ঘুমানোর আগে পানি পানে যে ক্ষতি...

স্বাস্থ্য ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২০ জুন ২০২১, ১০:০২

আমাদের বেঁচে থাকার ক্ষেত্রে পানি একটি অপরিহার্য উপাদান। শরীরের ৭০ শতাংশই পানি দিয়ে তৈরি। এটি প্রতিটি কোষ, টিস্যু এবং অঙ্গে উপস্থিত থাকে। পানি আমাদের শরীরের তাপমাত্রা বজায় রাখতে সহায়তা করে, আমাদের জয়েন্টগুলিকে তৈলাক্ত করে, শরীরের কোষগুলোকে বাড়তে সহায়তা করে এবং টক্সিন বের করে দেয়।

সুস্বাস্থ্যের জন্য পানি পান করা জরুরি। এটি শরীরের কার্যক্রমকে ভালো রাখতে সাহায্য করে। খাবার না খেয়ে হয়তো ৪০ দিন পর্যন্ত থাকা যায়, তবে পানি ছাড়া বাঁচা অসম্ভব! পানি খাওয়ার ফলে শুধু আমাদের তেষ্টাই মেটে না, সেই সঙ্গে শরীরে পানির মাত্রা বা ভারসাম্যও বজায় থাকে। পানি কম খেলে যেমন শরীরে নানা সমস্যা দেখা দেয়, তেমনই যখন তখন পানি খেলেও কিন্তু মারাত্মক বিপদ হতে পারে!

আপনি যদি সারাদিন পর্যাপ্ত পানি পান না করেন, তবে দুর্বল বোধ করতে পারেন, মাথাব্যথা এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যগত সমস্যা অনুভব করতে পারেন।

খাবার খাওয়ার সময় ঘন ঘন পানি খেলে হজমে সহায়ক এনজাইম এবং অ্যাসিডগুলির কর্মক্ষমতা কমে যায়। ফলে খাবার হজম হতে সমস্যা হয়। এই অভ্যাস যদি দীর্ঘদিনের হয় সেক্ষেত্রে বদহজমের সমস্যা শরীরে বাসা বাঁধবে। ভুল সময়ে পানি খেলে শরীরে কী কী সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে আসুন জেনে নেওয়া যাক।

ভারি খাবার, যেমন ব্রেকফাস্ট, লাঞ্চ অথবা ডিনারের পরে পানি খাওয়াটা একেবারেই স্বাস্থ্যকর অভ্যাস নয়। খাওয়ার আগে পানি খেলেও খাওয়ার পরে পানি খাওয়া একবারেই খাওয়া চলবে না। আর খাবার খাওয়ার সময় ঘন ঘন পানি খাওয়ার অভ্যাস একবারেই বর্জন করুন।

একটি নির্দিষ্ট সময় আছে যখন আপনার পানি পান এড়ানো উচিত এবং সেটি ঠিক রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে। এটি দিনের একমাত্র সময় যখন আপনি পানি পান থেকে বিরত থাকার কাজটি করতে পারেন। এবং এই পানি পান না করার বিষয়টিও যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ।

ঘুমোতে যাওয়ার ঠিক আগে পানি পান করা আপনার ঘুমচক্রে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। এটি রাতে প্রস্রাবের জন্য আপনার বাথরুমের তাড়া বাড়িয়ে দিতে পারে। এতে করে ঘুম ব্যহত হলে পরের দিন মুড সুইং, শরীর জ্বালা, উচ্চ রক্তচাপ, খিটখিটে মেজাজের কারণ হতে পারে। একটি সমীক্ষা অনুসারে, ৪৫ বছরের বেশি বয়স্ক প্রাপ্ত বয়স্করা যারা রাতে ছয় ঘণ্টারও কম ঘুমাতেন তাদের স্ট্রোকের ক্ষেত্রে স্ট্রোকের ঘটনা বেশি।

রাতের খাবার খাওয়ার পরে এক বা দুই গ্লাস পানি পান করলে তা নানাভাবে স্বাস্থ্যের উপকার করে। ভারি খাবার বা অধিক মশলাযুক্ত খাবার খাওয়ার পরে হালকা গরম পানির চেয়ে ভালো আর কিছু নেই। পানি প্রাকৃতিক ক্লিনার হিসাবে কাজ করে এবং শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ দূর করতে সহায়তা করে। এটি হজম প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূরে রাখে।

পর্যাপ্ত পানি পান করা স্বাস্থ্যের পক্ষে সর্বদা ভালো, তবে এটির পাশাপাশি ঝুঁকি রয়েছে বলে এটি অতিরিক্ত পানি পান করা থেকে বিরত থাকুন। প্রতিদিন কমপক্ষে ২ লিটার পানি পানের চেষ্টা করুন।

সকালে খালি পেটে এক গ্লাস বা আড়াইশ মিলিলিটার পানি পান করতে হবে। খাওয়ার ঠিক পরপরই পানি খাওয়া যাবে না। বরং পুরো খাওয়ার মাঝে এক কাপ পরিমাণ বা দেড়শ মিলিলিটার পানি পান করতে হবে, চুমুকে চুমুকে। দুপুরের খাওয়ার পর থেকে রাতে ঘুমানোর আগ পর্যন্ত এক ঘণ্টা পরপর এক’দুই চুমুক পানি পান করা উচিত।

পানি মুখে নিয়ে ৫ থেকে ১০ সেকেন্ড রেখে তারপর গলধঃকরণ করবেন। সবসময় ফুটানোর পানি পান করতে হবে। ফুটানোর ১২ ঘণ্টা পর ওই পানি পান না করাই ভালো। পানি পর্যাপ্ত পরিমাণে পান করতে, কুসুম গরম পানি পান করতে হবে, এবং ধীরে পান করতে হবে। ঘুমাতে যাওয়ার ঠিক আগে পানি পান এড়িয়ে চলুন। একটি ভালো মানের ঘুমের জন্য ঘুমাতে যাওয়ার ঠিক আগে নয়, অন্তত ত্রিশ মিনিট আগে পানি পান করুন।

(ঢাকাটাইমস/২০জুন/আরজেড/এজেড)

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফিচার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

ফিচার এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :