করোনার যুগান্তকারী চিকিৎসা আবিষ্কার!

প্রকাশ | ১৬ জুন ২০২১, ২২:৩৩ | আপডেট: ১৬ জুন ২০২১, ২২:৩৯

ঢাকাটাইমস ডেস্ক

সস্তা স্টেরয়েড ওষুধ করোনাভাইরাসে মৃত্যু ঠেকাতে পারে, এই আবিষ্কারের ঠিক এক বছর পর গবেষকরা এখন বলছেন, তারা নতুন একটি জীবন রক্ষাকারী চিকিৎসার পথ খুঁজে পেয়েছেন। বেশ ব্যয়বহুল এই চিকিৎসায় রোগ প্রতিরোধব্যবস্থাকে জোরদার করার বদলে স্যালাইনের মাধ্যমে শক্তিধর অ্যান্টিবডি মানবদেহের শিরায় ঢুকিয়ে দেয়া হয়, যা ভাইরাসকে পরাস্ত করতে পারে।

হাসপাতালের পরীক্ষায় দেখা গেছে, কোভিডে মারাত্মকভাবে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে প্রতি তিনজনের একজন এতে সেরে উঠেছে। এই চিকিৎসা দিয়ে করোনায় আক্রান্ত প্রতি ১০০ জন সাধারণ রোগীর মধ্যে ছয়জনের জীবন রক্ষা করা সম্ভব হবে বলে বিশেষজ্ঞরা হিসেব করে দেখেছেন।

যুগান্তকারী চিকিৎসা

তবে যেসব রোগীর দেহে ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করার মতো যথেষ্ট অ্যান্টিবডি তৈরি হয় না শুধু তাদেরই এই চিকিৎসা দেয়া হয়। এর খরচ পড়ে এক হাজার থেকে দুই হাজার ডলার।

৩৭ বছর-বয়সী কিম্বারলি ফেদারস্টোন এই চিকিৎসার মেডিকেল ট্রায়ালে অংশ নিয়েছিলেন। তিনি বলছেন, ‘আমার ভাগ্য ভাল যে করোনা হওয়ার পর আমাকে যখন হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ততদিনে এই পরীক্ষা চালু হয়ে গিয়েছিল। এবং এই যুগান্তকারী পরীক্ষাটিতে আমি অংশ নিতে পেরেছিলাম।’

এই চিকিৎসার নাম মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি ট্রিটমেন্ট। এটি উদ্ভাবন করেছে রিজেনারন নামে একটি প্রতিষ্ঠান।

এর ওষুধ করোনাভাইরাসের কোষকে ঘিরে ধরে। এর ফলে দেহের অন্য কোন কোষে করোনাভাইরাস আর সংক্রমিত হতে পারে না এবং সংখ্যায়ও বাড়তে পারে না।

ব্রিটেনের বিভিন্ন হাসপাতালের প্রায় ১০ হাজার করোনা রোগীর ওপর এই চিকিৎসার পরীক্ষা চালানো হয়।

এই চিকিৎসা পরীক্ষায় যে দু‌'জন নেতৃত্ব দিয়েছেন তাদের একজন হলেন স্যার মার্টিন ল্যানড্রে। তিনি বলছেন, ‘দুই ধরনের অ্যান্টিবডি মিশিয়ে স্যালাইনের মাধ্যমে শিরায় প্রবেশ করানো হলে কোভিড রোগীর মৃত্যুর সম্ভাবনা এক পঞ্চমাংশ কমে যায়।’

চরম অনিশ্চয়তা

হাসপাতালের ট্রায়ালে প্রদাহ-বিরোধী স্টেরয়েড ওষুধ ডেক্সামাথাসোনের পাশাপাশি রোগীদের ওপর নতুন এই চিকিৎসা প্রয়োগ করা হয়। এই পরীক্ষার দ্বিতীয় প্রধান গবেষক স্যার পিটার হরবি বলছেন, অ্যান্টিবডি চিকিৎসা আসলে কতটা কার্যকর হবে তা নিয়ে চরম অনিশ্চয়তা ছিল। কারণ কোন কোন পরীক্ষায় দেখা গেছে যে এটা খুব একটা সুফল বয়ে আনে না। করোনা রোগীদের রক্ত থেকে প্লাজমা সংগ্রহ করে কোভিড চিকিৎসাতেও আশানুরূপ ফল পাওয়া যায়নি।

কিন্তু এই নতুন চিকিৎসার রিকভারি ট্রায়ালে ল্যাবরেটরিতে তৈরি দুটি সুনির্দিষ্ট অ্যান্টিবডির মিশ্রণ রোগীর দেহে ঢোকানো হয় যেগুলো করোনা ভাইরাসের কোষে আটক যায়।

স্যার পিটার বলছেন, ‘কোভিড-১৯ এর মারাত্মক অবস্থাতেও রোগী দেহে ভাইরাসের বিরুদ্ধে যে এই চিকিৎসা কার্যকর এটা খুবই খুশির খবর।’ সূত্র: বিবিসি বাংলা

(ঢাকাটাইমস/১৬জুন/জেবি)