বেনাপোল কাস্টম হাউসে রাজস্ব ফাঁকি রোধে বহুমুখী কার্যক্রম

প্রকাশ | ২১ জুন ২০২১, ২০:১২

বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

স্থলপথে দেশের সর্ববৃহৎ রাজস্ব আদায়কারী প্রতিষ্ঠান বেনাপোল কাস্টম হাউসের রাজস্ব ফাঁকি রোধে বহুমুখী কার্যক্রম নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। বেনাপোল বন্দর ও রেল পথে আমদানি পণ্যের রাজস্ব আদায়, ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন, ডিজিটালি অটোমেশন, চোরাচালান ও শুল্কফাঁকি রোধ, নির্ধারিত সময়ে ডেলিভারি না নেয়া পণ্যের নিলাম, ব্যবহারের উপযোগিতা হারানো কিংবা ক্ষতিকর রাসায়নিক পণ্য ধ্বংস ইত্যাদি ক্ষেত্রে উদ্যোগ নেয়া হয়।

মিথ্যা ঘোষণা, জাল জালিয়াতি ও শুল্কফাঁকি রোধে অসাধু আমদানিকারক ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে কাস্টম হাউস। চলতি অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে সাময়িক স্থগিত করা হয়েছে ১৯টি লাইসেন্স, বাতিল করা হয়েছে তিনটি। 

কাস্টমস সূত্র জানায়, ২০২০-২১ অর্থবছরে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে পাঁচ হাজার ৬৯৭ কোটি ৯৪ লাখ টাকা।

গত ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে প্রথম মে মাস পর্যন্ত রাজস্ব আদায় হয়েছিল ২৪৩১ দশমিক ৭৩ কোটি টাকা। ২০২০-২০২১ অর্থবছরে একই সময়ে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৩৭৫৬ দশমিক ৯১ কোটি টাকা। অর্থাৎ গত বছরের চেয়ে ১২৮৫ দশমিক ৪৮ কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে। যা শতকরা ৫২ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ বেশি।

কাস্টমস কর্মকর্তারা বলছেন, গত দেড় বছর করোনার কারণে উচ্চ শুল্কহারের পণ্য আমদানি কমে গেছে।

বৈশ্বিক মহামারি করোনার মধ্যেও সরকার ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ব্যবসাবান্ধব নীতির পাশাপাশি কাস্টম হাউসের কমিশনারের নেতৃত্বের কারণে এটি সম্ভব হয়েছে। 

বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার আজিজুর রহমান দায়িত্ব নেয়ার পর কাস্টম হাউসের অভ্যন্তরীণ নানা উদ্যোগ, কর্মপরিকল্পনার মাধ্যমে শুল্ক আদায়ের পাশাপাশি বছরের পর বছর বন্দরে পড়ে থাকা পণ্যের দ্রুত নিলাম, পচা-ব্যবহার অনুপযোগী পণ্যের নিলাম এবং বিপজ্জনক রাসায়নিক পণ্য ধ্বংসের ক্ষেত্রে বড় সাফল্য এসেছে। 

কাস্টম হাউসের অতিরিক্ত কমিশনার ড. নেয়ামুল ইসলাম একজন দক্ষ ও ডায়নামিক অফিসার হিসেবে আমদানি রফতানি বাণিজ্যকে গতিশীল, রাজস্ব ফাঁকি রোধ ও শুল্কায়নে স্বচ্ছতা  ফিরিয়ে আনতে ‘বিকম’ নামে একটি নতুন সফটওয়্যার উদ্বোধন করেছেন কাস্টমস হাউসে। স্বাধীনতার ৫০ বছর পর এ প্রথম বেনাপোল কাস্টমস হাউসই একমাত্র ডিজিটাল কাস্টম হাউসে উন্নীত হলো। চালু হয়েছে গেট ডিভিশন, এক্সিট নোট। বন্দর কর্তৃপক্ষের অসহযোগিতার কারণে নতুন নতুন এসব কার্যক্রম বাস্তবায়নে কিছুটা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

বেনাপোল বন্দরের সক্ষমতা বাড়াতে ট্রাক জট এড়াতে কাস্টম হাউস আমদানি পণ্য দ্রুত ছাড়করণে ব্যবসায়ীদের উদ্বুদ্ধ করছে। গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়ে দিয়েছে, দ্য কাস্টমস অ্যাক্ট ১৯৬৯ এর ধারা ৮২ এর উপধারা (১) অনুযায়ী বেনাপোলে বন্দরের মাধ্যমে আমদানি করা পণ্য চালান অবতরণের পর ৩০ দিনের মধ্যে অথবা কাস্টমসের অনুমোদিত অতিরিক্ত সময়ের মধ্যে শুল্ক-কর পরিশোধ করে খালাস নিতে হবে। অন্যথায় উক্ত পণ্য নিলাম বা আইনানুগ উপায়ে নিষ্পত্তি করা হবে। 

এ অবস্থায় আইন লঙ্ঘনের অপরাধে জরিমানা ও পোর্ট চার্জ পরিহারের লক্ষ্যে বেনাপোল কাস্টম হাউসের অধিক্ষেত্রাধীন বন্দরের মাধ্যমে আমদানি করা ও অখালাসকৃত সব পণ্যচালান দ্রুত খালাস নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন কাস্টম হাউসের কমিশনার মো. আজিজুর রহমান।

কমিশনার আজিজুর রহমান বলেন, বেনাপোল কাস্টম হাউস কর্তৃপক্ষ একটি ব্যবসা ও বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে বৈধ আমদানি ও সৎ করদাতাদের সার্বিক সহযোগিতা দিতে বদ্ধ  পরিকর। বিদ্যমান আইন ও বিধি মোতাবেক যথাযথ পরিমাণ রাজস্ব আদায় ও দ্রুত পণ্যচালান খালাসে সবার সহযোগিতা চাই আমরা।

(ঢাকাটাইমস/২১জুন/কেএম)