কতগুলো প্রতিষ্ঠানের মালিক অমি?

প্রকাশ | ২২ জুন ২০২১, ১২:১৭ | আপডেট: ২২ জুন ২০২১, ১২:২৪

কাজী রফিক, ঢাকাটাইমস

পরীমনির দায়ের করা তাকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার মামলার আসামিদের একজন তুহিন সিদ্দিকী অমি। অভিনেত্রী পরীমনির সঙ্গে বন্ধুত্বের সম্পর্ক রয়েছে তার। পরীমনির অভিযোগ তুহিন সিদ্দিকী অমি তাকে ঢাকা বোট ক্লাবে ধর্ষণ চেষ্টায় সহযোগিতা করেছেন। পরে গ্রেপ্তারও হয়েছেন তিনি। 

গ্রেপ্তারের পর অমির বিষয়ে নানা তথ্য সামনে আসছে। আলাদিনের চেরাগ পাওয়ার মতো আশ্চর্যজনকভাবে বদলে গেছে তার জীবনযাপন। অর্ধডজনের বেশি প্রতিষ্ঠানের মালিক বনে গেছেন অমি। 

সূত্র বলছে, এই অমি ঢাকা ক্লাবপাড়ায় এক পরিচিত মুখ। তার বাবা তোফাজ্জল হোসেন এক সময় বিদেশে ছোট চাকরি করতেন। দেশে ফিরে ব্যবসা শুরু করেন।

অমি রাজধানীর দক্ষিণখানের আশকোনা এলাকায় বিদেশে কর্মী পাঠানোর একটি প্রতিষ্ঠান শুরু করেন। এর মাধ্যমেই ভাগ্য বদলে যায় তার পরিবারের। সূত্র জানিয়েছে, এই প্রতিষ্ঠানের আড়ালে নারী পাচার করেন অমি। আর সেখান থেকেই অর্থবিত্তের মালিক বনে যায় পরিবারটি। 

অমির অর্ধ ডজনের বেশি প্রতিষ্ঠানের খোঁজ মিলেছে। এরমধ্যে ‘জান্নাহ প্রোপার্টিজ লিমিটেড’, ‘আয়াত ট্যুর অ্যান্ড ট্র্যাভেল সার্ভিস’, ‘জান্নাহ এগ্রো পোল্ট্রি অ্যান্ড ফিসারিজ’, ‘জান্নাহ ট্রেডিং’, ‘জান্নাহ মেডিকেল সার্ভিস’ নামের প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বত্ত্বধিকারী তিনি। 

এছড়া ‘আইএসএমটি হিউম্যান রিসোর্স ডেভলপমেন্ট লিমিটেড’ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান অমি। ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে রয়েছেন ‘ইন্সটিটিউট অব সিঙ্গাপুর মেরিন টেকনোলজি লিমিটেড’ এবং ‘বিএসএম ওয়েডিং ট্রেনিং সেন্টার লিমিটেড’ নামের আরও দুটি প্রতিষ্ঠানে। 

এরমধ্যে ‘আয়াত ট্যুর অ্যান্ড ট্র্যাভেল সার্ভিস’ প্রতিষ্ঠানটি বিদেশে লোক পাঠানোর প্রতিষ্ঠান। ধারণা করা হচ্ছে, বিদেশে লোক পাঠানের আড়ালে মানব পাচারের কাজও এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে করে আসছেন তুহিন সিদ্দিকী অমি।

দক্ষিণখানে একটি রিসোর্টের আড়ালে প্রায় প্রতিদিন মদ-জুয়ার আসর বসাতেন অমি। রিসোর্টটি তার ‘রঙশালা’ নামে পরিচিত।

অমির প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ছয়টি প্রতিষ্ঠান দক্ষিণখানের আশকোনা এলাকার মেডিক্যাল রোডের একই ভবনে। একটি উত্তরখানে এবং অপর একটি প্রতিষ্ঠান উত্তরা এলাকাতেই। 

সমাজের বিত্তশালী ও তাদের বখে যাওয়া সন্তানদের বিপথে নেয়ার ক্ষেত্রে অমির ভূমিকা রয়েছে। সাধারণ পরিবার থেকে উঠে আসা অমির এখন উত্তরা ও আশকোনায় নিজস্ব আলিশান বাড়ি। রয়েছে জমি। গড়ে তুলেছেন বাংলো বাড়ি। এছাড়া তার জীবন যাপন শিল্পপতিদের থেকে কম নয়। ফলে উত্তরা এলাকায় অনেকটা এক নামেই পরিচিত অমি। 

শত শত কর্মী বিদেশে পাঠিয়ে এবং বিদেশে পাঠানোর নামে প্রতারণা করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি। বিদেশে কর্মী পাঠানোর সূত্র ধরে সাবেক এমপি কাজী শহিদ ইসলাম পাপুলের সঙ্গেও ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল অমির। 

অমির গ্রামের বাড়ি সিরাজগঞ্জ জেলায়। সেখানেও সম্পদের পাহাড় গড়েছেন তিনি। দেশে বিলাসী জীবনযাপন করা অমি সেকেন্ড হোম গড়েছেন মালয়েশিয়ায়। 

এর আগে গত ১৪ জুন নাসির উদ্দিন, তুহিন সিদ্দিকী অমি ও অজ্ঞাত চারজনকে আসামি করে সাভার থানায় একটি মামলা করেন পরীমনি। ওই মামলায় নাসির উদ্দিন ও অমিসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশ। 

(ঢাকাটাইমস/২১জুন/কারই/কেআর)