অমির সাঙ্গপাঙ্গরাও কোটিপতি!

প্রকাশ | ২১ জুন ২০২১, ২২:৩৯ | আপডেট: ২১ জুন ২০২১, ২২:৪৬

আল-আমিন রাজু, ঢাকাটাইমস

চিত্রনায়িকা পরীমনিকাণ্ডে গ্রেপ্তার তুহিন সিদ্দিকী অমির সাঙ্গপাঙ্গরাও সবাই কোটিপতি। অমির নানা অপকর্মের সঙ্গী অন্তত আটজন শূন্য থেকে ফুলেফেপে কোটিপতি হয়েছেন বলে ঢাকা টাইমসের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে।

গ্রেপ্তারের পর অমির অপকর্ম দেখে বিস্মিত খোদ গোয়েন্দারা। তার ব্যবহৃত মোবাইলফোনে হাজারো নারীর ফোন নম্বর। বেরিয়ে আসছে অমির একের পর এক অপকর্ম। সেই সূত্রই জানা যাচ্ছে তার সহযোগীদের নানা অপকর্মের খবর।

মানবপাচার, নারীদের দিয়ে অনৈতিক কাজ করানো ও মাদক হচ্ছে অমির মূল ব্যবসা। অমির এ সকল অবৈধ ব্যবসার প্রধান সহযোগি মশিউর রহমান পলাশ। তিনি অমির ম্যানেজার হিসেবে এসব দেখাশোনা করতেন। পলাশের নেতৃত্বে আরও বেশ কয়েকজন অমির হয়ে কাজ করেন।

ঢাকা টাইমসের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে অমির মূল ব্যবসা দেখাশোনা করতেন মশিউর রহমান পলাশ। তাকে সহযোগিতা করতেন অন্যরা। তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন অমির স্কুল জীবনের বন্ধু। তাদের মাধ্যমেই পরিচালিত হতো অমির আদম পাচার, নারী ও মাদক ব্যবসা। অমির হাত ধরে তারাও ভাগ্য বদলে ফেলেছেন। তারা সবাই এখন কোটিপতি। প্রত্যেকের রয়েছে গাড়ি-বাড়ি।

ঢাকা টাইমসের হাতে আসা তথ্য অনুযায়ী, অমির সহযোগিদের মধ্যে পারভেজ, রফিক, সাইফুল, আল-আমিন ও আওলাদ অমির ব্যবসার বিভিন্ন বিষয় দেখভাল করতেন।

এরমধ্যে পলাশ ও পারভেজ এবং আল-আমিন ও আওলাদ আপন ভাই। একটা সময়ে পারভেজ, রফিক সাইফুল, আল-আমিন ও আওলাদের বাসা ছিল দক্ষিণখান এলাকার আশিয়ান বস্তিতে।

কিন্তু এখন দক্ষিণখান এলাকায় তাদের অঢেল সম্পত্তি রয়েছে। আর এর সবই এসেছে অমির অবৈধ কাজে সহযোগিতার মাধ্যমে। অমি গ্রেপ্তারের পর তারা সবাই আত্মগোপনে।

জানা গেছে, আওলাদ ও আল-আমিনের দক্ষিণখান এলাকায় রয়েছে কোটি কোটি টাকার সম্পদ। সাইফুলের আছে নিজস্ব ব্যবসা। দক্ষিণখান এলাকায় তার একাধিক দোকান রয়েছে। এরমধ্যে একটি দোকানের নাম আলিফা গ্রোসি এন্ড কসমেটিকস। তার এই দোকানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কসমেটিকস পাওয়া যায়।

অভিযোগ আছে, সাইফুল বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে হুন্ডির মাধ্যমে এ সকল পণ্য  আনেন। কোনো ধরনের ভ্যাট ছাড়াই বিশ্বের নাম করা সব ধরনের কোম্পানির পণ্য এনে বিক্রি করতেন সাইফুল। তার দোকানে রুপচর্চার পণ্যের পাশাপাশি ‍শিশুদের বিভিন্ন ধরেনর দামি পণ্য বিক্রি করতেন। এছাড়া সাইফুল অবৈধ স্বর্ণ চোরাচালানের সঙ্গে যুক্ত বলেও অনুসন্ধানে জানা গেছে।

সম্প্রতি ধর্ষণচেষ্টা, হত্যাচেষ্টা ও মারধরের অভিযোগে পরীমনির করা মামলায় ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ ও তুহিন সিদ্দিকী অমির নাম উল্লেখ করে মোট ছয়জনকে আসামি করা হয়।

পরীমনির অভিযোগ, গত ৮ জুন রাতে তাকে বোট ক্লাবে নিয়ে গিয়েছিলেন অমি, সেখানে নাসির তাকে ধর্ষণের চেষ্টা চালান। পরীমনির মামলার পর ঢাকার উত্তরার এক নম্বর সেক্টরের একটি বাসা থেকে তিন নারীসহ নাসির ও অমিসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সেখান থেকে মদ ও ইয়াবা উদ্ধারের কথাও জানায় গোয়েন্দা পুলিশ। পরে বিমানবন্দর থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে আরেকটি মামলা হয়। সেখানেও অমিওকে আসামি করা হয়েছে। পরে ১৫ জুন রাতে দক্ষিণখান থানা এলাকায় অমির একটি অফিস থেকে ১০২টি পাসপোর্ট ও ১৭ হাজার টাকা জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় অমির বিরুদ্ধে পাসপোর্ট আইনেও দক্ষিণখান থানায় মামলা হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/২১জুন/এআর/ডিএম)