ডা. তৌফিকের মৃত্যুতে তিন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা

প্রকাশ | ২০ জুন ২০২১, ১৬:২৯ | আপডেট: ২০ জুন ২০২১, ২০:৩১

আদালত প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
ডা. তৌফিক এনাম (ফাইল ছবি)

অবহেলাজনিত কারণে এভারকেয়ার হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. তৌফিক এনামের মৃত্যুর অভিযোগ এনে তিন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা করেছে তার পরিবার। গতকাল ঢাকা মহানগর হাকিম রাজেশ চৌধুরীর আদালতে মামলাটি করেন তৌফিক এনামের বাবা সিনিয়র ফিজিওথেরাপিস্ট আক্তারুজ্জামান মিয়া। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ শেষে সিআইডিকে অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।

মামলার আসামিরা হলেন- কাকরাইল ইসলামী ব্যাংক সেন্ট্রাল হাসপাতালের কনসালটেন্ট ল্যাপারোস্কপিক সার্জন প্রফেসর ডা. আবদুল ওহাব খান, ল্যাবএইড হাসপাতালের গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি ডিপার্টমেন্টের ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল এবং বিআরবি হাসপাতালের হেপাটো বিলিয়ারি সার্জন প্রফেসর ডা. মোহাম্মদ আলী। 

বাদীপক্ষের আইনজীবী সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর হেমায়েত উদ্দিন খান হিরন মামলা ও আদেশের বিষয়টি জানান।
মামলায় বলা হয়, ডা. তৌফিক এনাম অসুস্থ হলে গত ৪ মে ইসলামী ব্যাংক সেন্ট্রাল হাসপাতাল কাকরাইল শাখার ডা. আব্দুল ওহাব খানকে দেখানো হয়। এরপর তার অধীনে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ধরা পড়ে রোগীর গলব্লাডারে পাথর জমেছে। পরদিন ডা. তৌফিককে অপারেশন করেন ডা. আবদুল ওহাব।

৬ মে তাকে ছাড়পত্র দিয়ে বাসায় পাঠিয়ে দেয়া হয়। ৯ মে সন্ধ্যায় হঠাৎ তৌফিক অসুস্থ হলে ডা. ওহাব খানের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি আবার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জরুরি ভিত্তিতে ল্যাবএইড হাসপাতালে ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন।

মামলায় বলা হয়, এরপর ল্যাবএইড হাসপাতালের ডা. স্বপ্নীলের সঙ্গে যোগাযোগ করে তৌফিকের পরিবার। তিনি পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে দেখেন যে গলব্লাডার অপারেশনের সময় ভুল জায়গায় ক্লিপ লাগানো হয়েছে। তিনি ইআরসিপি উইথ স্ট্যাংটিংয়ের ব্যর্থ চেষ্টা করেন। এরপর রোগীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকলে তাকে জরুরি ভিত্তিতে বিআরবি হাসপাতালের প্রফেসর ডা. মোহাম্মদ আলীর কাছে পাঠানো হয়।

ডা. মোহাম্মদ আলী গত ১২ মে জরুরি ভিত্তিতে রোগীকে বিআরবি হাসপাতাল ভর্তি করান। এরপর তিনি রোগীর স্বজনদের বলেন, ‘রোগীর অবস্থা ভালো না। জরুরি ভিত্তিতে অপারেশন করতে হবে। অন্যথায় রোগীকে বাঁচানো যাবে না। এরপর গত ৩০ মে ডা. মোহাম্মদ আলীর মাধ্যমে বিআরবি হাসপাতালে ডা. তৌফিকের অপারেশন করানো হয়।

মামলায় উল্লেখ করা হয়, বিআরবি হাসপাতালে প্রথমে তৌফিকের পরিবারকে জানানো হয়, অপারেশনে তিন ব্যাগ রক্তের প্রয়োজন হবে। তিন ব্যাগ রক্ত সংগ্রহ করার পর আবারও চার ব্যাগ রক্তের প্রয়োজন বলে জানান ডা. মোহাম্মদ আলী। রক্ত না দিতে পারলে রোগীকে বাঁচানো যাবে না। এরপর হাসপাতালের ডাক্তার ও নার্সদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে ডা. তৌফিকের স্বজনদের কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে ডা. তৌফিক এনাম চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘আমরা সঠিক চিকিৎসাই দিয়েছি। এতে রোগী ভালোও হয়ে যান। একদিন তার বাবা কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানান, তার ছেলে মারা গেছে। তিনি তখন ভুল চিকিৎসার অভিযোগ করেন।’ যেহেতু মামলা হয়েছে বিষয়টি আদালতে সুরাহা হবে বলে বলেও মনে করেন এই চিকিৎসক।