দুর্ভোগ কমাতে গাজীপুর-ঢাকা রুটে বিশেষ ট্রেন সার্ভিস

প্রকাশ | ১৭ জুন ২০২১, ১২:৫৪ | আপডেট: ১৭ জুন ২০২১, ১৩:৪১

নগর প্রতিবেদক, গাজীপুর

গাজীপুরের জয়দেবপুর চৌরাস্তা থেকে বিমান বন্দর পর্যন্ত চলমান বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের নির্মাণ কাজের ধীরগতিতে সড়কটিতে চলাচলকারী যাত্রী ও সাধারণ মানুষের ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে। এ অবস্থায় সড়কটি দিয়ে চলাচলকারী মানুষের দুর্ভোগের বিষয়টি ভেবে গাজীপুরের জয়দেবপুর রেল স্টেশন থেকে ঢাকার কমলাপুর স্টেশন পর্যন্ত বিশেষ ট্রেন সার্ভিস চালু করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

আগামী রবিবার থেকে বিশেষ এই ট্রেন চলাচল করবে। বুধবার রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেয়া এক পোস্টের মাধ্যমে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল এ তথ্য জানান।

প্রতিমন্ত্রী ফেসবুকে লিখেছেন, গাজীপুর চৌরাস্তা থেকে এয়ারপোর্ট পর্যন্ত রাস্তাটিকে যানজট মুক্ত করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিআরটি প্রজেক্ট উপহার দিয়েছেন। তবে ঠিকাদারদের ক্রমাগত দায়িত্বজ্ঞানহীনতার কারণে অনেক বছর ধরে ধীর গতিতে কাজ করায় মানুষের দুর্ভোগের কোনো সীমা নেই। বর্ষাকালে এই দুর্ভোগ কয়েকগুণ বৃদ্ধি পায়।

‘বিআরটি প্রজেক্টে দায়িত্ব পালনরত সচিব, পিডিসহ সবাইকে প্রায় প্রতিদিনই কয়েকবার করে ফোন করছি যাতে টঙ্গী গাজীপুরবাসীসহ এই সড়ক দিয়ে যাতায়াতকারী প্রায় ৩৭ জেলার মানুষ দুর্ভোগের হাত থেকে দ্রুত মুক্তি পায়। সিটি করপোরেশন, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ, জেলা প্রশাসনসহ সবাই আন্তরিকভাবে চেষ্টাও করছেন। উপরন্তু গাজীপুর যাওয়ার সব বিকল্প রাস্তাগুলোতে একসঙ্গে কাজ চলমান থাকায় দুর্ভোগ আরও বেড়ে গেছে।’

রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজনের প্রতি ধন্যবাদ ও  কৃতজ্ঞতা জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী লিখেন, ‘এই দুর্ভোগের হাত থেকে সাধারণ মানুষকে মুক্তি দিতে বুধবার (১৬ জুন) রাতে রেলমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে আগামী রবিবার থেকে গাজীপুর থেকে টঙ্গী হয়ে ঢাকা এবং ঢাকা থেকে টঙ্গী হয়ে গাজীপুর পর্যন্ত বিশেষ ট্রেন সার্ভিস চালুর উদ্যোগ নিয়েছি।’

অন্যদিকে গাজীপুরের মানুষের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে গাজীপুর থেকে টঙ্গী পর্যন্ত একটি বিকল্প সড়ক নির্মাণ করছে গাজীপুর সিটি করপোরেশন।

সিটি করপোরেশনের নিমতলী ব্রিজ থেকে টঙ্গীর বনমালা রেল গেইট এবং বনমালা রোড থেকে বনমালা রেলব্রিজ পর্যন্ত সড়কের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। পবিত্র ঈদুল আজহার আগেই সড়কটি যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হতে পারে বলে আশা প্রকাশ করেছেন গাজীপুরের মেয়র জাহাঙ্গীর আলম।

প্রতিদিন তিনি সশরীরে উপস্থিত থেকে সড়কটির নির্মাণ কাজ তদারকি করছেন।

২০১২ সালে গাজীপুর থেকে রাজধানীর বিমানবন্দর পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার সড়কে গ্রেটার ঢাকা সাসটেইনেবল আরবান ট্রান্সপোর্ট প্রজেক্টের (বিআরটি, গাজীপুর-এয়ারপোর্ট) আওতায় দেশের প্রথম বাস র‍্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্প শুরু হয়। দুই হাজার ৪০ কোটি টাকা ব্যয়ের এ প্রকল্প ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা ছিল। পরে মেয়াদ ২০১৮ সালের ডিসেম্বর করা হয় এবং ব্যয় দ্বিগুণ বেড়ে দাঁড়ায় চার হাজার ২৬৪ কোটি ৮২ লাখ ১৪ টাকা।

এরপর আরও দুই দফা প্রকল্পের সময় বাড়িয়ে ২০২২ সালের জুনে শেষ করার কথা রয়েছে। ব্যয় ধরা হয়েছে চার হাজার ২৬৮ কোটি ৩২ লাখ টাকা। সরকারের পাশাপাশি এডিবি, ফরাসি উন্নয়ন সংস্থা (এএফডি) ও গ্লোবাল এনভায়রনমেন্ট ফ্যাসিলিটি (ডিইএফ) অর্থায়ন করছে।

প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ইতোমধ্যে প্রকল্পের ৫৫ ভাগ কাজ শেষ হয়ে গেছে। টঙ্গী কলেজ গেট থেকে চান্দনা চৌরাস্তা পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশে চার লেনের রাস্তার কাজ আগামী এক মাসের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে।

(ঢাকাটাইমস/১৭জুন/কেএম)