়নটির কিছু কিছু জায়গায় জলাবদ্ধতা থাকে সারা বছর। সামান্য বৃষ্টি হলে সড়কগুলোর প্রধান যানবাহন হিসেবে ব্যবহৃত হয় নৌকা। দেখে বোঝা মুশকিল সেটি কী? সড়কপথ নাকি নৌপথ? জমে থাকা বৃষ্টির পানির সঙ্গে বিভিন্ন শিল্প কারখানার বর্জ্যসহ দূষিত পানি মিশে বসবাস অযোগ্য হয়ে পড়ছে। সেই সঙ্গে নানা ধরনের পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে ইউনিয়নবাসী।

ইউনিয়নটির মধ্যে কুতুবপুর, দেলপাড়া, লালপুর, পৌষার পুকুরপাড়সহ বেশ কয়েকটি এলাকার মানুষ পানিবন্দি হয়ে জীবনযাপন করছে প্রায় ১২ দিন ধরে। প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমেই এ রকম জলাবদ্ধতার মুখোমুখি হতে হয় সেখানকার লোকজনের।

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ ফতুল্লা ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান স্বপন বলেন, ‘জলাবদ্ধতা দীর্ঘ দিনের সমস্যা। আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করছি এই জলাবদ্ধতা কীভাবে দূর করা যায়।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের ফতুল্লা ইউনিয়নের জন্য দুটি পাম্প স্থাপন করা হয়েছে। সেই পাম্পগুলো চলছে। গত বছরের তুলনায় এবার পানির পরিমান বেশি হচ্ছে। কারণ, নারায়ণগঞ্জের সিটি করপোরেশনের একটি ড্রেন, যা আমাদের ফতুল্লার ইসডাইর দিয়ে সংযুক্ত হয়েছে। সেই সংযুক্ত হওয়ার কারণে নারায়ণগঞ্জের সিটি করপোরেশনের পানি আমাদের এখানে চলে আসছে।’

‘আরেকটি হলো এনায়েতনগর ইউনিয়নের বাঁধ ওভার হয়ে আমার এলাকায় পানি ঢুকে পড়ছে। এই দুটি কারণে আমাদের যে সীমিত পানি ছিল, সেই পানিটা আমরা প্রতি বছরই পাম্পিং করে নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করে থাকি। কিন্তু এই দুটি কারণে অতিরিক্ত পানিগুলো কমানো সম্ভব হচ্ছে না। ইতিমধ্যে আমরা একটি পাম্প বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আশা করি আগামী সাতদিনের মধ্যে আমাদের যে পানির সমস্যা তা থেকে মুক্ত হবো।’

নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ্ বলেন, ‘অতিবৃষ্টির কারণে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হচ্ছে। সাধারণ মানুষের চলাফেরাতে অনেক সমস্যা হচ্ছে। বিশেষ করে বিসিক শিল্পনগরীতে পানি এক থেকে দুই ফুট  নিচে চলে গেছে। ইতোমধ্যে এই সমস্যা সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট  উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দিয়েছি। অতিরিক্ত দুটি পাম্প আমরা সেখানে দিয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘উপজেলা নির্বাহী কর্মকতাকে নির্দেশনা দিয়েছি সেখানে আরও একটি পাম্প দিতে। আমরা যতটুকু জেনেছি যে ফতুল্লা ক্যানেলের একটি পথ বন্ধ রয়েছে এবং সেখানে কিছু অবৈধ দখলদার রয়েছে। আমরা সরজমিনে পরিদর্শন করে এই পানি রোধ করার জন্য কর্মকৌশল নির্ধারণ করবো এবং তা বাস্তবায়ন করব। জেলা প্রশাসন নারায়ণগঞ্জ এ বিষয়ে কাজ করছে।’

(ঢাকাটাইমস/১৬জুন/কেএম)