কাপাসিয়ার রাস্তাটির বেহাল অবস্থা, চরম জনদুর্ভোগ

কাপাসিয়া (গাজীপুর) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১৭ জুন ২০২১, ১৪:১৬ | প্রকাশিত : ১৭ জুন ২০২১, ১৪:১০

গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার তরগাঁও ইউনিয়নের বাঘিয়া খালেরঘাট হতে দরদরিয়া গ্রামে যাওয়ার পানি উন্নয়ন বোর্ডের একমাত্র রাস্তাটির বেহালদশা। কাঁচা মাটি দিয়ে তৈরি এ রাস্তাটি স্বাধীনতার পর আর উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। প্রতিবছর পানি উন্নয়ন বোর্ড বর্ষা মৌসুমে এ রাস্তাটির সংস্কারের বরাদ্দ থাকলেও বরাদ্দের টাকা কোথায় যায় তা কেউ জানে না। ফলে রাস্তাটির অবস্থা দিনের পর দিন চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।

১৫ ফুট প্রস্থ তিন কিলোমিটার রাস্তাটির বেহাল দশায় জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের বাড়ি যাবার একমাত্র প্রধান রাস্তা ছিল এটি। এখন এই রাস্তায় পায়ে হেঁটে চলাচলের মতো অবস্থা নেই। রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন কয়েকটি গ্রামের প্রায় দুই হাজার মানুষ যাতায়াত করে। কাঁচা এই রাস্তাটির বিভিন্ন জায়গায় বৃষ্টিপাতের কারণে বড় গর্তের সৃষ্টি হয়ে কাঁদা মাটিতে একাকার হয়ে গেছে।

ঘন বর্ষার সময় কাদায় শিশু ও বয়স্কদের জন্য এই রাস্তায় চলাচল করা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। ফলে স্বাভাবিকভাবে চলাচলের আর উপায় থাকে না। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা নিয়মিত বিদ্যালয়ে যেতে পারে না এই অচলাবস্থার কারণে।

এলাকাবাসী জানান, গত ৩০ বছরে এই তিন কিলোমিটার কাঁচা রাস্তায় এক ডালি মাটিও পড়েনি। বর্ষাকালে এ রাস্তায় কর্দমাক্ততার কারণে হাঁটাও দায় হয়ে পড়েছে। তবুও কর্দমাক্ত পিচ্ছিল এ রাস্তা দিয়েই প্রতিদিন এই এলাকার মানুষ ঝুঁকি নিয়েই যাতায়াত করছে।

কর্দমাক্ত রাস্তা পাড়ি দিয়েই হাট-বাজারে যেতে হয় এলাকাবাসীকে। নির্বাচন এলেই জনপ্রতিনিধিরা এ রাস্তাটি পাকাকরণের প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু নির্বাচনের পরে আর কেউ এর খোঁজ রাখেন না।

এলাকার বাসিন্দা মো. মনির হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, নেতা আসে নেতা যায়, কিন্তু এ রাস্তা পাকা হয় না। বর্ষা এলে প্রতিবছরই এ রাস্তা দিয়ে চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে পড়ে। হাঁটুসমান কাদামাটি পেরিয়েই এ রাস্তা দিয়ে যেতে হয়।

এলাকাবাসী জানায়, জনপ্রতিনিধি বদলায় কিন্তু বদলায় না আমাদের এলাকার দুর্ভোগের চিত্র। ফলে এই এলাকার চাষীরা উৎপাদিত ফসল বাজারজাত করণ নিয়েও পড়েন বিপাকে এছাড়া কেউ হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে চিকিৎসা সেবা দেয়া সম্ভব হয় না তাদের। কাপাসিয়া উপজেলা প্রশাসনের নিকট এলাকাবাসীর প্রাণের দাবি, শত বছরের পুরোনো এই রাস্তাটি চলাচলের উপযোগী করে দেয়া হোক।

এদিকে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় সামান্য মাটি কাজ করলেও বৃষ্টি হলে আবার আগের অবস্থা হয়ে যায়। বৃষ্টি না হলে কোনোভাবে পায়ে হেঁটে চলা যায়। কিন্তু বর্ষাকাল এলে যানবাহন চলাচল দূরের কথা হেটে চলা অসম্ভব হয়ে যাবে। তাই ভুক্তভোগী এলাকাবাসী রাস্তাটি সংস্কারের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবি জানিয়েছেন।

দীর্ঘদিন কোনো সংস্কার না করায় এই কাঁচা রাস্তাটি বর্ষা মৌসুমে তা হাবড়ে (গভীর কাদা) পরিণত হওয়ায় একেবারেই চলাচলের অযোগ্য হয়ে যায়। রাস্তার মাটি এঁটেল হওয়ায় এবং ট্রাক্টর ও পাওয়ার টিলার চলাচল করায় হেঁটে চলাচল প্রায় অসম্ভব হয়ে উঠেছে এই রাস্তা দিয়ে। বর্তমানে এই রাস্তায় স্থানভেদে দুই থেকে তিন ফুট পর্যন্ত কাদার গভীরতা রয়েছে।

গ্রামের বাসিন্দা সিরাজ উদ্দিন সিকদার (হিরন) জানান, বর্ষা মৌসুমে মাত্রাতিরিক্ত কাদার কারণে কোনো যানবাহন এই রাস্তায় চলাচল করে না। তাই কোনো আত্মীয়স্বজনও এই গ্রামে আসতে চায় না।

তিনি বলেন, গভীর রাতে প্রসবব্যাথা উঠলে রাস্তায় কাদার কারণে যানবাহন না থাকায় কাঁধে করে নিয়ে যেতে হয় অন্তঃসত্ত্বাকে। এতে গর্ভের শিশুর মৃত্যুও হতে পারে।

রাস্তাটি সংস্কার ও পাকাকরণের ব্যাপারে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আমানত হুসেন খান বলেন, যেকোনো কারণেই হোক রাস্তাটি করা সম্ভব হয়নি। তবে তিনি আশা প্রকাশ করেন, চলতি অর্থবছরের মধ্যে সংসদ সদস্যের সহযোগিতায় রাস্তাটি পাকা করা সম্ভব হবে।

(ঢাকাটাইমস/১৭জুন/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :